আইনটি পাস হলে থাইল্যান্ডই হবে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার প্রথম দেশ যেখানে সমলিঙ্গে বিয়ে বৈধতা পাবে।
Published : 27 Mar 2024, 02:06 PM
সমলিঙ্গে বিয়েতে আইনগত বৈধতা দেওয়ার প্রস্তাব রেখে উত্থাপিত একটি বিল বুধবার থাইল্যান্ডের পার্লামেন্টের নিম্মকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে পাস হয়েছে। যেটিকে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ বলছেন এর সমর্থকরা।
এর মধ্য দিয়ে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে সমলিঙ্গে বিয়ে বৈধ করার পথে আরও একধাপ এগিয়ে গেলো থাইল্যান্ড।
যদিও বিলটি আইনে পরিণত হতে এখনও উচ্চকক্ষ সেনেটে অনুমোদন এবং তারপর সেটিতে রাজকীয় অনুমোদনের প্রয়োজন পড়বে।
তবে প্রত্যাশা করা হচ্ছে, এ বছরের শেষ নাগাদই প্রয়োজনীয় অনুমোদন পাওয়ার মধ্য দিয়ে আইনটি পাস হয়ে যাবে।
বিবিসি জানায়, বুধবার থাইল্যান্ডের প্রতিনিধি পরিষদে ৪১৫ জন আইনপ্রণেতা উপস্থিতি ছিলেন এবং বিলটির পক্ষে ৪০০ ভোট পড়ে। ওই বিলে বিবাহকে একজন নারী ও একজন পুরুষের মধ্যে বন্ধনের পরিবর্তে দুইজন মানুষের মধ্যে বন্ধন বলে বর্ণনা করা হয়।
বিলে আরো বলা হয়, নারী ও পুরুষের মত এলজিবিটিকিউ প্লাস জুটিদের বিবাহ সংক্রান্ত কর রেয়াতে সমান অধিকার, তারা সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হতে এবং অক্ষম অংশীদারদের জন্য চিকিৎসার সম্মতি দিতে পারবে।
থাইল্যান্ডে অবশ্য আগে থেকেই লিঙ্গ পরিচয় এবং যৌন অভিমুখতার উপর ভিত্তি করে বৈষম্য আইনত নিষিদ্ধ। যে কারণে দেশটি এলজিবিটিকিউ প্লাসদের কাছে অন্যতম বন্ধুসুলভ দেশ বলে পরিচিত। সেখানকার সমাজ ব্যবস্থাও সমলিঙ্গ জুটিতে স্বীকৃতি দেওয়ার পক্ষে। তারপরও সমলিঙ্গ জুটিতে বিয়ে আইনত বৈধতা দিতে দেশটি অনেক সময় নিয়ে নিয়েছে।
এর আগেও থাইল্যান্ডে সমলিঙ্গ জুটিতে বিয়ে আইনত বৈধতা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রত্যেকবারই সেসব উদ্যোগ ব্যর্থ হয়।
সমলিঙ্গে বৈধতা দেওয়ার পক্ষে নাগরিকদের মতামত জানতে গত বছর থাইল্যান্ডে সরকারিভাবে দেশজুড়ে একটি জরিপ পরিচালিত হয় বলে জানায় বিবিসি। জরিপে ৯৬ দশমিক ৬ শতাংশ ভোট বৈধতা দেওয়ার পক্ষে পড়ে।
নিজেকে গে ঘোষণা করা ৩৫ বছরের পুলিশ কর্মকর্তা ফিসিত সিরিহিরুনচাই বলেন, “হ্যাঁ, আমি পার্লামেন্টে হওয়া বিতর্ক দেখছিলাম এবং আমার আঙুল ক্রস করে রেখেছিলাম।
“আমি খুব খুশি ও দারুণ উত্তেজিত, খুব ভালো কিছু ঘটতে চলেছে। আমি আমার স্বপ্নকে সত্যি হতে দেখার আরো কাছে চলে এসেছি।”
এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, তিনি এবং তার পার্টনার পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে একসঙ্গে আছেন এবং যেদিন সমলিঙ্গে বিয়ে আইন কার্যকর হবে সেদিনই তারা বিয়ে করার পরিকল্পনা করেছেন।
গত বছর থাইল্যান্ডে সাধারণ নির্বাচনের সময় বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল থেকে নির্বাচনী প্রচারের সময় সমলিঙ্গ জুটিদের স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী স্রেতা থাভিসিনও এর পক্ষে নিজের সমর্থন নিয়ে সব সময় সরব থেকেছেন।