প্রধানমন্ত্রিত্বে শেষ ধাক্কা? দুই গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী খোয়ালেন জনসন

একের পর এক কেলেঙ্কারিতে এরই মধ্যে বেকায়দায় পড়া যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের জন্য আরেক বিপর্যয় হয়ে এসেছে গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা দুই মন্ত্রীর পদত্যাগ।

>>রয়টার্স
Published : 5 July 2022, 07:11 PM
Updated : 6 July 2022, 03:38 AM

মঙ্গলবার পদত্যাগ করেছেন ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ। মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ এ দুই মন্ত্রী খোয়ানোকে বরিস জনসনের প্রধানমন্ত্রীত্বের জন্য শেষ ধাক্কা হিসাবেই দেখা হচ্ছে।

কোভিড বিধি লঙ্ঘন করে একাধিক পার্টি আয়োজন নিয়ে জল ঘোলা হয়েছে আগেই। সেই কেলেঙ্কারিতে জনসন ক্ষমা চেয়েও পার পাননি। অনেক দিন থেকেই পদত্যাগের চাপে ছিলেন তিনি। গত মাসে কানের গোড় দিয়ে জনসন পার্লামেন্টের অনাস্থা ভোটে টিকেছেন।

কিন্তু জনসনের নেতৃত্ব নিয়ে তার নিজ দল এবং এর বাইরে এখনও রয়ে গেছে অসন্তোষ। এ পরিস্থিতির মধ্যেই যোগ হওয়া নতুন আরেক কেলেঙ্কারিতে জনসন মঙ্গলবার ক্ষমা চাওয়ার চেষ্টা নেওয়ার পরই তাকে আরও বেকায়দায় ফেলে নটকীয়ভাবে পদত্যাগ করেন দুই মন্ত্রী।

টোরি (কনজারভেটিভ) এমপি ক্রিস পিঞ্চারের বিরুদ্ধে যৌন অসদাচরণের অভিযোগ সম্পর্কে আগে থেকেই জানা থাকার পরও তাকে সরকারের ডেপুটি চীফ হুইপ করার বিষয়টি নিয়ে এদিন ক্ষমা চাইছিলেন জনসন।

তিনি বলছিলেন, ক্রিসকে সরকারি পদে নিয়োগ করে এবং তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা না নিয়ে তিনি ‘ভুল’ করেছেন। এর জন্য ‘অত্যন্ত দুঃখিত’ বলে জনসন মন্তব্য করেন এবং বলেন, এই নিয়োগের কারণে যারা ভুক্তভোগী হয়েছেন তাদের প্রত্যেকের কাছে তিনি ক্ষমাপ্রার্থী।

কিন্তু জনসনের এই কথার মাত্র কয়েক মিনিট পরই পদত্যাগ করেন অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ। দুইজনই প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিয়ে পদত্যাগের কারণ জানিয়েছেন এবং কেলেঙ্কারিতে নিমজ্জিত একটি প্রশাসন পরিচালনায় জনসনের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

ক্রিস পিঞ্চারের বিরুদ্ধে গত সপ্তাহে সর্বশেষ যৌন কেলেঙ্কারির আরেক নতুন ঘটনা সামনে আসে এবং তাকে টোরি এমপি’র পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়।

ক্রিসের বিষয়টি নিয়ে শোরগোল জনসন যেভাবে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তাতে বিরোধী দলগুলোর পাশাপাশি টোরি এমপি’দেরও সমালোচনার শিকার হয়েছেন তিনি। উপরন্তু ক্রিসের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি জনসনের জানা থাকা নিয়েও ক্ষুব্ধ হয়েছেন এমপি’রা।

অর্থমন্ত্রী সুনাক জনসনকে দেওয়া তার পদত্যাগপত্রে লিখেছেন, “জনগণ ঠিকই আশা করে যে, সরকার ঠিকমত, পরিপূর্ণভাবে এবং সবকিছুকে গুরুত্বসহকারে নিয়ে পরিচালিত হবে।” তিনি আরও লেখেন, “সরকার ছেড়ে যেতে আমি কষ্ট পাচ্ছি। কিন্তু অনেক অনিচ্ছা সত্ত্বেও আমি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি যে, আমরা এইভাবে সরকার চালিয়ে যেতে পারি না।”

ওদিকে, সাজিদ জাভিদ বলেছেন, জাতীয় স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের শাসন পরিচালনার সক্ষমতার ওপর আইনপ্রণেতারা এবং জনগণও আস্থা হারিয়েছে। পদত্যাগপত্রে জাভিদ লিখেছেন, “আমাকে দুঃখের সঙ্গেই বলতে হচ্ছে যে, আপনার নেতৃত্বের অধীনে পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে না সেটি আমার কাছে পরিষ্কার। অতএব, আপনি আমারও আস্থা হারিয়েছেন।”