ভারি বৃষ্টিতে বন্যায় বিপর্যস্ত সিউল, অন্তত ৮ জনের মৃত্যু

সিউলের একাধিক মেট্রো স্টেশনে পানি ঢুকেছে; বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 August 2022, 06:57 AM
Updated : 9 August 2022, 06:57 AM

দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলের ব্যাপক এলাকাজুড়ে তুমুল বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় অন্তত ৮ জনের মৃত্যু ও ১৪ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

সোমবার রাতভর ভারি বর্ষণে সিউলের অসংখ্য সড়ক ডুবে যায়, প্লাবিত হয় একাধিক মেট্রো স্টেশন; শহরটির পাশাপাশি এর আশপাশের প্রদেশগুলোতে দেখা দেয় বিদ্যুৎ বিভ্রাট।

অনেক এলাকায় এদিন বৃষ্টিপাতের হার ৮০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ছিল বলেও কোরিয়ার আবহাওয়া বিভাগের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বিবিসি।

তুমুল এ বৃষ্টিপাত আরও কয়েকদিন থাকতে পারে বলে আবহাওয়াবিদরা আভাস দিয়েছেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া বেশ কিছু ছবিতে বন্যার পানিকে প্রবল বেগে মেট্রো স্টেশনের সিঁডি বেয়ে নামতে, পার্ক করা গাড়ির জানালা পর্যন্ত বন্যার পানি পৌঁছাতে এবং বিভিন্ন সড়কে হাঁটু সমান পানির মধ্যে লোকজনকে হাঁটতে দেখা গেছে।

স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে নিহতদের মধ্যে বয়স ৪০ এর ঘরে থাকা দুই বোন এবং ১৩ বছর বয়সী এক মেয়ে বানিঝা বা সেমি-বেইজমেন্ট অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দা বলে জানানো হয়েছে। এই ধরনের অ্যাপার্টমেন্টগুলো রাস্তা পর্যন্ত উঁচুও হয় না।

উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন, প্রবল বৃষ্টিতে কোমর সমান পানি উঠে যাওয়া রাস্তার পাশের ওই অ্যাপার্টমেন্টগুলোতে তারা ঢুকতে পারেননি।

সোমবার রাতে সিউলের অনেক এলাকায়, দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দরনগরী ইনচেওন এবং সিউলের আশপাশের গিওঙ্গি প্রদেশে ঘণ্টায় ১০ সেন্টিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা ইয়োনহাপ।

সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে সিউলের দংজাক জেলায়, ঘণ্টায় ১৪১ দশমিক ৫ মিলিমিটারের বেশি। ১৯৪২ সালের পর একে সর্বোচ্চ বলছে কোরিয়ার আবহাওয়া অধিদপ্তর (কেএমএ)।

বন্যা, বৃষ্টিতে এখন পর্যন্ত যে ৮ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে, তাদের মধ্যে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট ও ভূমিধসে দুইজন মারা গেছেন বলে জানানো হয়েছে। আরেকজনের মৃতদেহ মিলেছে বাস স্টপেজের ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে।

অন্তত ১৪ জন আহত এবং ৬ জন নিখোঁজ বলেও জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

গৃহহীন হয়ে পড়া ১৬৩ জনকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকারি স্থাপনায় আশ্রয়ও দেওয়া হয়েছে, বলেছে ইয়োনহাপ।

প্রবল বর্ষণ সিউলের গণপরিবহন ব্যবস্থাতেও প্রভাব ফেলেছে, অনেক রেললাইন ডুবে যাওয়ায় কর্তৃপক্ষ সিউল ও ইনচেওনের রেল সেবা সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ রাখতেও বাধ্য হয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক-ইয়ল সরকারি কর্মকর্তাদেরকে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।

সিউল ও এর আশপাশের এলাকায় প্রবল বর্ষণ অব্যাহত থাকতে পারে বলে সতর্কতা জারি করেছে কেএমএ; দেশের মধ্যাঞ্চলে বৃষ্টি বুধবার পর্যন্ত হতে পারে বলে আভাসও দিয়েছে তারা।