হাওয়াইয়ের কাছেই কিরিবাতিতে চীনা পুলিশ, সতর্ক যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই রাজ্যের পাশে অবস্থিত প্রশান্ত মহাসাগরের প্রত্যন্ত দ্বীপ দেশ কিরিবাতিতে চীনা পুলিশ কাজ করছে বলে খবর প্রকাশ করেছে রয়টার্স।

রয়টার্স
Published : 27 Feb 2024, 02:21 PM
Updated : 27 Feb 2024, 02:21 PM

যুক্তরাষ্ট্র সোমবার প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশগুলোকে চীনা নিরাপত্তা বাহিনীর সহায়তার বিরুদ্ধে সতর্ক করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই রাজ্যের পাশে অবস্থিত প্রশান্ত মহাসাগরের প্রত্যন্ত দ্বীপ দেশ কিরিবাতিতে চীনা পুলিশ কাজ করছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স খবর প্রকাশের পর যুক্তরাষ্ট্র এই সতর্কবার্তা দিয়েছে। এ নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেছে দেশটি।

কিরিবাতির ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনার ইরি আরিটিয়েরা গত সপ্তাহে রয়টার্সকে বলেছিলেন, ইউনিফর্মধারী চীনা কর্মকর্তারা কিরিবাতির পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে কাজ করছেন। তারা ‘কমিউনিটি পুলিশিং’ ও ‘ক্রাইম ডেটাবেস প্রোগ্রামে’ নিয়োজিত।

১ লাখ ১৫ হাজার বাসিন্দার দেশ কিরিবাতি। এর সবচেয়ে কাছের দ্বীপ হচ্ছে ২ হাজার ১৬০ কিলোমিটার দক্ষিণের হনুলুলু।

এমন এক সময়ে কিরিবাতিতে চীনা পুলিশের উপস্থিতির খবর সামনে এল, যখন প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশগুলোর সঙ্গে নিরাপত্তা সম্পর্ক সম্প্রসারণের নতুন চেষ্টা শুরু করেছে চীন। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনা বাড়তে থাকার মধ্যে চীন এই চেষ্টা চালাচ্ছে।

মার্কিন প্রশাসনের এক মুখপাত্রের কাছে কিরিবাতিতে চীনা পুলিশের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি রয়টার্সকে বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি না যে, পিআরসি (পিপলস রিপাবলিক অব চায়না) থেকে নিরাপত্তা বাহিনী আমদানি করে কোনও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপদেশ উপকৃত হবে। বরং এমন পদক্ষেপ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক উত্তেজনা বাড়ারই ঝুঁকি সৃষ্টি করবে।”

মার্কিন ওই কর্মকর্তা বলেন, “বিভিন্ন দেশে চীনের নিপীড়ন এবং বিশ্বজুড়ে তাদের পুলিশ স্টেশন স্থাপনের চেষ্টা ওয়াশিংটন সহ্য করতে পারে না।

“চীনের সঙ্গে নিরাপত্তা চুক্তি এবং নিরাপত্তা-সংশ্লিষ্ট সাইবার সহযোগিতা যে কোনও প্রশান্তমহাসাগরীয় দ্বীপ দেশের সায়ত্ত্বশাসনে কী প্রভাব ফেলতে পারে তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।”

কিরিবাতি সুবিধাজনক অবস্থানে আছে বলেই মনে করা হয়। এ দ্বীপদেশটি যে কেবল অপেক্ষাকৃতভাবে যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই রাজ্যের কাছে অবস্থিত তাই নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্বতন্ত্র অর্থনৈতিক এলাকাও বটে। প্রশান্ত মহাসাগরের ৩৫ লাখ স্কয়ার কিলোমিটারেরও বেশি এলাকা এর আওতায় পড়ে।

কিরিবাতিতে আছে জাপানি স্যাটেলাইট ট্র্যাকিং স্টেশন এবং চীন কিরিবাতির ক্যান্টন দ্বীপে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন মার্কিন সামরিক বিমানঘাঁটি নতুন করে গড়ে তোলার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। আর এতেই যুক্তরাষ্ট্রের মাথাব্যথা বেড়েছে।

পাল্টা ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্র গত অক্টোবরে ক্যান্টন দ্বীপের সাবেক ওই সামরিক ঘাঁটি মেরামত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং কিরিবাতিতে দূতাবাস খোলার আগ্রহও প্রকাশ করেছে।

কিরিবাতিতে চীনা পুলিশের ভূমিকার বিষয়ে রয়টার্সের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হলে চীন কোনও সাড়া দেয়নি। কিন্তু জানুয়ারিতে এক স্যোশাল মিডিয়া পোস্টে চীনের দূতাবাস কিরিবাতিতে চীনা পুলিশ স্টেশনের প্রধানের নাম দিয়েছিল।

তবে কিরিবাতির ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনার বলছেন, তারা ২০২২ সালের চীনের পুলিশের সহায়তা চেয়েছিলেন। তবে কিরিবাতিতে কোনও চীনা পুলিশ স্টেশন নেই। ইউনিফর্ম পরা এক ডজন চীনা পুলিশ গতবছর ছয়মাসে পালাক্রমে কিরিবাতিতে পৌঁছেন।

ওদিকে, চীনা দূতাবাসের এক কর্মকর্তাও একথা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন যে, ইউনিফর্ম পরা পুলিশ কর্মকর্তারা কিরিবাতিতে কাজ করছেন। তবে চীন সেখানে কোনও পুলিশ স্টেশন স্থাপন করেনি।