প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকায় মিয়ানমার জান্তা নেতা, ২০২৩ সালে নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি

মিয়ানমারের সামরিক শাসক মিন অং হ্লায়িং নবগঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। ২০২৩ সালে জরুরি অবস্থা তুলে নিয়ে ফের নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এ খবর জানিয়েছে।

>>রয়টার্স
Published : 1 August 2021, 02:45 PM
Updated : 1 August 2021, 02:45 PM

গত ১ ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সু চির বেসামরিক সরকারকে হটিয়ে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখলের ছয়মাস পর জান্তা নেতা হ্লায়িং রোববার এক বক্তব্যে এই ঘোষণা দিলেন।

তিনি বলেন, ভবিষ্যতে মিয়ানমার বিষয়ক আঞ্চলিক কোনও দূতের সঙ্গে তার প্রশাসন কাজ করতেও প্রস্তুত।

মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী সু চির বিরুদ্ধে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তার সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল সেনাবাহিনী।

এরপর সামরিক শাসক মিন অং হ্লায়িং হন স্টেট অ্যাডমিনস্ট্রেশন কাউন্সিলের (এসএসি) প্রধান। এই কাউন্সিলই অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে শাসন পরিচালনা করে এসেছে। এর জায়গায়ই এবার গঠন করা হয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার।

রাষ্ট্রীয় মায়াবতী টিভির খবরে বলা হয়েছে, “দেশের কর্তব্য দ্রুত, সহজে এবং কার্যকরভাবে পালনের জন্য স্টেট অ্যাডমিনস্ট্রেশন কাউন্সিলকে মিয়ানমারের তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপান্তরিত করা হয়েছে।”

ভাষণে মিন অং হ্লায়িং দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের প্রতিশ্রুতি পুনর্বক্ত করে বলেছেন, “২০২৩ সালের অগাস্ট নাগাদ আমরা দেশে জরুরি অবস্থা শেষ করব।”

ফেব্রুয়ারিতে সেনা অভ্যুত্থানের পরপরই জান্তা নেতারা একবছরের জন্য দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে দু’বছরের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

কিন্তু রোববার ২০২৩ সালের অগাস্টের কথা বলে জান্তা নেতা সেই সময়সীমা ছয়মাস বাড়ালেন বলেই বর্ণনা করা হয়েছে কয়েকটি স্থানীয় গণমাধ্যমে।

অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমার একের পর এক জান্তা বিরোধী বিক্ষোভ, অসহযোগ আন্দোলনে উত্তাল হয়েছে। কিন্তু জেনারেল মিন অং হ্লায়িং দেশের পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে দাবি করে অবাধ ও সুষ্ঠু বহুদলীয় নির্বাচন সফলভাবে অনুষ্ঠান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

পাশাপাশি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ান মনোনীত যে কোনও বিশেষ প্রতিনিধির সঙ্গে তার সরকার কাজ করতে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন হ্লায়িং।

মিয়ানমারে জান্তা ও বিরোধীদের মধ্যে আলোচনার পট প্রস্তুত করতে একজন বিশেষ প্রতিনিধি চূড়ান্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে আসিয়ান। এ লক্ষ্যে সোমবারেই বৈঠকে বসছেন আসিয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের ছয় মাসেও থামেনি জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ। এতে অচল হয়ে পড়েছে সরকারি ও বেসরকারি বহু খাত। শনিবারেও দেশটির রাস্তায় বিক্ষোভ হয়েছে। সেনাশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া মানুষের ওপর দমনাভিযান চালিয়ে আসছে জান্তা।

টিভিতে দেওয়া ভাষণে হ্লায়িং অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নেমে দেশে কোভিড-১৯ এর বিস্তার ঘটানোর জন্য জান্তাবিরোধীদের দোষারোপ করেছেন।