থাই ডে কেয়ারে হামলাকারী ছিলেন নানা সমস্যায় জর্জরিত, জানাল পুলিশ

নার্সারি শিশুদের দিবাযত্ন কেন্দ্রে হামলা চালানো সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা চাকরি খোয়ানো, অর্থকষ্ট এবং পারিবারিক সমস্যার কারণে মানসিক চাপে ছিলেন, বলছে পুলিশ।

রয়টার্স
Published : 7 Oct 2022, 04:33 PM
Updated : 7 Oct 2022, 04:33 PM

থাইল্যান্ডে নার্সারি শিশুদের দিবাযত্ন কেন্দ্রে পানিয়া কামরাপ নামের যে সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা হামলা চালিয়েছিলেন তার আদ্যপান্ত বর্ণনা করেছে পুলিশ।

বলা হচ্ছে, ওই ব্যক্তি নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে মানসিক চাপে ছিলেন। তিনি চাকরি খুইয়েছিলেন, অর্থকষ্টে ছিলেন, এমনকী তার পারিবারিক সমস্যাও ছিল।

পুলিশ জানিয়েছে, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা কামরাপ রাজধানীতে চাকরি করার সময় খুব দ্রুতই উপরের পদে উঠেছিলেন। পরবর্তীতে তিনি বিভিন্ন প্রদেশে বদলী হন এবং সে সময় তিনি মাদক গ্রহণ শুরু করায় হঠাৎ করেই তার চাকরি চলে যায়।

গত বৃহস্পতিবার ব্যাংককের ৫০০ কিলোমিটার উত্তরপূর্বে অবস্থিত উথাই সাওয়ান শহরের ডে কেয়ার সেন্টারে পানিয়া কামরাপের হামলা ২৩ শিশুসহ ৩৭ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।

একের পর একজনকে ছুরি মেরে, গুলি চালিয়ে শান্ত, স্নিগ্ধ ওই স্থানটিকে মৃতদেহ, মৃত্যু পথযাত্রী আর আহতদের দিয়ে ভরিয়ে সাবেক ওই পুলিশ কর্মকর্তা বাড়ি ফেরেন; এরপর নিজের স্ত্রী সন্তানকে গুলি করে অস্ত্র ঘোরান নিজের দিকে, করেন আত্মহত্যা।

তার এই হত্যাযজ্ঞের সুস্পষ্ট কোনও কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে পুলিশ বলছে, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, পানিয়া কামরাপ তার বিবাহিত জীবনে সমস্যায় ছিলেন এবং চাকরি চলে যাওয়ার কারণে অর্থকষ্টে ভুগছিলেন।

কামরাপের কাছে মেথামফিটামিন মাদক পাওয়া যাওয়ায় গত জানুয়ারি মাসে তাকে পুলিশ বাহিনী থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। পানিয়া দুই ধরনের মেথামফিটামিন সেবনের কথা স্বীকারও করেছিলেন।

স্থানীয় পুলিশ প্রধান চক্রপত বিচিতভাদিয়া বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, “তিনি বেপরোয়া কিছু একটা করতে চাইছিলেন। তার মায়ের কাছ থেকে আমরা জানতে পেরেছি, ঘটনার দিন বউয়ের সঙ্গে কামরাপের ঝগড়া হয়েছিল। তিনি হয়ত খারাপ কিছু একটাই করতে চেয়েছিলেন।”

ওদিকে, স্থানীয় পুলিশ বাহিনীতে কামরাপের সঙ্গে যারা কাজ করেছেন তাদের ভাষ্য, তিনি মাঝে মাঝেই মেজাজ হারাতেন এবং সহিংস আচরণ করতেন।

বৃহস্পতিবার হামলা চালাতে ডে কেয়ার সেন্টারে ঢোকার সময় কামরাপ খুবই অস্থির ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। ওই হামলা করার আগে কামরাপের বিরুদ্ধে আদালতে মাদকের মামলা চলছিল এবং তিনি মামলার শুনানিতে আদালতে উপস্থিতও ছিলেন।

শুনানির পর কামরাপ তার ছেলেকে খুঁজতে ডে কেয়ার সেন্টারে যান। কিন্তু সেদিন তার ছেলে সেখানে ছিল না বলে পুলিশ জানিয়েছে।

থাইল্যান্ডের জাতীয় পুলিশ প্রধান দামরংসাক কিত্তিপ্রফাত শুক্রবার বলেছেন, পানিয়া কামরাপ তখনও মাদক সেবন করে আসছিলেন কিনা সেটি স্পষ্ট নয়। হামলার দিন কামরাপ মাদক সেবন করেননি- এমন আভাসই পাওয়া গেছে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে।

“আমরা স্ত্রীর সঙ্গে তার (কামরাপ) ঝগড়াকেই মূল বিষয় হিসাবে দেখছি। তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে সমস্যা চলছিল। হামলা চালানোর কারণ সম্ভবত বেকারত্ব, অর্থ না থাকা এবং পরিবারিক বিষয়”, বলেন দামরংসাক।