ইসরায়েলের হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩০ হাজার ছুঁই ছুঁই।
Published : 27 Feb 2024, 09:28 AM
গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি চু্ক্তিতে উপনীত হতে কাতারে ইসরায়েল ও হামাসের প্রতিনিধিদের মধ্যে যে আলোচনা চলছে তাতে বেশ খানিকটা অগ্রগতি হয়েছে এবং আগামী সোমবার নাগাদ একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে উপনীত হওয়া সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন যু্ক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
সোমবার নিউ ইয়র্ক সফরের সময় বাইডেন সাংবাদিকদের এ কথা বলেন বলে জানায় বিবিসি।
বাইডেন বলেন, “আমার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা আমাকে বলেছেন আমরা খুব কাছে পৌঁছে গেছি। আমরা খুবই কাছে। যদিও এখনও চুক্তি হয়নি। আমি আশা করছি আগামী সোমবারের মধ্যে আমরা একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি পারব।”
গত বছর ৭ অক্টোবর গাজা থেকে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২শ’র বেশি মানুষকে হত্যা করে ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় প্রায় আড়াইশ মানুষকে। সেদিন থেকেই তীব্র আক্রশে গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। যে হামলা এখনো চলছে। ইসরায়েলের হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার ছুঁই ছুঁই। গাজায় হামলায় নিহতদের একটি বড় অংশ নারী ও শিশু।
ইসরায়েলের সবচেয়ে প্রভাবশালী মিত্র এবং সমর্থক যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি গাজা যুদ্ধের শুরু থেকেই ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়ে আসছে।
গত বছর নভেম্বরে গাজা যুদ্ধে এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি দেওয়া হয়েছিল। যে সময়ে ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি দুই শতাধিক ফিলিস্তিনির মুক্তির বিনিময়ে হামাস শতাধিক জিম্মিকে মুক্তি দেয়। তবে এখনো হামাসের হাতে শতাধিক ইসরায়েলি জিম্মি বন্দি রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
যাদের মুক্ত করতেই মূলত যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চাইছে। এদিকে, হামাস বলেছে, গাজা থেকে ইসরায়েলের সব সৈন্য প্রত্যাহার করা হলেই কেবল তারা গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে রাজি আছে।
মিশর এবং কাতার গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনায় মধ্যস্থতা করছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে দিয়ে দেশের ভেতর চাপ বাড়ায় যুক্তরাষ্ট্রও এখন গাজায় যুদ্ধবিরতি চাইছে।
গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে চলমান আলোচনার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এর আগে বলেছিলেন, আলোচনায় ‘ অগ্রগতি হয়েছে’।
তিনি বলেছেন, “মিশর, ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের মধ্যে (গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে) যে আলোচনা হয়েছে তাতে আমরা অগ্রগতি পেয়েছি।”
এদিকে যুদ্ধ-পরবর্তী গাজার ভবিষ্যৎ কেমন হবে তা নিয়ে প্রথমবারের মতো সরকারি পরিকল্পনা পেশ করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
গত বৃহস্পতিবার পেশ করা তার পরিকল্পনা অনুযায়ী, অনির্দিষ্টকালের জন্য সব ফিলিস্তিন এলাকার নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করবে ইসরায়েল। আর যেসব ফিলিস্তিনির সঙ্গে ইসরায়েল-বিদ্বেষী কোনও গোষ্ঠীর সম্পর্ক নেই তারা গাজার শাসন পরিচালনা করবে।
কেবল গাজাই নয়, অধিকৃত পশ্চিম তীরসহ জর্ডানের পশ্চিমাঞ্চলে স্থল, জল ও আকাশ পথ মিলে গোটা এলাকার নিরাপত্তার নিয়ন্ত্রণ ইসরায়েলের হাতে থাকবে বলে পরিকল্পনার রূপরেখায় প্রস্তাব করা হয়েছে, যে ভূখণ্ডে স্বাধীন রাষ্ট্র গড়ে তুলতে চায় ফিলিস্তিন।
নেতানিয়াহু বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা মন্ত্রিসভায় এ পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন।