৪৩ বছরের শাসন আরও দীর্ঘ করার সুযোগ পেলেন ইকুয়েটোরিয়াল গিনির প্রেসিডেন্ট

১৯৭৯ সালে ঘনিষ্ঠ আত্মীয় ফ্রান্সিসকো মাসিয়াস এনগুয়েমার কাছ থেকে ক্ষমতা নেওয়ার পর অনেক ধরনের সংস্কার করলেও ক্ষমতার একচ্ছত্র কর্তৃত্ব নিজের কাছেই রেখে দিয়েছেন তিনি।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Nov 2022, 08:26 AM
Updated : 27 Nov 2022, 08:26 AM

বিশ্বে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে থাকা ইকুয়েটোরিয়াল গিনির থিয়োডোরো অবিয়াং এনগুয়েমা এমবাসোগো ষষ্ঠ মেয়াদে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন।

এর মাধ্যমে ৮০ বছর বয়সী এ রাজনীতিক তার কর্তৃত্ববাদী শাসন আরও দীর্ঘ করার সুযোগ পেলেন।

গত সপ্তাহের নির্বাচনে এমবাসোগো ৯৫% ভোট পেয়ে জিতেছেন বলে ভোটের ছয়দিন পর দেওয়া আনুষ্ঠানিক ঘোষণার বরাত দিয়ে জানিয়েছে বিবিসি।

"ফল ফের আবার আমাদেরকেই সঠিক বলে প্রমাণিত করল," বলেছেন এমবাসোগোর ছেলে ভাইস প্রেসিডেন্ট এনগুয়েমা অবিয়াং মানগুই।

নির্বাচনে এমবাসোগোর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকজন প্রার্থী দাঁড়িয়েছিলেন, কিন্তু কারোই জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা ছিল না।

তেলসমৃদ্ধ মধ্য আফ্রিকার দেশটিকে এমবাসোগো ৪৩ বছর ধরে শক্ত হাতে পরিচালনা করে আসছেন। সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদেও তার পরিবারের সদস্যরাই আছেন।

১৯৭৯ সালে ঘনিষ্ঠ আত্মীয় ফ্রান্সিসকো মাসিয়াস এনগুয়েমার কাছ থেকে ক্ষমতা নেওয়ার পর অনেক ধরনের সংস্কার করলেও ক্ষমতার একচ্ছত্র কর্তৃত্ব নিজের কাছেই রেখে দিয়েছেন তিনি।

প্রায় সাড়ে চার দশকের এ শাসনকালে বেশ কয়েকবার অভ্যুত্থানচেষ্টারও মুখোমুখি হতে হয়েছে তাকে।

ডিসটিক সরকার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দাঁড়ানোর সুযোগ দেয় না, যেখানে গণমাধ্যমের অবাধ স্বাধীনতাও নেই। সব সম্প্রচারমাধ্যম হয় সরকার নিয়ন্ত্রিত নতুবা সরকারের মিত্রদের দ্বারা পরিচালিত।

মানবাধিকার লংঘন এবং ভোটে কারচুপির অভিযোগ অস্বীকার করে আসা প্রেসিডেন্ট এমবাসোগো ষষ্ঠ মেয়াদে নিজের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি ভালো করার দিকে বেশি মনোযোগ দেবেন বলেই মনে করা হচ্ছে।

চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে তার সরকার মৃত্যুদণ্ডের বিধান বিলুপ্ত করেছে। খোদ জাতিসংঘ এই পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে।

স্পেনের হাত থেকে ১৯৬৮ সালে স্বাধীনতা লাভ করে প্রজাতন্ত্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা ইকুয়েটোরিয়াল গিনির প্রথম প্রেসিডেন্ট ছিলেন এনগুয়েমা।

মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো এনগুয়েমা ও এমবাসোগো উভয়কেই আফ্রিকার অন্যতম নিকৃষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী হিসেবে অভিহিত করে আসছে।

স্পেনিশ, ফ্রেঞ্চ ও পর্তুগিজভাষী দেশটিতে ১৯৯৬ সালে বিপুল তেলের রিজার্ভ আবিষ্কৃত হয়; যদিও এ সম্পদ দারিদ্র্য ক্রমাগত বাড়তে থাকা দেশটির ১৪ লাখ অধিবাসীর বেশিরভাগেরই ভাগ্য উন্নয়নে কোন ভূমিকা রাখতে পারেনি, বলছে বিবিসি।