গাজার উত্তরাঞ্চলের একটি ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গের ভেতর থেকে হামাসের ধরে নিয়ে যাওয়া জিম্মিদের মধ্যে পাঁচ জনের মৃতদেহ খুঁজে পাওয়ার দাবি করেছে ইসরায়েল।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী রোববার ভিডিও ফুটেজ প্রকাশের মাধ্যমে এ তথ্য জানায়। ভিডিওতে অন্ধকার সুড়ঙ্গের ভেতর সাদা রঙের টাইলস লাগানো একটি শৌচাগার এবং আরেকটি কক্ষ দেখা গেছে।
কিভাবে ওই জিম্মিদের মৃত্যু হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ বিষয়ে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর প্রধান মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, “মৃতদেহগুলির ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এখনো হাতে আসেনি। আমরা প্রথমে এ বিষয়ে নিহতদের পরিবারকে জানাব এবং তারপর তারা যেটুকু সবাইকে জানানোর অনুমতি দেবে সেটুকু প্রকাশ করা হবে।”
উদ্ধার মৃতদেহের মধ্যে তিনজন ইসরায়েলি সেনা এবং দুইজন বেসামরিক নাগরিক।
গত ৭ অক্টোবর গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র সংগঠন হামাস ইসরায়েলে হামলায় চালিয়ে ১২শ’র বেশি মানুষকে হত্যা করে। জিম্মি করে নিয়ে যায় আরো ২৪০ জনকে। যে হামলার জবাব দিতে ওই দিন থেকে গাজায় বড় ধরণের সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। আড়াই মাসের বেশি সময় ধরে চলতে থাকা এই অভিযানে গাজা ২০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এর মধ্যে রোববার রাতটি ছিল গাজায় সবচেয়ে প্রাণঘাতী রাত।
ইসরায়েল যে পাঁচ জিম্মির মৃতদেহ উদ্ধার করেছে তাদের মধ্যে তিনজনকে গত সপ্তাহে হামাসের প্রকাশ করা একটি ভিডিওতে জীবিত দেখা গেছে বলে জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স। হামাসের প্রকাশ করা ভিডিওতে তাদের একটি সাদা টাইলযুক্ত জানালাবিহীন ছোট্ট কক্ষে দেখা গেছে। কক্ষের দেওয়ালে বৈদ্যুতিক সকেট ছিল।
ইসরায়েলকে উদ্দেশ করে হামাস বলেছে, “আপনাদের সামরিক অস্ত্র এই তিনজনকে হত্যা করেছে।”
হামাস এর আগেও বলেছিল, গাজায় ইসরায়েলের বোমাবর্ষণে জিম্মিরা মারা গেছে। সশস্ত্র এই সংগঠনটি জিম্মিদের শিরশ্ছেদের হুমকিও দিয়েছে।
মাঝে এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতিতে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তি ও গাজায় ত্রাণ সরবরাহ প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার সাপেক্ষে শতাধিক ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। কিন্তু এখনো তাদের হাতে প্রায় ১২৯ ইসরায়েলি জিম্মি বন্দি আছে।
কয়েকদিন আগে গাজায় অভিযান চালানো সময় ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে তিন জিম্মি নিহত হয়।
বাকি জিম্মিদের মুক্তিতে আরো বেশি প্রচেষ্টা চালাতে ইসরায়েল সরকারের উপর দেশে এবং দেশের বাইরে থেকে চাপ বাড়ছে। ইসরায়েল আবারও একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে যাওয়ার প্রস্তুতির কথা জানালেও হামাস এবার বলেছে, স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতি ছাড়া আর কোনো ধরণের আলোচনায় যাবে না।