নিরাপদে সেনা প্রত্যাহার করতে আফগানিস্তানে মার্কিন যুদ্ধবিমান

আফগানিস্তান থেকে মার্কিন এবং কোয়ালিশন বাহিনীর সেনা নিরাপদে প্রত্যাহার করতে সেখানে বাড়তি সামরিক সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। পাঠানো হয়েছে বেশ কয়েকটি বোমারু ও জঙ্গিবিমান।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 May 2021, 01:03 PM
Updated : 7 May 2021, 02:26 PM

সেনাদের পাশাপাশি বেসামরিক ঠিকাদারদের সুরক্ষায় ভারি বোমারু বিমানও পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

আফগানিস্তানে প্রায় ২০ বছরের যুদ্ধের সমাপ্তি টেনে সেখান থেকে বাদবাকি সব সেনা সরিয়ে নিতে শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র এবং নেটো জোট।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সেনা প্রত্যাহারের সময়সীমা ১১ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করেছেন। কিন্ত সেনা প্রত্যাহার প্রক্রিয়া চলার মধ্যেই আফগানিস্তানে সহিংসতা বেড়েছে।

প্রতিশোধ হামলা হওয়ার আশঙ্কায় আফগান নিরাপত্তা বাহিনী উচ্চ সতর্কবস্থায় আছে। তালেবান গোষ্ঠী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, তারা আন্তর্জাতিক বাহিনীর ওপর হামলা বন্ধ রাখতে এখন আর চুক্তিবদ্ধ নেই।

গত বছর তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে তালেবানের চুক্তি অনুযায়ী, এবছরের ১ মে মাসের মধ্যে মার্কিন বাহিনীর আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল।

ওই সময় পর্যন্ত আন্তর্জাতিক বাহিনীর ওপর হামলা বন্ধ রেখেছিল তালেবান। এখন আবার আফগানিস্তানে দফায় দফায় তালেবান হামলা হচ্ছে।

এ পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ চেয়ারম্যান জেনারেল মার্ক মিলি জানিয়েছেন, আফগানিস্তান ছেড়ে যেতে থাকা আড়াই হাজার সেনা সদস্য এবং ১৬ হাজার বেসামরিক ঠিকাদারকে রক্ষায় সেখানে ছয়টি দীর্ঘ পাল্লার বি-৫২ বোমারু বিমান এবং ১২টি এফ-১৮ যুদ্ধবিমান মোতায়েন করা হয়েছে।

মিলি জানান, তালেবান জঙ্গিরা আফগান সরকারকে হামলার নিশানা করে প্রতিদিন ৮০ থেকে ১২০টি হামলা চালাচ্ছে। যদিও গত ১ মে’তে সেনা প্রত্যাহার শুরুর পর মার্কিন এবং কোয়ালিশন বাহিনীর ওপর কোনও হামলা হয়নি।

“সেনা প্রত্যাহার পরিকল্পনা মোতাবেকই চলছে” বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী অস্টিন।

কোনও শান্তি চুক্তি না হওয়ায় আফগান তালেবান এবং সরকারি বাহিনীর মধ্যে তুমুল লড়াইয়ের প্রেক্ষাপটেই শুরু হয়েছে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার। গত সপ্তাহে আফগানিস্তানের লোগার প্রদেশে পুল-ই-আলমে গাড়িবোমা হামলায় ৩০ জন নিহত এবং ১১০ জন আহত হয়েছে।

কিন্তু এই সহিংসতার প্রেক্ষাপটেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলছেন, সেনা প্রত্যাহারের যৌক্তিকতা আছে। কারণ, দেশটি আর বিদেশি জিহাদিদের ঘাঁটি হবে না এমন নিশ্চয়তা যুক্তরাষ্ট্র পেয়েছে।

আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আফগান গনিও বলেছেন, তার সরকারি বাহিনী জঙ্গি মোকবেলায় পুরোপুরি সক্ষম। তবে অনেকেই এতটা আশাবাদী নন। মার্কিন সেনা প্রত্যাহার আফগানিস্তানকে আবার তালেবান শাসনের সেই অন্ধকার দিনগুলোতে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে বলেই তারা মনে করেন।