পাকিস্তানে বন্যা: দুর্দশায় লাখ লাখ মানুষ

দুর্যোগ কবলিত এলাকাগুলোতে উদ্ধার অভিযান চালাতে বেসামরিক প্রশাসনকে সাহায্য করার জন্য সরকার সব প্রদেশে সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 August 2022, 04:40 AM
Updated : 27 August 2022, 04:40 AM

পাকিস্তানজুড়ে ভয়াবহ বন্যার তাণ্ডব অব্যাহত আছে। দেশটির খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে অন্তত আরও ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

দুর্যোগ কবলিত এলাকাগুলোতে উদ্ধার অভিযান চালাতে বেসামরিক প্রশাসনকে সাহায্য করার জন্য সরকার সব প্রদেশে সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বন্যায় লাখ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত এবং এ পর্যন্ত নয়শরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে, পরিস্থিতি মোকাবেলায় জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে পাকিস্তান সরকার।

বর্তমানে পাকিস্তানের অর্ধেকেরও বেশি পানিতে ডুবে আছে বলে জানিয়েছে ডন অনলাইন।

অস্বাভাবিক ভারি বৃষ্টিতে সৃষ্ট হড়কা বানে লাখ লাখ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। এমনিতে পাকিস্তানে বৃষ্টির ৩ থেকে ৪টি চক্র থাকলেও এবার ৮ চক্র চললেও কমার কোনো লক্ষণ নেই।

শুক্রবার দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বন্যা ও বৃষ্টিজনিত বিভিন্ন ঘটনায় জুন থেকে এ পর্যন্ত নয়শরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে, এদের মধ্যে ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়।

খাইবার পাখতুনখোয়ায় কাবুল নদী ও সোয়াত নদীতে প্রবল বন্যা দেখা দেওয়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শুক্রবার প্রদেশটির মানসেহরা ও কোহিস্তান জেলায় অন্তত ২১ জনের, সোয়াতে ১২, শাংলাতে ৫, লোয়ার দিরে ৩ ও লাক্কি মারওয়াতে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে।

দক্ষিণাঞ্চলীয় সিন্ধু প্রদেশের সুক্কুর শহরের রাস্তায় সারিবাঁধা তাঁবুতে বহু মানুষ আশ্রয় নিয়েছে, এদের অনেকেই বন্যায় সর্বস্ব হারিয়েছেন; জানিয়েছে বিবিসি।

শহরের বহু সড়ক পানিতে তলিয়ে আছে। পয়ঃনিষ্কাশন পাইপগুলো প্লাস্টিক বর্জ্যে আটকা পড়ে আছে। চারদিকে ময়লা পানি জমে সয়লাব হয়ে আছে । পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে, এমন সম্ভাবনায় উদ্বিগ্ন স্থানীয় বাসিন্দারা।

সিন্ধু প্রদেশে সারা সপ্তাহ ধরেই বৃষ্টি হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে পারবেন বন্যা দুর্গতারা এমন আশা দেখতে পাচ্ছেন না। বাড়ি ফিরে শেষ সম্বলটুকু নিয়ে আসার চিন্তাও বাদ দিয়েছেন তারা।

সুক্কুর শহরের কেন্দ্রস্থলে বহু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক বাড়ির শুরু দেয়ালগুলো অবশিষ্ট আছে।

বন্যা ও বৃষ্টিজনিত বিভিন্ন ঘটনায় শুধু সিন্ধু প্রদেশেই তিনশরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সরু রাস্তার পাশে যতটুকু শুকনো জমি পাওয়া গেছে সেখানেই তাঁবু গেড়ে মানুষ আশ্রয় নিয়ে আছে।

শুক্রবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ জানিয়েছেন, বন্যায় ৩ কোটি ৩০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে; যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৫ শতাংশ।

গ্রীষ্মকাল শুরু হওয়ার পর থেকেই পাকিস্তানজুড়ে ব্যাপক বৃষ্টি হচ্ছে। এতে সারা দেশে ৪ লাখেরও বেশি বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে।

জাতিসংঘের দুর্যোগ ত্রাণ সংস্থা বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, ঘরবাড়ি হারা অন্তত ১ লাখ ৮৪ হাজার মানুষ ত্রাণ শিবিরগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে।