স্পেনে যৌনপেশা বিলুপ্তির প্রতিশ্রুতি প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজের

স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ আইন করে দেশে যৌনপেশা বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Oct 2021, 07:01 AM
Updated : 18 Oct 2021, 07:01 AM

রোববার ভ্যালেন্সিয়ায় তার দল সোস্যালিস্ট পার্টির তিন দিনের কংগ্রেস শেষে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে তিনি এ প্রতিশ্রুতি দেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

যৌনপেশা নারীদের ‘দাসে’ পরিণত করে বলে মন্তব্য করেছেন সানচেজ।

স্পেনে ১৯৯৫ সালে যৌনপেশার ওপর থেকে বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হয়। ২০১৬ সালে জাতিসংঘের এক হিসাবে বলা হয়, দেশটির যৌন খাত ৩.৭ বিলিয়ন ইউরোর শিল্পে পরিণত হয়েছে।

২০০৯ সালে করা এক জরিপে দেখা যায়, প্রতি তিন জন স্পেনীয় পুরুষের মধ্যে একজন যৌনতার জন্য অর্থ খরচ করেন। 

এরপর ওই একই সালে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদনে যৌনতার জন্য অর্থ খরচ করা পুরুষের সংখ্যা ৩৯ শতাংশ বলে ধারণা দেওয়া হয়েছিল।  

২০১১ সালে জাতিসংঘের এক সমীক্ষায় বিশ্বে পুয়ের্তো রিকো ও থাইল্যান্ডের পর স্পেনকে যৌনপেশার তৃতীয় বৃহত্তম কেন্দ্র বলে উল্লেখ করা হয়েছিল।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্পেনে যৌনপেশা এখন অনিয়ন্ত্রিত অবস্থায় আছে, যারা স্বেচ্ছায় যৌন সেবার জন্য অর্থ নিয়ে থাকেন সেখানে তাদের জন্য কোনো শাস্তির বিধান নেই যদিনা সেটি প্রকাশ্য স্থানে ঘটে থাকে। তবে যৌন কর্মী ও সম্ভাব্য ক্রেতার মধ্যে দালালি করা অবৈধ। 

বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পর থেকে দেশটিতে এই খাতের ব্যাপক প্রসার ঘটে। স্পেনে প্রায় তিন লাখ নারী যৌন কর্মী হিসেবে কাজ করেন বলে সাধারণভাবে ধারণা করা হয়।

২০১৯ সালে সানচেজের পার্টি নির্বাচনী ইস্তাহারে যৌনপেশাকে বেআইনি ঘোষণার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। আরও বেশি নারী ভোটারদের আকৃষ্ট করতে এ প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে বলে তখন ধারণা করা হয়েছিল।

ওই ইস্তাহারে যৌনপেশাকে ‘দারিদ্রের নারীত্বকরণের অন্যতম নিষ্ঠুর দিক এবং নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার অন্যতম খারাপ রূপ’ বলে অভিহিত করা হয়েছিল।

কিন্তু নির্বাচনের পর দুই বছর পার হয়ে গেলেও ওই প্রতিশ্রুতি পালনে কোনো আইন করা হয়নি। 

স্পেনের বর্তমান ব্যবস্থার সমর্থকরা বলছেন, এই ব্যবসায় কাজ করা নারীদের জন্য এটি বিশাল সুবিধা নিয়ে এসেছে এবং তাদের জীবন নিরাপদ করেছে।

তবে গত কয়েক বছর ধরে পাচার করে নিয়ে আসা নারীদের যৌন কাজে নিয়োজিত করার সম্ভাবনা নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ২০১৭ সালে স্পেনীয় পুলিশ পাচারবিরোধী অভিযানে ১৩ হাজার নারীকে শনাক্ত করেছিল, তৃতীয় একটি পক্ষ এদের অন্তত ৮০ শতাংশকে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ব্যবহার করছিল বলে তখন জানানো হয়েছিল।