পাকিস্তানে বেশ প্রভাবশালী দুর্নীতি দমন সংস্থার জিজ্ঞাসাবাদে হাজির হতে সমন পাঠানো হলেও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তাতে সাড়া দেবেন না বলে তার দল তেহরিক ই ইনসাফের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন।
দুর্নীতির মামলায় গত ৯ মে ইসলামাবাদে আদালত চত্বর থেকে ইমরানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, পরে সুপ্রিম কোর্ট জামিন দিলে তিনি ছাড়া পান।
যারা ইমরানকে গ্রেপ্তার করেছিল, সেই ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো- এনএবি ২০০৮ সালের পর যতজন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন তাদের সবার বিরুদ্ধে তদন্ত করে তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করেছে ও জেলে পাঠিয়েছে।
দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের অংশ হিসেবে ইমরানকেও তারা বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদের কাছে রাওয়ালপিন্ডিতে এনএবির আঞ্চলিক অফিসে হাজিরা দেওয়ার সমন পাঠায়, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
তেহরিক ই ইনসাফের মুখপাত্র ফররুখ হাবিব জানান, ‘একাধিক কারণে’ ইমরান ওই সমনে সাড়া দেবেন না।
এ নিয়ে আর বিস্তারিত কিছু বলেননি তিনি।
আদালত চত্বর থেকে ইমরানকে গ্রেপ্তারের পর পাকিস্তানজুড়ে ব্যাপক সহিংসতা দেখা যায়, যা ২২ কোটি জনসংখ্যার দেশটির রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাকে আরও গভীর করেছে।
পাকিস্তান এখন তার ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে অর্থনৈতিক সংকটও পার করছে, লেনদেনে ভারসাম্যজনিত সংকট এড়াতে তার জরুরি ভিত্তিতে আইএমএফের ঋণও দরকার।
সুপ্রিম কোর্ট ইমরানের গ্রেপ্তারকে ‘অবৈধ’ অ্যাখ্যা দেওয়ার পরদিন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট তাকে জামিন দেয়; বুধবার আরেকটি আদালত ইমরানের আগাম জামিন ৩১ মে পর্যন্ত বর্ধিত করেছে।
ইমরানের স্ত্রী বুশরা খানের জামিনের মেয়াদও ২৩ মে পর্যন্ত আছে; সাবেক প্রধানমন্ত্রীর এ স্ত্রী পাকিস্তানে বুশরা বিবি নামে বেশি পরিচিত।
আগাম জামিনের মেয়াদ বাড়ার দিন বুধবার ইমরান পুলিশ তার লাহোরের বাড়ি ঘিরে রেখেছে বলে অভিযোগ করেন এবং ফের তাকে গ্রেপ্তার করা হতে পরে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
এর প্রত্যুত্তরে পাঞ্জাবের তথ্যমন্ত্রী আমির মীর বলেন, ইমরানকে যেহেতু আদালত জামিন দিয়েছে, তাই তাকে গ্রেপ্তারের কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই।
“আমরা চাই, তিনি যেন তার বাড়িতে লুকিয়ে থাকা সন্ত্রাসীদের আমাদের হাতে তুলে দেন,” বলেছেন তিনি।
মীর আরও বলেন, গোয়েন্দা এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো সামরিক স্থাপনায় হামলায় সন্দেহভাজন জনা চল্লিশেক লোক ইমরানের বাড়িতে আছে বলে জানতে পেরেছে।
ওই ‘সন্ত্রাসীদের’ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হস্তান্তর করা না হলে ইমরানকে ‘পুলিশি অভিযানের’ মুখে পড়তে হবে বলেও সতর্ক করেছেন পাঞ্জাবের এই মন্ত্রী।
ইমরান বলেছেন, কর্তৃপক্ষ তার বাড়িতে তখনই তল্লাশি চালাতে পারবে, যখন তারা আদালত থেকে পরোয়ানা নিয়ে আসতে পারবে।
সহিংসতায় জড়িত কাউকে বাড়িতে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকারও করেছেন তিনি।