মঙ্গোলিয়া আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতের সদস্য হওয়ায় তাদের পুতিনকে গ্রেপ্তারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে দেশটি আদেশ না মানলে তা মানানোর কোনও ব্যবস্থা নেই।
Published : 03 Sep 2024, 05:26 PM
আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতের (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মাথায় নিয়েও মঙ্গলবার মঙ্গোলিয়া সফরে গেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
গত বছর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর এবারই প্রথম আইসিসি-র কোনও সদস্য দেশ সফরে গেলেন পুতিন। সেখানে তিনি সাদর অভ্যর্থনা পেয়েছেন। মঙ্গোলিয়ার নেতা রাজধানী উলানবাতরে পুতিনকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দিয়েছেন।
রাজধানীর চেঙ্গিস খান স্কয়ারে পুতিনকে স্বাগত জানাতে ঘোড়ার পিঠে চড়ে উপস্থিত ছিল সারি সারি সেনা। সেখানে দুই দেশের পতাকাও উত্তোলন করা হয় বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে। লাইভ ব্যান্ডে বাজানো হয় সামরিক স্তবসঙ্গীত। ফুল দিয়ে পুতিনকে স্বাগত জানায় ছোট্ট এক বালিকা।
ইউক্রেইনে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের বিরুদ্ধে গতবছর মার্চে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত (আইসিসি)।
ইউক্রেইনে যুদ্ধাপরাধ এবং শিশুদের ইউক্রেইন থেকে অবৈধভাবে রাশিয়ায় নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে পুতিনকে দায়ী করে আইসিসির একজন বিচারক ওই আদেশ দেন। সেখানে বলা হয়, ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রশিয়া ইউক্রেইনে পুরোদমে আগ্রাসন শুরুর পর থেকে এসব অপরাধ সংঘটিত হয়েছে।
আইসিসি-র এই আদেশ কেবল সেসব দেশের জন্যই প্রযোজ্য, যারা এ আন্তর্জাতিক আদালত গঠনের জন্য চুক্তি ‘রোম সংবিধিতে’ সই করেছিল। অর্থাৎ, পুতিনকে গ্রেপ্তার করে হেগ আদালতে বিচারের জন্য প্রত্যর্পণের বাধ্যবাধকতা আছে আইসিসি’র ১২৪ টি সদস্যদেশের।
এই সদস্যদেশগুলোর মধ্যে আছে মঙ্গোলিয়া। তবে তারা আদালতের আদেশ না মানলে সেটি মানানোর কোনও ব্যবস্থা নেই। মঙ্গোলিয়ার পুতিনকে গ্রেপ্তার না করাটা খোদ ‘আইসিসি এবং ফৌজদারি আইনি ব্যবস্থার জন্য বড় ধাক্কা’ বলে উল্লেখ করেছেন ইউক্রেইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র।
পুতিনের সফরের আগেই তাকে গ্রেপ্তার করার জন্য মঙ্গোলিয়াকে আহ্বান জানিয়েছিল ইউক্রেইন। তবে ক্রেমলিন বলেছিল, পুতিন মঙ্গোলিয়া সফরে গিয়ে গ্রেপ্তার হবেন বলে তারা উদ্বিগ্ন নয়।
ইউক্রেইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র টেলিগ্রামে লিখেছেন, “মঙ্গোলিয়া একজন অভিযুক্ত অপরাধীকে ন্যায়বিচার এড়ানোর সুযোগ করে দিয়ে যুদ্ধাপরাধের দায় কাঁধে নিচ্ছে।”
সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর থেকেই মঙ্গোলিয়া চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। মঙ্গোলিয়ার নেতা বলেছেন, পুতিনের এই সফরে দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার হবে বলে তিনি আশা করছেন।
তবে পুতিনের সফরকালে সোমবার চেঙ্গিস খান স্কয়ারে বিক্ষোভে সমবেত হয়েছে কিছু মানুষ। যুদ্ধাপরাধী পুতিনকে চত্বরটি থেকে বের করে দেওয়ার দাবি জানায় তারা। মঙ্গলবার দুপুরে আরেকটি বিক্ষোভের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।