‘ইসরায়েলের বিধিনিষেধে’ বন্ধ হল গাজার পেপসি কারখানা

আমদানিতে ইসরায়েলের বিধিনিষেধের কারণে বোতলজাত কোমল পানীয় কোম্পানি পেপসি চলতি সপ্তাহে তাদের গাজার কারখানা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে বলে জানিয়েছেন এর স্বত্তাধিকারীরা।

>>রয়টার্স
Published : 22 June 2021, 12:54 PM
Updated : 22 June 2021, 12:54 PM

গত মাসে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের ১১ দিনের সংঘাতের সময় গাজায় আমদানিতে এই কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছিল।

হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি মোটামুটি কার্যকর থাকায় ইসরায়েল সোমবার গাজা থেকে সামান্য পরিমাণে পণ্য রপ্তানির অনুমতি দিলেও এখনও কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস ও সিরাপের মতো কাঁচামাল আমদানিতে কড়াকড়ি বহাল রেখেছে।

এ কাঁচামালগুলো পেপসি, সেভেন আপ এবং মিরিন্ডা সোডা উৎপাদনে প্রয়োজন- বলছেন, পেপসি গাজার হামাম আল-ইয়াজেজি।

“গতকাল আমাদের সব কাঁচামাল শেষ হয়ে যায় এবং দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের কারখানাটি বন্ধ করে দিতে হয়, বাড়ি পাঠিয়ে দিতে হয় আড়াইশ শ্রমিককে,” সোমবার এমনটাই বলেন তিনি।

গত মাসের সংঘাতের আগে পেপসি গাজাকে নিয়মিতই প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হত, জানান ইয়াজেজি।

এ প্রসঙ্গে মন্তব্য চাইলে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের শাখা সিওজিএটি বলেছে, “নিরাপত্তা সংক্রান্ত পরিস্থিতির কারণে, ইসরায়েল থেকে গাজা ভূখণ্ডে শিল্পের কাঁচামাল আমদানি সম্ভব হচ্ছে না।”

তবে ইসরায়েল গাজায় জ্বালানি, খাদ্য, ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামসহ বেশকিছু জিনিস আমদানির অনুমতি দিচ্ছে, বলেছে সিওজিএটি।

ইসরায়েল ও এর প্রতিবেশী মিশর গাজা সীমান্তে কড়া নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখে আসছে।

হামাসের হাতে যেন যুদ্ধাস্ত্র না পৌঁছায় এবং তারা যেন নিজেরাও স্থানীয়ভাবে অস্ত্র বানাতে না পারে তা নিশ্চিত করতে এই কড়াকড়ির দরকার আছে বলেও যুক্তি তাদের।

গাজা থেকে ছোড়া আগুনে বেলুনের পাল্টায় হামাসের স্থাপনায় ইসরায়েলি বিমান হামলার পর গত সপ্তাহে মিশর ও জাতিসংঘকে উত্তেজনা প্রশমনে মধ্যস্থতায়ও এগিয়ে আসতে হয়েছিল।

বেলুনের পাল্টায় ইসরায়েলি বিমান হামলা গত মাসের সংঘাতের পর যুদ্ধবিরতিকে চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিয়েছে।

ইসরায়েলের আমদানি সংক্রান্ত বিধিনিষেধ বহাল থাকলে গাজার আরও কারখানা বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।

গাজাভিত্তিক ইয়াজেজি কোমল পানীয় কোম্পানি ভূখণ্ডটির ভেতর সেভেন আপ ও অন্য ধরনের সোডা উৎপাদনের অধিকার পাওয়ার পর ১৯৬১ সাল থেকে পেপসি গাজার এ কারখানাটি ধারাবাহিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল।

প্রায় দেড় কোটি ডলার মূল্যের এ কারখানার পণ্য স্থানীয়ভাবে বিতরণ করা হয়। ৩ কোটি ডলার মূল্যের পৃথক আরেকটি শাখা দখলকৃত পশ্চিম তীরে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে; সেখানকার উৎপাদিত পণ্য পশ্চিম তীরের পাশাপাশি পূর্ব জেরুজালেমেও যায়।

রোববার বন্ধ করে দেওয়ার আগে কোম্পানিটির কর্মকর্তারা কারখানার যাত্রা শুরুর ৬০ বছর উদযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।  আর সোমবার লোকশূন্য কারখানার চারপাশে হাঁটার সময় হামাম আল-ইয়াজেজির চোখে দেখা যায় অশ্রু।

“এ বছর হওয়ার কথা ছিল অন্যরকম, উৎপাদন শুরুর ৬০ বছর উদযাপনের কথা ছিল। ওই বার্ষিকী করা থেকে বঞ্চিত হলাম আমরা,” কারখানা বন্ধ করে দেওয়াকে ‘বিপর্যয়কর’ অ্যাখ্যা দিয়ে এমনটাই বলেছেন এ স্বত্তাধিকারী।