বিবিসি ওয়ার্ল্ড নিউজ-কে মালালা বলেন, আফগানিস্তানে মেয়েদের স্কুলে ফেরার ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা কয়েক বছর পর্যন্ত বহাল থেকে যেতে পারে।
গত অগাস্টে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করা কট্টরপন্থি ইসলামি গোষ্ঠী তালেবান মেয়েদেরকে বাদ দিয়ে কেবল ছেলেদের স্কুলে ফেরার অনুমতি দিয়েছে। মালালা বলেন, “একমাস আগে এটি ঘটেছে। তারা ঘোষণা দিয়ে বলেছে, ছেলেরা স্কুলে যেতে পারবে। তাহলে তারা মেয়েদের জন্যও এটা করছে না কেন?”
তালেবানের ভাষ্য, তারা ইসলামিক আইনের ব্যাখ্যা অনুযায়ী মেয়েদের নিরাপত্তা এবং শ্রেণিকক্ষে আলাদা পাঠদান ব্যবস্থা নিশ্চিত করার পরই তাদেরকে স্কুলে ফিরতে দেবে। তবে তালেবানের এ প্রতিশ্রুতি নিয়ে অনেকেই সন্দিহান।
রোববার মালালা ইউসুফজাই এবং আফগান নারী অধিকার কর্মীদের এক খোলা চিঠিতে বলা হয়েছে, “তালেবান কর্তৃপক্ষকে বলছি... নারী শিক্ষার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিন এবং অবিলম্বে মেয়েদের মাধ্যমিক বিদ্যালয় আবার চালু করুন।”
মেয়েদের স্কুলে যেতে বাধা দেওয়া ধর্ম সমর্থন করে না; সেটি তালেবানকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিতে বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোর নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মালালা।
চিঠির লেখনীতে বলা হয়েছে, বিশ্বে আফগানিস্তানই এখন একমাত্র দেশ, যেখানে নারীশিক্ষা নিষিদ্ধ রয়েছে। অনেকের সঙ্গে আফগানিস্তানের ক্ষমতাচ্যুত সরকারের মানবাধিকার কমিশনের প্রধান শাহারজাদ আকবরও এই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন।
আফগান শিশুদের একটি শিক্ষা পরিকল্পনার জন্য জরুরি তহবিল সহায়তা দিতে জি-২০ নেতাদেরকেও আহ্বান জানানো হয়েছে চিঠিতে। চিঠির পাশাপাশি অনলাইনে একটি পিটিশনও করা হয়েছে সোমবার, তাতে এ পর্যন্ত ৬৪০,০০০’র বেশি মানুষ স্বাক্ষর করেছেন।
পাকিস্তানি নারী শিক্ষাকর্মী মালালা ইউসুফজাই ২০১২ সালে সোয়াত উপত্যকায় ‘তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান’ এর হামলার শিকার হন। সে সময় মালালা বাসে করে স্কুল থেকে ফেরার পথে মাথায় তালেবানের গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন।
বর্তমানে ২৪ বছর বয়সী মালালা নারী শিক্ষা নিয়ে কাজ করছেন। তার অলাভজনক সংস্থা মালালা ফান্ড আফগানিস্তানে ২৭ লাখ ডলার বিনিয়োগ করছে।