ব্লগার নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় নিলয় হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার সাদ আল নাহিন ও মাসুদ রানাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আট দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত।
Published : 14 Aug 2015, 03:38 PM
ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক মোল্লা সাইফুল ইসলাম শুক্রবার এই আদেশ দেন।
নিলয় হত্য মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক শেখ মাহাবুবুর রহমান দুই আসামিকে আদালতে হাজির করে দশ দিনের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করেন।
আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এস আই দীপক দে রিমান্ড আবেদনের শুনানিতে বলেন, “নিলয় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে নাহিন ও রানার সম্পৃক্ততার বিষয়ে তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। ওই হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার, আর কারা তাতে জড়িত ছিল- এসব বিষয়ে জানতে দুজনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।”
নাহিন ও মাসুদের পক্ষে শুনানিতে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। তাদের জামিনেরও কোনো আবেদন ছিল না।
শুনানির এক পর্যায়ে বিচারক জানতে চান, তাদের কিছু বলার আছে কি না। জবাবে নাহিন বলেন, তার কিছু বলার নেই।
শুনানি শেষে বিচারক আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বলে এস আই দীপক দে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।
পুলিশ বলছে, বৃহস্পতিবার ঢাকার উত্তরা থেকে নাহিন এবং মিরপুরের কালশী থেকে রানাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নুর ভাতিজা নাহিনকে পাঁচ দিন আগে পুলিশ পরিচয়ে উত্তরায় তার বাসা থেকে নিয়ে যাওয়া হয় বলে পরিবারের দাবি।
রিমান্ড শুনানির আগে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গ্রেপ্তাররা আনসারউল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য। তারা ব্লগার আসিফ মহীউদ্দিন হত্যা চেষ্টা মামলার আসামি ছিলেন। কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর গোয়েন্দা পুলিশ তাদের নজরদারিতে রেখেছিল।”
গত ৭ অগাস্ট ঢাকার গোড়ানে ব্লগার নিলয়ের বাসায় ঢুকে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। চার যুবক ওই হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয় বলে নিলয়ের স্ত্রী ও শ্যালিকা পুলিশকে জানিয়েছিলেন।
নাহিন ও রানাও ওই চারজনের মধ্যে ছিলেন কি না জানতে চাইলে গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার মাহবুবুল আলম বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের কাছে কিছু তথ্য রয়েছে, আমরা এদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তা যাচাই-বাছাই করব।”
মাসুদ রানার বিরুদ্ধে অন্য এক ব্লগারকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে বলে গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. নুরুন্নবী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএর ছাত্র নাহিনের বাবা নজরুল হক কিশোরগঞ্জের একটি স্কুলের শিক্ষক। তিনি কিশোরগঞ্জের তাড়াইলের দাহিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু তার বড় ভাই।
২০১৩ সালে উত্তরায় ব্লগার আসিফ মহীউদ্দিনের উপর হামলার পর নাহিন গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। এক বছরের বেশি সময় কারাবাসের পর তিনি জামিনে ছাড়া পান।
ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক নিবারণ চন্দ্র বর্মন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নাহিন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সক্রিয় সদস্য বলে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছিলেন। তারা কয়েকজন ব্লগার আসিফ মহীউদ্দিনকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন বলে স্বীকার করেন।”