বিধিনিষেধের কারণে বিশ্বের দীর্ঘতম এই সাবওয়ের অনেক লাইন প্রায় দুই মাস ধরে বন্ধ ছিল।
ব্যস্ততম এই শহরে আগামী সপ্তাহ থেকে কোভিড সংক্রমণ মোকাবেলায় দেওয়া সিংহভাগ বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার কথা; তারই অংশ হিসেবে রোববার থেকে সীমিত আকারে সাবওয়ে ও অন্যান্য গণপরিবহন খুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
তবে শহরটির বেশিরভাগ এলাকার বাসিন্দাদের এখনও ঘর থেকে বাইরে বের হওয়ার অনুমতি নেই।
চীনের সবচেয়ে জনবহুল এ শহরের অনেক জায়গায় এখনও কঠোর বিধিনিষেধ বহাল আছে।
সাংহাইয়ের লকডাউন ও অন্যান্য শহরে বিধিনিষেধ সম্প্রতি চীনের অর্থনীতিকে বড় ধরনের ধাক্কা দিয়েছে; এ ক্ষতি পূরণে সহায়তার আশ্বাসও এসেছে দেশটির নীতিনির্ধারকদের কাছ থেকে।
রোববার যারা সাহস নিয়ে বাণিজ্যিক হাবের সাবওয়ে ট্রেনে চড়েছেন তাদেরকে নীল রংয়ের সুরক্ষা গাউন ও ফেইস শিল্ড পরতে দেখা গেছে। কামরাগুলোর ভেতর এক যাত্রী থেকে আরেক যাত্রীর মাঝখানে অনেকগুলো খালি আসন ছিল। যাত্রীর সংখ্যাও ছিল স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কম।
রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় খোলার আগেই একটি সাবওয়ে স্টপেজে আসেন অন্য এলাকা থেকে সাংহাইয়ে কাজ করতে আসা নির্মাণ শ্রমিক শু জিহুয়া; তার আশা রেল স্টেশনে যাওয়া, পরে সেখান থেকে পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশে নিজের বাড়ি পৌঁছানো।
“১৬ মার্চ থেকে কাজ বন্ধ। লকডাউন কি সত্যি সত্যি তুলে নেওয়া হবে? খুব স্পষ্ট করে বলছে না,” বলেছেন শু। এমনিতে প্রতিমাসে তিনি এক হাজার থেকে এক হাজার ১০০ ডলারের মতো আয় করতেন, কিন্তু লকডাউনে পারেননি।
কাজ খুঁজে পাবেন, এমনটা নিশ্চিত হওয়ার পরপরই তিনি সাংহাইয়ে ফিরবেন বলেও জানান।
লি নামের এক নারী জানান, সাবওয়ে ট্রেন তাকে যেখানে নামাবে সেখান থেকেও ৮ কিলোমিটার দূরে এক হাসপাতালে বাবাকে দেখতে যাচ্ছেন তিনি।
“আমি যখন স্টেশনে পৌঁছাবো তখন সেখান থেকে কোনো গাড়ি বা পরিবহন পাবো কিনা জানি না, হয়তো হাঁটতেই হবে,” বলেন তিনি।
রয়টার্স জানিয়েছে, রোববার থেকে সাংহাইয়ের সাবওয়ের ২০টি লাইনের মধ্যে ৪টি এবং ২৭৩টি রুটে বাস চালু হয়েছে। এসব লাইন ও বাসের রুটের অনেকগুলোই মার্চের শেষ দিকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল; ধীরে ধীরে অন্যগুলোও বন্ধ হয়। তবে স্বল্প সংখ্যক স্টপেজের মধ্যে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু সেবা চালু ছিল।
আড়াই কোটি জনসংখ্যার শহরটি ১ জুন থেকে অনেকটাই স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে, তার আগ পর্যন্ত চলাচলের ক্ষেত্রে আগের অধিকাংশ বিধিনিষেধই বহাল থাকবে।
বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ায় সাংহাইয়ের ৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রো পরিষেবার ৪টি লাইন স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে, ট্রেন ছাড়বে ২০ মিনিট পরপর। প্রবেশপথে শরীরের তাপমাত্রা স্ক্যানের পাশাপাশি যাত্রীদেরকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে করা পিসিআর টেস্টের ‘নেগেটিভ’ ফলও দেখাতে হবে।