শত কিলোমিটার পথ পেরিয়ে ভারতের বাঘ বাংলাদেশে

গতিবিধি পর্যবেক্ষণের জন্য সুন্দরবনের এক বাঘের গলায় রেডিও-কলার পরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। গত চার মাসে প্রায় ১০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে সেই বাঘ সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে পৌঁছেছে বলে মনে করছেন ভারতের বন কর্মকর্তারা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 June 2021, 04:58 PM
Updated : 8 June 2021, 04:43 AM

তবে ওই বাঘ নিয়ে বাংলাদেশে কোনো কর্মকর্তার বক্তব্য জানা যায়নি।

ভারতে সুন্দরবনের প্রধান বনরক্ষক ভি কে যাদবকে উদ্ধৃত করে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, পুরুষ ওই বাঘের গলায় গতবছর ডিসেম্বরের শেষ দিকে রেডিও কলার পরানো হয়েছিল। তাকে বাংলাদেশ অংশে পৌঁছাতে কয়েকটি নদী পার হতে হয়।

তিনি বলেন, “বসিরহাট রেঞ্জের অধীন হরিখালি ক্যাম্পের ঠিক বিপরীত দিকে হরিণভাঙ্গা জঙ্গলে বাঘটি ধরা পড়ার পর গত ২৭ ডিসেম্বর রেডিও কলার পরিয়ে সেটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। প্রথম কয়েকদিন বনের ভারতীয় অংশে ঘোরাফেরা করে সেটি বাংলাদেশ অংশের তালপট্টি দ্বীপের দিকে রওনা হয়।

“যাত্রাপথে বাঘটি ছোট হরিখালি, বড় হরিখালি এমনকি রাইমঙ্গল নদী পাড়ি দেয়। ২৭ ডিসেম্বর থেকে ১১ মে পর্যন্ত চার মাসের বেশি সময় পর সেটির রেডিও কলার থেকে সঙ্কেত পাঠানো বন্ধ হয়।”

যাদব বলেন, ওই সময়ে বাঘটি ভারতের সুন্দরবন অংশের হরিণভাঙ্গা ও খাতুয়াঝুরি এবং বাংলাদেশ অংশের তালপাট্টি দ্বীপ পাড়ি দেয়। বাঘটি বেশিরভাগ সময় সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশেই থাকে এবং লোকালয়ের খুব বেশি কাছাকাছি যায় না। ১১ মে বাঘটির রেকর্ড হওয়া সর্বশেষ অবস্থান ছিল বাংলাদেশের তালপট্টি।

এর আগে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে রেডিও-কলার পরানো একটি বাঘ দক্ষিণ ২৪ পরগনা ডিভিশন থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। সেটিও চার মাসের বেশি সময় ধরে ১০০ কিলোমিটারের বেশি পথ পাড়ি দিয়ে বঙ্গপোসাগর উপকূলে পৌঁছায়।

তারও আগে ভারত থেকে আরও পাঁচটি বাঘের গলায় রেডিও কলার বেঁধে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। সেগুলোর মধ্যে একটি বাংলাদেশের তালপট্টিতে চলে গিয়ে সেখানে স্থায়ীভাবে থেকে যায়।

১১ মে রেডিও কলার থেকে সিগন্যাল পাঠানো বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর কিভাবে তারা সেই বাঘটির অবস্থান বুঝতে পারলেন এমন প্রশ্নে ভি কে যাদব বলেন, “রেডিও-কলারটিতে এমন একটি সেন্সরও ছিল যেটি বাঘটি মারা গেলে সঙ্কেত পাঠাতে সক্ষম। কিন্তু তেমন কোনো সঙ্কেত আমরা পাইনি। বাঘটি নিরাপদ আছে এমন কোনো সঙ্কেতও পাইনি।

“হতে পারে রেডিও কলারটি বাঘের গলা থেকে কোনোভাবে খুলে গেছে অথবা সুন্দরবনের লবণাক্ত পানির কারণেও যন্ত্রটি নষ্টও হয়ে যেতে পারে।”