অস্থিরতায় ভূমিকা রাখার অভিযোগে ইরানে ৯ ইউরোপীয় গ্রেপ্তার

এতে ইরান ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে চলা উত্তেজনা আরও তেঁতে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Oct 2022, 08:45 AM
Updated : 1 Oct 2022, 08:45 AM

নীতি পুলিশের হেফাজতে এক নারীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভের জন্য ‘বিদেশি শত্রুদের’ দায় দেওয়া ইরান ৯ ইউরোপীয়কে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে।

অস্থিরতায় ভূমিকা রাখার অভিযোগে জার্মানি, পোল্যান্ড, ইতালি, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, সুইডেন ও ইউরোপের অন্যান্য দেশের এ নাগরিকদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে শুক্রবার জানিয়েছে তারা।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স লিখেছে, ২২ বছর বয়সী মাশা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইরান ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে যে উত্তেজনা চলছে ইউরোপীয় নাগরিকদের গ্রেপ্তারে তা আরও তেঁতে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে।

ইরানজুড়ে ছড়িয়ে পড়া তীব্র বিক্ষোভ-সহিংসতায় আরও প্রাণহানির খবরের মধ্যেই এ গ্রেপ্তারের কথা জানা গেল।

দেশটির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, একটি থানায় হামলা চালানো সশস্ত্র বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে নিরাপত্তা বাহিনী গুলি ছুড়লে ১৯ জন নিহত হয়।

মাশা আমিনির মৃত্যু এবং এর প্রতিবাদে হওয়া বিক্ষোভ-প্রতিবাদ দমনে নিরাপত্তা বাহিনীর বাড়াবাড়ি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিন্দার পাল্টায় তেহরানও সমালোচকদের একহাত নিয়েছে।

‘দাঙ্গাকালে বা পেছনে ষড়যন্ত্র করা’ অজ্ঞাত ৯ ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে, ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রণালয় এমনটাই বলেছে বলে জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যম।

ইরানের কুর্দি শহর সাকেজের বাসিন্দা আমিনিকে চলতি মাসের শুরুর দিকে হিজাব দিয়ে মাথা পুরোপুরি না ঢাকার ‘অপরাধে’ তেহরান থেকে আটক করেছিল দেশটির নীতি পুলিশ।

পুলিশ হেফাজতে তার মৃত্যুর পর ইরানজুড়ে যে প্রতিবাদ হচ্ছে, তাকে ২০১৯ সালে জ্বালানির দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে হওয়া বিক্ষোভের পর সরকারবিরোধী সবচেয়ে বড় আন্দোলন বলা হচ্ছে। এবার বিক্ষোভকারীরা দেশটির মোল্লাতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রবল আওয়াজ তুলেছেন।

আমিনির মৃত্যুর পর তার নিজের শহর থেকে শুরু করে ইরানের ৩১টি প্রদেশের সর্বত্র, সমাজের সর্বস্তরের, সকল ধর্ম ও জাতীয়তার মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে।

শুক্রবার অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীদের ওপর সরকারি দমনপীড়নে এ পর্যন্ত অন্তত ৫২ জন নিহত ও কয়েকশত আহত হয়েছে।

জাতিগত বিদ্রোহ উত্থানের আশঙ্কা থেকে এবং নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করতে কয়েকদিন আগে তেহরান প্রতিবেশী ইরাকের কুর্দি অঞ্চলে বিভিন্ন স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে; এর আগে তারা ইরানের কুর্দি ভিন্নমতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে দাঙ্গায় জড়িত থাকার ও ইন্ধন দেওয়ারও অভিযোগ এনেছিল।

পশ্চিমা মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বলছে, পারসিক শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ ইরান অন্যান্য জাতিগত ও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করে। তেহরান এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

আরও পড়ুন:

Also Read: মাশা আমিনি: বিক্ষোভ থামছে না ইরানে, মৃত্যু বেড়ে ৮৩