পদত্যাগ করব না: জনসন

লকডাউনের মধ্যে পার্টি আয়োজনের ঘটনার জেরে পদত্যাগ করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।

>>রয়টার্স
Published : 26 Jan 2022, 03:38 PM
Updated : 26 Jan 2022, 04:33 PM

আচরণবিধি ভঙ্গ করলে মন্ত্রীদের পদ ছাড়ার নিয়ম স্বীকার করে নিলেও জনসন বুধবার বিরোধীদলের পদত্যাগের ডাক প্রত্যাখ্যান করেন।

২০১৯ সালে কনজারভেটিভ পার্টির ইতিহাসে ৩০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় জয় নিয়ে ক্ষমতায় আসেন বরিস জনসন।

 করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে লকডাউনের সময় মদপানের একাধিক পার্টি আয়োজনের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এ নিয়ে ব্রিটিশ ক্যাবিনেট অফিস ও পুলিশ আলাদাভাবে তদন্তও শুরু করেছে।

বুধবার যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে এমপি’দের প্রশ্নোত্তর পর্বের মুখোমুখি হন প্রধানমন্ত্রী জনসন। সেখানে লকডাউনের মধ্যে পার্টি করা নিয়ে তাকে প্রশ্নবানে জর্জরিত হতে হয়েছে। জনসন পার্লামেন্টকে বলেছেন, কোনও নিয়মই ভঙ্গ হয়নি।

এদিন পার্লামেন্টে বিরোধীদল লেবার পার্টির নেতা কির স্টারমার জনসনকে প্রশ্ন করেন, মন্ত্রীদের আচরণবিধি অনুযায়ী, কোনও মন্ত্রী জেনেশুনে পার্লামেন্টকে ভুল পথে পরিচালিত করলে পদত্যাগ করতে হবে, এই নিয়ম তার জন্যও প্রযোজ্য কি না? জবাবে বরিস জনসন বলেন, “অবশ্যই।”

এরপর স্টারমার আবার বলেন, “তিনি (জনসন) পার্লামেন্টকে বিভ্রান্ত করে থাকলে তাকে পদত্যাগ করতে হবে। তাহলে আপনি কি এখন পদত্যাগ করবেন?” উত্তরে জনসন বলেন, “ না।”

২০২০ সালের ২০ মে ডাউনিং স্ট্রিটের বাগানে মদের পার্টি করেছিলেন জনসন। কোভিড-১৯ মহামারী রুখতে যুক্তরাজ্য জুড়ে তখন কঠোর লকডাউন চলছিল।

ওই পার্টিসহ লকডাউনের মধ্যে সরকারি কার্যালয়গুলোতে আয়োজিত পার্টি নিয়ে তদন্ত করছেন কেবিনেট অফিসের কর্মকর্তা সু গ্রে। তার তদন্তের ফল কখন প্রকাশ করা হবে তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট হওয়া যায়নি। বিশেষ করে পুলিশি তদন্ত শুরুর পর বিষয়টি নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

জনসন পার্লামেন্টে বলেছেন, অভিযোগ ওঠা পার্টিগুলো নিয়ে যে তদন্ত চলছে তিনি সেগুলোর বিষয়ে কথা বলতে পারেন না। বরং তার সরকার দেশকে অর্থনৈতিক অগ্রগতির পথে পরিচালিত করা এবং ইউক্রেইন সংকট নিয়ে পশ্চিমবিশ্বের প্রতিক্রিয়া কী হবে সেটি নিয়ে কাজ করতে ব্যস্ত।

লকডাউনের মধ্যে হওয়া পার্টি নিয়ে জনসন নানা ধরনের ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। একবার তিনি বলছেন, তিনি কোনও নিয়ম লঙ্ঘন করেননি। আবার জনগনের কাছে তার কাজের জন্য ক্ষমা চাইছেন।

পার্লামেন্টের তদন্ত ছাড়াও মঙ্গলবার ব্রিটিশ পুলিশ লকডাউনের মধ্যে ডাউনিং স্ট্রিটে পার্টি নিয়ে তাদের নিজেদের তদন্ত শুরুর ঘোষণা দেওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই জনসনের ওপর চাপ আরও বেড়েছে।

জনসনের দল কনজারভেটিভ পার্টির বেশ কয়েকজন এমপিও এরই মধ্যে খোলাখুলি তার পদত্যাগ দাবি করেছেন। তারা দলের ১৯২২ কমিটির প্রধানের কাছে জনসনের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে চিঠিও লিখেছেন।

নিয়মানুযায়ী, পার্লামেন্টে ৩৫৯ কনজারভেটিভ এমপির মধ্যে ৫৪ জন যদি দলনেতা জনসনের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে চিঠি লেখেন তবে তাকে দলীয় প্রধান থাকা নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে।

রয়টার্স জানায়, চিঠির সংখ্যা ৫৪ না হওয়া পর্যন্ত সে বিষয়ে সব তথ্য গোপন রাখা হবে। যদি জনসন শেষ পর্যন্ত পদত্যাগে বাধ্য হন হবে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পেতে পারেন।