অভ্যুত্থানকারীদের থামাতে জাতিসংঘকে ‘ব্যবস্থা নিতে’ অনুরোধ মিয়ানমারের দূতের

জাতিসংঘে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত কিয়াও মোয়ে তুন তার দেশে সামরিক অভ্যুত্থানকারীদের থামাতে প্রয়োজনীয় যে কোনো ব্যবস্থা নিতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Feb 2021, 04:52 AM
Updated : 27 Feb 2021, 04:52 AM

দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশটিতে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ দমনে পুলিশের কঠোর অবস্থানের মধ্যে শুক্রবার তার এ আহ্বান মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর ওপর চাপ আরও বাড়াবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

দেশটিতে চলতি মাসের শুরুতে সামরিক বাহিনী গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত এবং অং সান সু চি এবং তার দলের বেশিরভাগ নেতাকে আটক করে। এর প্রতিবাদে মিয়ানমারের বিভিন্ন শহরে লাখ লাখ মানুষের উপস্থিতি দেখা গেছে; পশ্চিমা দেশগুলো সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের নিন্দা জানিয়েছে, কয়েকটি দেশ এরই মধ্যে নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছে।

শনিবারও মিয়ানমারের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভের পরিকল্পনা রয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন।

বিক্ষোভ ঠেকাতে ইয়াংগনের বিভিন্ন অংশে বিপুল সংখ্যক পুলিশের উপস্থিতিও দেখা গেছে।

শুক্রবার মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত মোয়ে তুন সাধারণ পরিষদে দেওয়া বক্তৃতায় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে এবং দেশটির জনগণের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে জাতিসংঘের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। 

বার্মিজ ভাষায় শেষ কথাগুলো বলে মোয়ে তুন হাতের ৩ আঙ্গুল দেখিয়ে অভ্যুত্থানবিরোধীদের চিহ্নে পরিণত হওয়া ‘থ্রি ফিঙ্গার স্যালুট’ দেন।

“আমাদের চাওয়াই বিজয়ী হবে,” বলেন তিনি।

জাতিসংঘে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতের এ বক্তব্য প্রসঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে দেশটির সামরিক বাহিনীর কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

সাধারণ পরিষদে বক্তব্য দিয়ে মোয়ে তুন এরই মধ্যে বিক্ষোভকারীদের কাছে ‘নায়কে’ পরিণত হয়েছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো ভেসে যাচ্ছে একের পর এক প্রশংসা বার্তায়।

“জনগণ জিতবে আর ক্ষমতালোভী জান্তা হারবে,” ফেইসবুকে এমনটাই লিখেছেন  বিক্ষোভকারীদের অন্যতম নেতা ই থিনজার মং।

মিয়ানমার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত ক্রিস্টিনা শানার সাধারণ পরিষদকে ‘গণতন্ত্রের প্রতি সমর্থনের সম্মিলিত ও স্পষ্ট সংকেত’ দিতে এবং কোনো দেশ যেন মিয়ানমারের সামরিক জান্তাকে স্বীকৃতি না দেয় তা নিশ্চিত করতে বলেছেন।

চীনের দূত অভ্যুত্থানের সমালোচনা না করে মিয়ানমারের পরিস্থিতিকে দেশটির ‘অভ্যন্তরীণ ব্যাপার’ বলে অ্যাখ্যা দিয়েছেন। সংকট সমাধানে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ান যে কূটনৈতিক উদ্যোগ নিয়েছে তার প্রতি বেইজিংয়ের সমর্থনের কথাও জানিয়েছেন তিনি।

মিয়ানমারের বিক্ষোভকারীদের শঙ্কা, আসিয়ানের উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে তা দেশটির ক্ষমতাসীন জেনারেলদের অবস্থানকে শক্তিশালী করতে পারে।

সিঙ্গাপুর মিয়ানমারে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর পুলিশের অতিরিক্ত বলপ্রয়োগকে ‘অমার্জনীয়’ অ্যাখ্যা দিয়েছে।