‘গুরুতর হুমকি রাশিয়া’, ফিনল্যান্ড-সুইডেনকে নেটোতে যোগদানের আমন্ত্রণ

ইউক্রেইনে রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রেক্ষাপটে কয়েক দশকের মধ্যে ইউরোপের নিরাপত্তা বলয়ে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটিয়ে ফিনল্যান্ড ও সুইডেনকে আনুষ্ঠানিকভাবে জোটে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছে নেটো। ‘রাশিয়াকে গুরুতর হুমকি’ হিসাবে দেখতেও একমত হয়েছেন নেটো নেতারা।

>>রয়টার্স
Published : 29 June 2022, 05:24 PM
Updated : 30 June 2022, 04:39 AM

স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে মঙ্গলবার শুরু হয়েছে পশ্চিমা সামরিক জোট নেটোর সম্মেলন। সেখানেই নেতারা এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন।

সম্মেলন থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “নেটোর ৩০ মিত্রদেশ মাদ্রিদ সম্মেলনে রাশিয়াকে প্রকাশ্যেই জোটের সদস্যদের নিরাপত্তায় সবচেয়ে গুরুতর এবং সরাসরি হুমকি হিসাবে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং এ ব্যাপারে একমত হয়েছে।”

ফিনল্যান্ড এবং সুইডেনকে নেটোতে অন্তর্ভুক্ত হতে দিতে তুরস্ক রাজি হওয়ার পর জোটের নেতারা এক ঘোষণাপত্রে বলেছেন, “আজ আমরা ফিনল্যান্ড এবং সুইডেনকে নেটোতে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

এখন নেটো মিত্রদেশগুলোর পার্লামেন্টে এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন পাওয়ার অপেক্ষা। এ প্রক্রিয়ায় একবছর লেগে যেতে পারে। তবে একবার অনুমোদন পেয়ে গেলে নর্ডিক এই দেশ দুটি নেটোর যৌথ প্রতিরক্ষা অনুচ্ছেদ ‘আর্টিকেল ৫’ সুরক্ষা পাবে। তারা যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক রক্ষাকবচে সুরক্ষিত থাকবে।

নেটো মহাসচিব ইয়েন্স স্টলটেনবার্গ বলেছেন, “আমরা ফিনল্যান্ড, সুইডেনসহ সব মিত্রকে সুরক্ষা দিতে সক্ষম হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করব।”

ফিনল্যান্ড, সুইডেনকে কেবল সুরক্ষা দেওয়াই নয় নর্ডিক অঞ্চলে সেনা উপস্থিতি বাড়াতেও ইতোমধ্যে রাজি হয়েছে নেটো দেশগুলো। ফিনল্যান্ড এবং সুইডেনকে আশ্বস্ত করতে বাল্টিক সাগরে সামরিক মহড়া এবং নৌবাহিনীর টহল জোরদার করতে রাজি তারা।

স্নায়ুযুদ্ধের পর থেকে র‌্যাপিড রিঅ্যাকশন ফোর্সের সেনাসংখ্যায় সবচেয়ে বড় রদবদল পরিকল্পনা এরই মধ্যে নিয়েছে নেটো। নেটো মহাসচিব স্টলটেনবার্গ বলেছেন, “আমরা নেটো রেসপন্স ফোর্সকে রূপান্তর করব এবং উচ্চ সতর্কাবস্থায় রাখা সেনাসংখ্যা ৩ লাখের বেশি বাড়াব।”

নেটো রেসপন্স ফোর্স (এনআরএফ)-এ বর্তমানে প্রায় ৪০ হাজার সেনা আছে। এই সেনাদের বেশিরভাগই মোতায়েন আছে নেটোর পূর্ব দিকের দেশগুলোতে। স্টলটেনবার্গ বলেছেন, রাশিয়ার কাছ থেকে ইউরোপের নিরাপত্তা সরাসরি হুমকির মুখে পড়ায় সেনাসংখ্যা বাড়ানোর এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

ওদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও ইউরোপে সামরিক উপস্থিতি জোরদারের মধ্য দিয়ে নেটোকে শক্তিশালী করার ঘোষণা দিয়েছেন। বুধবার নেটো মহাসচিব স্টলেনবার্গের সঙ্গে বৈঠকে বাইডেন এ ঘোষণা দেন।

তিনি বলেছেন, অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে এখনই নেটোর প্রয়োজন বেশি। স্থল, আকাশ এবং নৌ- সব দিক থেকেই এই জোটকে শক্তিশালী করা হবে।