পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কায় পরিবেশবাদীদের ঘোর বিরোধিতার মধ্যেই আলাস্কায় বৃহত্তম তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলন প্রকল্প অনুমোদন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
এই উইলো প্রকল্প নিয়ে কাজ করতে উদ্যোগী কনোকোফিলিপস কোম্পানি বলছে, এতে স্থানীয় পর্যায়ে বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
কিন্তু কনোকোফিলিপসের প্রস্তাবিত ৮শ কোটি ডলারের এই উইলো প্রকল্পটি অনলাইনে সম্প্রতি কয়েকসপ্তাহে পরিবেশ কর্মীদের অনেক তর্ক-বিতর্ক, আলোচনা-সমালোচনার মুখে পড়েছে, বিশেষ করে টিকটকে তরুণ পরিবেশকর্মীরা এর ঘোর বিরোধিতা করেছে।
আলাস্কার প্রত্যন্ত নর্থ স্লোপ এলাকায় প্রকল্পটি চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। উত্তোলন শুরু হলে দিনেই সেখান থেকে ১৮০,০০০ ব্যারেল তেল পাওয়া যাবে। কিন্তু পরিবেশবাদীদের আশঙ্কা, প্রকল্পের কাজ শুরু হলে সেখানকার জলবায়ু এবং বণ্যপ্রাণীদের ওপর এর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে।
তাছাড়া, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জলবায়ু পরিবর্তন রোধে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তারও বিপরীতে যায় তেলগ্যাস উত্তোলনের এই প্রকল্পে তার অনুমোদন।
তেল-গ্যাস উত্তেলন প্রকল্পের ফলে কার্বন-ডাই অক্সাইড নিঃসরণের মাত্রা বছরে ৯২ লাখ মেট্রিকটন বেড়ে যাবে।
বিবিসি জানায়, উইলো প্রজেক্টের প্রতিবাদ জানিয়ে ১০ লাখেরও বেশি চিঠি এসেছে হোয়াইট হাউজে। আর এ প্রকল্প বন্ধের ডাক দিয়ে অনলাইনে করা আবেদনে ৩ লাখেরও বেশি মানুষ স্বাক্ষর করেছে।
কিন্তু আলাস্কা থেকে কংগ্রেসে প্রতিনিধিত্ব করা তিন আইনপ্রণেতাই উইলো প্রজেক্ট অনুমোদনের জন্য চাপ দিয়েছেন। ওই অঞ্চলে বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টির জন্য এই প্রকল্প খুবই দরকার বলে মত দিয়েছেন তারা।
যুক্তি দেখিয়ে এই আইনপ্রণেতারা আরও বলেছেন এই প্রকল্প দেশের জ্বালানি উৎপাদন বাড়াতে সহায়ক হবে এবং বিদেশের তেলের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নির্ভরশীলতা কমবে।
কিন্তু বাইডেন, যিনি কিনা জলবায়ু পরিবর্তন রোধের লড়াইয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়াকেই স্বাগত জানিয়েছেন,সেই তিনিই কেন তাহলে এখন এই ‘কার্বন বোমা’ প্রকল্প অনুমোদন করলেন? কারণ পরিবেশ নয়, সর্বোপরি এখানে প্রাধান্য পেয়েছে রাজনীতি এবং আইন।