খেরসনে হামলায় নিহত ১০, পাল্টাপাল্টি দোষারোপ মস্কো-কিইভের

হামলার পর খেরসনের রাস্তায় পুড়তে থাকা গাড়ি, চুরমার হয়ে যাওয়া জানালা ও সড়কে মৃতদেহ পড়ে থাকার ছবি টেলিগ্রামে শেয়ার করেছেন ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Dec 2022, 04:29 AM
Updated : 25 Dec 2022, 04:29 AM

সম্প্রতি পুনর্দখল করা খেরসনে রাশিয়ার হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত ও ৫৮ জন আহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেইন কর্তৃপক্ষ।

রুশ হামলার পর শহরটির রাস্তায় একাধিক রক্তাক্ত মৃতদেহ পড়ে ছিল জানিয়ে মস্কো আনন্দের জন্য মানুষ হত্যা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগও করেছে তারা।

অন্যদিকে মস্কোপন্থি এক কর্মকর্তা খেরসনে ওই হামলার দায় কিইভবাহিনীর ওপর চাপিয়ে বলেছেন, রুশ বাহিনীর ওপর দায় চাপাতে ইউক্রেইনই শহরটিতে গোলা ছুড়ে মানুষ মেরেছে।

বড়দিনের আগে খেরসনে বেসামরিক হতাহতের দায় দু্ই পক্ষ এভাবেই একে অপরের উপর চাপিয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

দশ মাস ধরে রাশিয়ার আক্রমণ প্রতিহত করে আসা ইউক্রেইনের সদ্যই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সেনাবাহিনীর জন্য আরও অস্ত্র চেয়ে ফেরা প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি টেলিগ্রামে হামলা পরবর্তী খেরসনে গাড়ি পোড়ার, চুরমার হয়ে যাওয়া জানালা ও মৃতদেহ রাস্তায় পড়ে থাকার ছবি দিয়েছেন।

“খুব সম্ভবত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এসব ছবিকে ‘সংবেদনশীল কনটেন্ট’ হিসেবে চিহ্নিত করবে। কিন্তু এগুলো সংবেদনশীল কনটেন্ট নয়, ইউক্রেইন এবং ইউক্রেইনীয়দের বাস্তব জীবন।

“এখানে কোনো সামরিক স্থাপনা ছিল না। এটা সন্ত্রাস, এটা আনন্দ ও ভয় দেখানোর জন্য হত্যা,” বলেছেন তিনি।

পুরোটা না হলেও খেরসন অঞ্চলের বেশিরভাগ অংশই এখনও রাশিয়ার দখলে। তবে খেরসন শহরটি সম্প্রতি ইউক্রেইন পুনরায় তাদের কব্জায় নিয়েছে।

কিইভের নিয়োগ দেওয়া অঞ্চলটির গভর্নর ইয়ারোস্লাভ ইয়ানুসেভিচ ইউক্রেইনের টিভিতে খেরসনে হামলায় ১০ জনের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স।

রাশিয়ার মনোনীত গভর্নর ভ্লাদিমির সালদো বলেছেন, কিইভই তার বাহিনীকে খেরসন শহরে গোলা ছোড়ার নির্দেশ দিয়েছিল। 

“এটা একটা জঘন্য রকমের উসকানি, যার লক্ষ্যই হচ্ছে রুশ সশস্ত্র বাহিনীকে দোষারোপ করা,” টেলিগ্রামে বলেছেন তিনি।

আঞ্চলিক কাউন্সিলের উপপ্রধান ইউরি সোবোলেভস্কি বলেছেন, খেরসন শহরের ফ্রিডম স্কয়ারের একটি সুপারমার্কেটের কাছে একটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার পর হতাহতের ওই ঘটনা ঘটে।

“সেখানে বেসামরিকরা ছিল, প্রত্যেকের আলাদা জীবন ছিল, নিজ নিজ কাছে সেখানে গিয়েছিলেন,” বলেছেন তিনি।

ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্টের সহযোগী কিরিলো তিমোশেঙ্কো বলেছেন, খেরসনে হামলাটি হয়েছে গ্রেড মাল্টিপল রকেট লঞ্চার দিয়ে।  

অক্টোবর থেকে মস্কো যেভাবে ইউক্রেইনের বিদ্যুৎখাতে একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে এবং সেসব হামলার কারণে লাখ লাখ মানুষকে বিদ্যুৎ ও পানি ছাড়া দিন কাটাতে হচ্ছে, সেদিকে ইঙ্গিত করে আরেক সহযোগী মিখাইলো পোদোলিয়াক যারা কিইভকে রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনায় বসতে বলছে তাদের কড়া সমালোচনা করেছেন।

“যারা (রাশিয়ার) শান্তি উদ্যোগকে ধর্তব্যের মধ্যে নিতে প্রস্তাব দিচ্ছেন, তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিই- খেরসনের বাসিন্দাদেরকে মেরে, বাখমুতকে মুছে দিয়ে, কিইভ/ওডেসার বিদ্যুৎ গ্রিড ধ্বংস করে, মেলিটোপোলে বেসামরিকদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে রাশিয়া এখন ‘দরকষাকষি’ করছে।

“রাশিয়া দায়মুক্তি নিয়ে হত্যা চালিয়ে যেতে চায়। আমরা কি তার অনুমতি দেবো?,” লিখেছেন তিনি।