আফগানিস্তানে তালেবান যোদ্ধারা ৩০ দিনের মধ্যে রাজধানী শহর কাবুলকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেতে পারে এবং তা দখলে নিয়ে নিতে পারে ৯০ দিনের মধ্যেই। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাদের বরাত দিয়ে একথা বলেছেন এক মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা।
Published : 11 Aug 2021, 10:54 PM
তালেবান যোদ্ধারা অষ্টম প্রাদেশিক রাজধানী দখলে নেওয়ার পর বুধবার আফগানিস্তান পরিস্থিতি নিয়ে গোয়েন্দাদের এই মূল্যায়ন তুলে ধরলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের-নেতৃত্বাধীন বিদেশি সেনারা চলে যাওয়ার সময় থেকে আফগানিস্তানজুড়ে তালেবানের দ্রুত অগ্রগতির ফলশ্রুতিতেই কাবুল কতদিন টিকে থাকতে পারবে তা নিয়ে নতুন এই মূল্যায়ন।
‘তবে অবশ্যম্ভাবীভাবে এমনটিই ঘটবে তা নয়’ জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, আফগান নিরাপত্তা বাহিনী আরও প্রতিরোধ গড়ে তুলে পরিস্থিতি উল্টেও দিতে পারে।
মঙ্গলবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) এক কর্মকর্তা বলেছেন, তালেবান এখন আফগানিস্তানের ৬৫ শতাংশ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এবং ১১ টি প্রাদেশিক রাজধানী দখলে নেওয়ার হুমকি সৃষ্টি করেছে।
পশ্চিমা এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, পর্বতে ঘেরা কাবুলে ঢোকার সব পথ দিয়েই গাদাগাদি করে চলাফেরা করছে বাসিন্দারা। বিভিন্ন জায়গাতেই সহিংসতা থেকে মানুষের পালানো কিংবা শহরে ঢোকা চলছে হরহামেশাই। এর মধ্যে তালেবান যোদ্ধারাও সেখানে ঢুকে পড়ছে কিনা তা বলা কঠিন।
“কূটনৈতিক কোয়ার্টারগুলোতে আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীদের ঢুকে পড়া নিয়ে মূলত আশঙ্কা আছে। তারা প্রথমেই এই কোয়ার্টারগুলোতে ঢুকে ভয় দেখানো, হামলা করা এবং সেখান থেকে সবার সরে যাওয়া নিশ্চিত করার সুযোগ নেবে,” বলেন তিনি।
তালেবান যোদ্ধারা বুধবার বাদাখশান প্রদেশের রাজধানী ফাইজাবাদ দখল করে আফগান সরকারের কপালে ভাঁজ ফেলে দিয়েছে। বাদাখশানের প্রাদেশিক কাউন্সিলের সদস্য জাওয়াদ মুজাদ্দি বলেন, ফাইজাবাদের পতনের মধ্য দিয়ে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পুরোটাই তালেবানের নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে।
তালেবানের এই অগ্রযাত্রা ঠেকাতে আফগান সরকার হিমশিম খাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে শহরটির প্রতিরোধকারী যোদ্ধাদের উজ্জীবিত করতে মাজার-ই-শরিফে গিয়েছেন প্রেসিডেন্ট গনি। সেখানে স্থানীয় প্রধান নেতাদের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।
ওদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিজেদের মাতৃভূমির জন্য লড়াই করতে আফগান নেতাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েও কোনো আক্ষেপ নেই বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
বাইডেন মঙ্গলবার হোয়াইট হাউজে সাংবাদিকদের বলেন, “আফগান নেতাদের একত্রিত হতে হবে। তাদের নিজেদের জন্য এবং দেশের জন্য লড়াই করতে হবে।” আফগানিস্তানের সরকারি বাহিনীর সদস্য সংখ্যা তালেবানের চেয়ে বেশি এবং তাদের যুদ্ধ করতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।