একটি সম্মেলন শুরু হচ্ছে ফ্রান্সের প্যারিসে। এতে অংশ নিচ্ছেন মূলত ইউরোপীয় নেতারা। আর অপরটি শুরু হচ্ছে সৌদি আরবে। এতে অংশ নিচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কর্মকর্তারা।
Published : 17 Feb 2025, 06:10 PM
বিশ্বে এ সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হচ্ছে উচ্চ-পর্যায়ের দুই কূটনৈতিক বৈঠক। এর একটি আয়োজন করা হয়েছে ফ্রান্সের প্যারিসে। যেখানে অংশ নেবেন মূলত ইউরোপীয় নেতারা। আর আরেকটি বৈঠক বসছে সৌদি আরবে। যেখানে অংশ নেবেন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কর্মকর্তারা।
দুই বৈঠকের স্থানের মাঝে ব্যবধান ৩ হাজার মাইল হলেও দুয়েরই আলোচ্য বিষয়বস্তু এক। আর তা হচ্ছে: ইউক্রেইন যুদ্ধ এবং কেমন করে এর অবসান হবে সেটি।
বৈঠক শুরু হতে চলার আগে এ পর্যন্ত কী কী হল তার বিস্তারিত তুলে ধরেছে বিবিসি:
সৌদি আরবে বৈঠক করতে এরই মধ্যে দেশটিতে পৌঁছেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মার্কিন কর্মকর্তারাও সৌদি আরবে যাচ্ছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সহযোগী ইউরি ঊষাকভের সঙ্গে বৈঠক করতে।
সৌদি আরবে যুক্তরাষ্ট্র ও রুশ কর্মকর্তাদের এই সম্মেলনে আমন্ত্রিত নয় ইউক্রেইন। ইউক্রেইন সরকারের এক কর্মকর্তা বিবিসি কে একথা জানিয়েছেন।
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে সম্ভাব্য শান্তি আলোচনা নিয়ে কথা বলবেন।
রুবিও ইউক্রেইন যুদ্ধ অবসানে যে কোনও ‘প্রকৃত’ শান্তি আলোচনার ইউক্রেইন ও ইউরোপ অংশ হবে বলে আশ্বাস দিলেও রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ সৌদি আরবে আলোচনায় বসতে যাওয়ার আগেই বলেছেন, ইউক্রেইন যুদ্ধ বন্ধে কোনও শান্তি চুক্তির আলোচনায় ইউরোপের ভূমিকা থাকার দরকার আছে বলে তিনি মনে করেন না।
তবে ইউরোপ চায় ইউক্রেইন যুদ্ধ প্রশ্নে কোনও চুক্তি বা সমাধানের ক্ষেত্রে আলোচনায় তারাও কেন্দ্রীয় ভূমিকা রাখুক বা জড়িত থাকুক। কারণ, তিন বছর আগে শুরু হওয়া এই ইউক্রেইন যুদ্ধের গতিপ্রকিৃতি এবং তা কীভাবে সমাধান করা হচ্ছে সে বিষয়টি ইউরোপের নিজস্ব নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প গতসপ্তাহে বুধবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনে দীর্ঘ সময় আলাপ এবং ইউক্রেইন যুদ্ধ অবসানের আলোচনা শুরু করতে তাদের সম্মতির কথা জানান।
এরপরই ইউরোপ তাদের ‘পিঠ পিছে’ ইউক্রেইন নিয়ে কোনও শান্তিচুক্তি না করার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেছে। একইসঙ্গে ইউক্রেইন নিয়ে একটি জরুরি বৈঠকও তারা আয়োজন করে।
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ইউক্রেইন নিয়ে তড়িঘড়ি আয়োজন করা হয় এই জরুরি বৈঠক। তাতে যোগ দিতে জড়ো হচ্ছেন ইউরোপীয় নেতারা। এই নেতাদের মধ্যে ফ্রান্স ছাড়াও আছেন জার্মানি, ইতালি, পোল্যান্ড ও অন্যান্য দেশের নেতারা। রোববার বিকালেই শুরু হওয়ার কথা আলোচনা।
বৈঠক শুরুর আগেই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ইউক্রেইন যুদ্ধ পরবর্তী প্রস্তাব দিয়ে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, যুদ্ধ শেষ হলে যুক্তরাজ্য তাদের শান্তিরক্ষী বাহিনী ইউক্রেইনে রাখতে প্রস্তুত। অর্থাৎ, প্রয়োজন পড়লে যুক্তরাজ্য নিজ সেনাদের দিয়ে ইউক্রেইনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইচ্ছুক। জার্মানি এবং সুইডেনও একইরকম প্রস্তাব দিয়েছে।
রাশিয়া ২০২২ সালে ইউক্রেইনে আগ্রসন শুরু করেছে। তারপর থেকে যুদ্ধ এখনও চলছে। ইউক্রেইনের জ্বালানি অবকাঠামোতে রাশিয়ার হামলায় কয়েকটি অঞ্চলে বিদ্যুৎবিভ্রাট দেখা দিয়েছে। ইউক্রেইনের এক এমপি বলেছেন, রাশিয়া আদৌ কোনও শান্তি চায় বলে মনে হচ্ছে না।
ওদিকে, রাশিয়াও তাদের ওপর ইউক্রেইনের একের পর এক হামলা নিয়ে অভিযোগ করছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রোববার রাতে তারা ইউক্রেইনের ছোড়া ৯০ টি ড্রোন হামলা ঠেকিয়েছে এবং ড্রোনগুলো ধ্বংস করেছে।