বালির জি২০ সম্মেলনে ‘সশরীরে থাকবেন শি, পুতিন’

নভেম্বরের এই সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনেরও অংশ নেওয়ার কথা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 August 2022, 11:48 AM
Updated : 19 August 2022, 11:48 AM

চীনের শি জিনপিং আর রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিন উভয় নেতাই নভেম্বরে বালিতে হতে যাওয়া জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন বলে জানিয়েছেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো।

“শি (ইন্দোনেশিয়ায়) আসছেন। প্রেসিডেন্ট পুতিন আমাকে বলেছেন, তিনিও আসছেন,” জোকোয়ি নামে পরিচিত উইদোদো ব্লুমবার্গকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

ইউক্রেইনে রাশিয়ার ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু এবং তাইওয়ান ঘিরে উত্তেজনা চরমে পৌঁছার পর বালিতেই প্রথম বিশ্ব নেতাদের বড় সম্মেলন হতে যাচ্ছে।

আগামী তিন মাস কোথাও না গেলে ২০২০ সালের জানুয়ারির পর নভেম্বরের ওই সম্মেলনই দেশের বাইরে শি’র প্রথম গন্তব্য হতে পারে।

কোভিড মহামারী শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত চীনা এ প্রেসিডেন্ট কেবল একবারই চীনের মূল ভূখণ্ডের বাইরে বের হয়েছিলেন; চীনের কাছে হংকংয়ের ফিরে আসার ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে চলতি বছরের ১ জুলাই তিনি শহরটিতে গিয়েছিলেন।

নভেম্বরের বালি সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনেরও অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। তবে সম্মেলনে এলেও পুতিনের সঙ্গে তিনি দেখা করবেন কি না, তা স্পষ্ট নয়।

অবশ্য চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার মুখোমুখি বৈঠকের সম্ভাবনা সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে বেড়েছে।

বালি সম্মেলনের আগে কিংবা ওই সম্মেলনের সাইডলাইনেই বিশ্বের দুই শীর্ষ অর্থনীতির দেশের দুই কাণ্ডারির দেখা হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে।

মানবাধিকার, বাণিজ্য এবং সম্প্রতি তাইওয়ানে মার্কিন রাজনীতিক ন্যান্সি পেলোসির সফরকে ঘিরে বেইজিং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে সম্পর্ক দিন দিন আরও তিক্ত হচ্ছে।

পেলোসির ওই সফরের প্রতিক্রিয়ায় চীন স্বশাসিত দ্বীপটির চারপাশে প্রায় সপ্তাহখানেকের সামরিক মহড়া চালিয়েছে।

চীন তাইওয়ানকে তার বিচ্ছিন্ন প্রদেশ মনে করে; স্বশাসিত এ দ্বীপকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে একত্রিত করতে প্রয়োজনে বল প্রয়োগেরও হুমকি দিয়ে রেখেছে তারা।

তাইওয়ানের আশপাশে চীনের সাম্প্রতিক মহড়ার নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তাইওয়ান বলছে, চীনের ওই ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ মহড়া ছিল ‘আক্রমণের অনুরূপ’।

চীন ও রাশিয়া নিজেদের কৌশলগত অংশীদারিত্বের ‘কোনো সীমা নেই’ এমন ঘোষণা দেওয়ার পর পশ্চিমাদের ব্যাপক উদ্বেগের মধ্যেই নভেম্বরে বালিতে ওই জি২০ সম্মেলন হতে যাচ্ছে।

পশ্চিমা বেশিরভাগ দেশ ইউক্রেইনে পুতিনের হামলার সিদ্ধান্তের নিন্দা জানালেও চীন সে পথে হাঁটেনি। উল্টো মস্কোর সঙ্গে বেইজিংয়ের ব্যবসা-বাণিজ্য আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে বলেই খবর পাওয়া যাচ্ছে।

ইউক্রেইনে হামলার প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়াকে জি২০ থেকে বের করে দিতে এবং পুতিনের আমন্ত্রণ প্রত্যাহার করে নিতে ওয়াশিংটন আহ্বান জানালেও তাতে কাজ হয়নি।

বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ ২০ অর্থনীতির এ জোটের বর্তমান চেয়ার ইন্দোনেশিয়া ওয়াশিংটনের ওই আহ্বান সাড়া না দিয়ে মধ্যপন্থা অবলম্বন করেন।

“বড় বড় দেশের মধ্যে রেষারেষি সত্যিই উদ্বেগজনক। আমরা চাইছি আমাদের এ অঞ্চল যেন স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ থাকে, যাতে আমরা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি গড়তে পারি,” ব্লুমবার্গকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই বলেছেন উইদোদো।

কয়েকদিন আগে ইন্দোনেশিয়ার এ প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, রাশিয়া এবং ইউক্রেইন উভয় দেশই ইন্দোনেশিয়াকে ‘শান্তির সেতু’ হিসেবে মেনে নিয়েছে।

চলতি বছরের জুনে এশিয়ার প্রথম নেতা হিসেবে তিনি কিইভ ও মস্কো সফর করে ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ‍রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। সেসময় তিনি যুদ্ধ বন্ধে এবং বৈশ্বিক খাদ্য সংকট নিরসনে আহ্বান জানিয়েছিলেন।