আলফার চেয়ে ডেল্টা ধরন প্রায় ৪০% বেশি সংক্রামক: ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী

যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের প্রথম শনাক্ত আলফা ধরনের (কেন্ট) চাইতে ভারতে প্রথম শনাক্ত ডেল্টা ধরন (বি১.৬১৭.২) প্রায় ৪০% বেশি সংক্রামক বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক।

>>রয়টার্স
Published : 6 June 2021, 02:30 PM
Updated : 6 June 2021, 02:30 PM

রোববার স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে একথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এটিই এখন পর্যন্ত আমার হাতে পৌঁছানো সর্বশেষ তথ্য।”

“তবে যারা টিকার দুই ডোজই নিয়েছেন তারা ভাইরাসের উভয় ধরনের বেলাতেই সমান সুরক্ষা পাবেন বলেই আমরা মনে করি”, বলেন হ্যানকক।

ইংল্যান্ডের জনস্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যানুযায়ী, যুক্তরাজ্যের জন্য এখন নতুন উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে ভারতে প্রথম শনাক্ত করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ডেল্টা।

ডেল্টা ধরন দেশটিতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এমনকী এ ধরনের কারণে যুক্তরাজ্যে মহামারীর তৃতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।

যুক্তরাজ্যে প্রথম শনাক্ত ভাইরাসের আলফা ধরনের (আগে নাম ছিল ‘কেন্ট ভেরিয়েন্ট’) কারণে গত জানুয়ারিতে দেশজুড়ে পুনরায় লকডাউন জারি করতে বাধ্য হয়েছিল সরকার।

রোগ সংক্রমণ বিস্তারের গতি বেশ কিছুটা কমে যাওয়ায় যুক্তরাজ্য সরকার ধীরে ধীরে বিধি নিষেধ শিথিল করতে শুরু করে। সেই সঙ্গে আগামী ২১ জুন দেশ থেকে করোনাভাইরাসের কারণে আরোপিত সব ধরনের বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পরিকল্পনাও করা হয়।

কিন্তু ডেল্টা ধরন যেভাবে দ্রুত সংক্রমণের বিস্তার ঘটাতে শুরু করেছে তাতে স্বাস্থ্য ও রোগ বিশেষজ্ঞরা সরকারকে সব বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার সময় পিছিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

হ্যানকক জানান, যুক্তরাজ্যের ‘দ্য গভার্নমেন্ট বডি অব সায়েন্টিফিক অ্যাডভাইসরস’ (এসএজিই) থেকে ডেল্টা ধরন আলফা ধরন থেকে ৪০% অধিক সংক্রামক বলে জানানো হয়েছে।

রোববার তিনি বিবিসি’কে বলেন, ‘‘ভাইরাসের ডেল্টা ধরন আগামী ২১ জুনের হিসাব-নিকাশ অনেক বেশি জটিল করে তুলেছে। আমি আরও এক সপ্তাহের তথ্য পর্যবেক্ষণ করব এবং তারপর সিদ্ধান্ত নেব।”

যদি পরিস্থিতির কারণে সত্যিই বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার সময় পিছিয়ে দিতে হয় তবে ‘সরকার অবশ্যই বিষয়টি বিবেচনা করে দেখবে’ বলেও জানান তিনি।

যারা কোভিড-১৯ টিকার দুইটি ডোজই নিয়েছেন তারা ডেল্টা ধরনের বিরুদ্ধে সুরক্ষিত থাকবেন বলে আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী।

পাবলিক হেল্থ ইংল্যান্ড থেকেও গত মাস বলা হয়েছিল, গবেষণায় দেখা গেছে, কেন্ট এবং ডেল্টা ভাইরাসের উভয় ধরনের ক্ষেত্রেই টিকার দুই ডোজ সমানভাবে কার্যকর।

এ বিষয়ে বিবিসি’কে হ্যানকক বলেন, ‘‘এ পর্যায়ে আমি যেসব বৈজ্ঞানিক উপদেশ পেয়েছি তার মধ্যে সেরাটা হল, টিকার একটি ডোজ ডেল্টা ধরনের বিরুদ্ধে তেমন একটা কার্যকর নয়, কিন্তু টিকার দুই ডোজ সেটির বিরুদ্ধে বেশ কার্যকর।

“এখনও যারা টিকার দুই ডোজ গ্রহণ করেছেন তাদের হাসপাতালে ভর্তির গ্রাফ সমান। টিকার দুই ডোজ নেওয়া খুব অল্প কয়েকজনকেই হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে।”

যুক্তরাজ্যে এখন পর্যন্ত দুই কোটি ৭০ লাখ মানুষ কোভিড-১৯ টিকার দুই ডোজই নিয়েছেন। যা দেশটির মোট প্রাপ্ত বয়স্কদের অর্ধেকের বেশি। টিকার এক ডোজ গ্রহণ করেছেন চার কোটির বেশি মানুষ।

যুক্তরাজ্য সরকার এখন শিশুদের করোনাভাইরাসের টিকার আওতায় আনার পরিকল্পনা করছে। এ বিষয়ে সরকার ‘ক্লিনিক্যাল পরামর্শ’ গ্রহণ করছে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘‘সরকার এখন ১২ বছরের বেশি বয়সের শিশুদের টিকার আওতায় আনা হবে কিনা যে বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ গ্রহণ করছে। বলা হচ্ছে, এই বয়সের শিশুরাই ভাইরাসের ডেল্টা ধরনের সংক্রমণের বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।”

“তবে তাদের বেলায় টিকা বাধ্যতামূলক করা হবে না।”