রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধ নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ জি২০

পরিস্থিতি এমন থাকলে জোটের সদস্য দেশগুলোর অর্থ বিষয়ক শীর্ষ কর্মকর্তাদের বৈঠকও কোনো যৌথ বিবৃতি ছাড়াই শেষ হতে পারে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Feb 2023, 09:44 AM
Updated : 25 Feb 2023, 09:44 AM

জি২০-র সদস্য দেশগুলোর অর্থ বিষয়ক শীর্ষ কর্মকর্তারা ইউক্রেইন যুদ্ধকে কীভাবে বর্ণনা করা হবে তা নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেননি।

পরিস্থিতি এমনই থাকলে শনিবার ভারতে তাদের বৈঠকও কোনো যৌথ বিবৃতি ছাড়াই শেষ হতে পারে বলে প্রতিনিধিরা আশঙ্কা করছেন, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

প্রতিনিধিরা জানান, এবারের বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র এবং শিল্পোন্নত ৭টি দেশের জোট জি৭ এর মিত্ররা বিবৃতিতে প্রতিবেশী দেশে আক্রমণের জন্য রাশিয়ার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানানোর বিষয়টি রাখতে বদ্ধপরিকর থাকলেও, রাশিয়া ও চীনের প্রতিনিধিরা এর বিরোধিতা করে যাচ্ছেন।  

জি২০-র অন্যতম সদস্য রাশিয়া ইউক্রেইনে তার কর্মকাণ্ডকে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ বলছে, ‘আগ্রাসন’ বা ‘যুদ্ধ’ নয়।

এমনকী আয়োজক দেশ ভারতও বিবৃতিতে ‘যুদ্ধ’ শব্দ ব্যবহার এড়াতে চাপ দিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন জি২০ কর্মকর্তারা।

এখন জি২০-র প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করা ভারত ইউক্রেইন যুদ্ধে নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে। তারা ইউক্রেইনে আক্রমণের জন্য রাশিয়াকে দায় দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে, সংঘাতের কূটনৈতিক সমাধান চাইছে, পাশাপাশি রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনাও বাড়িয়ে দিয়েছে।

ফরাসী অর্থমন্ত্রী বুইনো লে মা বলেছেন, গত বছরের নভেম্বরে জি২০ সম্মেলনে সদস্য দেশগুলো যে বিবৃতিতে সম্মত হয়েছিল, এবার সেখান থেকে পিছু হটতে পারে না জোট।

নভেম্বরের বিবৃতিতে জোটের ‘বেশিরভাগ দেশ ইউক্রেইনে যুদ্ধের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে’ বলা হলেও কিছু দেশ যে ওই সংঘাতকে ভিন্নচোখে দেখে তা স্বীকার করে নেওয়া হয়েছিল।

“হয় ওই আগের ভাষাই থাকবে, নাহলে আমরা চূড়ান্ত বিবৃতিতে স্বাক্ষর করবো না,” শুক্রবার সাংবাদিকদের এমনটাই বলেছেন লে মা।

একইদিন বৈঠকের সাইডলাইনে জার্মান অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়ান লিন্ডনার বলেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে আগের সমালোচনার চেয়ে কম কিছু করতে পারে না জি২০।

“আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, এই যুদ্ধ (রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির) পুতিনই শুরু করেছেন,” বলেছেন তিনি।

জি২০-র বৈঠকগুলোতে এখন এই ধরনের দ্বন্দ্ব প্রায়ই দেখা যাচ্ছে। অতীতের অর্থনৈতিক সংকটের প্রতিক্রিয়ায় ২০ বছর আগে সৃষ্ট এই ফোরামে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে পশ্চিমাদের সঙ্গে রাশিয়া, চীনসহ অন্যদের বিরোধ স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

জি২০-র এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, পশ্চিমা দেশগুলোর একাধিক প্রস্তাব রাশিয়া ও চীন আটকে দেওয়ায় সবার সম্মতির ভিত্তিতে বিবৃতি তৈরি খুব কঠিন হয়ে উঠেছে।

“ভারত বালিতে যে ভাষা ছিল, তা বহাল রাখতে চাইছে,” বলেছেন তিনি।

ওই কর্মকর্তাসহ আরও কয়েকজন কর্মকর্তা বলেছেন, শেষ মুহূর্তে নাটকীয় কিছু ছাড়া সবার সম্মতিতে বিবৃতি পাওয়ার সম্ভাবনা কম। এর মানে হচ্ছে, বৈঠকটি শেষ হতে পারে আয়োজক দেশের আলোচনার সারসংক্ষেপ তুলে ধরার মাধ্যমে।

“ঐকমত্য ছাড়া, বিকল্প থাকলো চেয়ারের একটি বিবৃতি দেওয়া,” বলেছেন এক কর্মকর্তা।

এই প্রসঙ্গে জানতে চেয়ে রয়টার্স ভারতের পররাষ্ট্র, অর্থ ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তাৎক্ষণিকভাবে তাদের সাড়া পায়নি।