পরমাণু চুক্তি: ইরানের সঙ্গে আলোচনায় রাজি যুক্তরাষ্ট্র

ছয় বছর আগে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তিতে ফেরা নিয়ে ইরানের সঙ্গে আলোচনায় বসতে আগ্রহের কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Feb 2021, 07:06 AM
Updated : 19 Feb 2021, 07:13 AM

বৃহস্পতিবার ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্রের এক যৌথ বিবৃতিতে ওয়াশিংটন তেহরানের সঙ্গে ‘কথা বলতে প্রস্তুত’ বলে জানানো হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনের সঙ্গে ইউরোপের ৩ দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের ভিডিও বৈঠক শেষে এ বিবৃতি আসে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

২০১৫ সালে ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে ইরানের হওয়া ওই জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) চুক্তিতে পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচিতে লাগাম টানার শর্তে তেহরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের আগের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প তিন বছর আগে চুক্তিটি থেকে ওয়াশিংটনকে বের করে আনেন এবং ইরানের ওপর আগের সব নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করেন। পরে তেহরানও চুক্তিতে তার জন্য রাখা শর্তের লংঘন শুরু করে।

জো বাইডেনের নতুন প্রশাসন এই পরমাণু চুক্তিতে ফেরার ব্যাপারে আগ্রহ ব্যক্ত করেছিল; বৃহস্পতিবার ৪ দেশের যৌথ বিবৃতিতেও ওই আগ্রহই ফুটে উঠেছে।

“জেসিপিওএ-তে যে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ইরান, তা যদি তারা কঠোরভাবে মেনে চলতে রাজি হয় তাহলে যুক্তরাষ্ট্রও তার প্রতিশ্রুতি মেনে চলতে রাজি এবং তারা এ বিষয়ে ইরানের সঙ্গে কথা বলতেও প্রস্তুত,” বলা হয়েছে ৪ দেশের বিবৃতিতে।

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ইরান বলেছে, পরমাণু চুক্তি বাঁচাতে যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকেই প্রথম পদক্ষেপ নিতে হবে।

“কূটতর্ক কিংবা ইরানের ওপর দায় চাপানোর চেয়ে ইউরোপের তিন দেশ বা ইইউ-র উচিত চুক্তিতে তাদের প্রতিশ্রুতিগুলো মেনে চলা এবং ট্রাম্প আমল থেকে চলে আসা ইরানের ওপর অর্থনৈতিক সন্ত্রাস বন্ধের দাবি জানানো। আমাদের পাল্টা ব্যবস্থা ছিল ইউরোপের তিন দেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তি লংঘনের প্রতিক্রিয়া। এতে যদি আপনারা ভয় পান তাহলে এর (প্রতিক্রিয়া) পেছনের কারণগুলো প্রত্যাহার করুন। আমরা আপনাদের ব্যবস্থা অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া দেখাবো,” টুইটারে এমনটাই বলেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভাদ জারিফ।

ট্রাম্প ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রকে ওই পরমাণু চুক্তি থেকে সরিয়ে নেন; এর পাল্টায় ২০১৯ সাল থেকে ইরানও চুক্তিতে তাদের জন্য থাকা শর্তের লংঘন শুরু করে।

চুক্তিতে থাকা ইউরোপের তিন দেশ এবং রাশিয়া ও চীন চুক্তিটি বাঁচাতে নানান উদ্যোগ নিলেও ওয়াশিংটনের অনাগ্রহে কার্যত সেগুলো ব্যর্থ হয়ে যায়। নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাইডেন জেতার পর ইরান পরমাণু চুক্তি নিয়ে নতুন আশার সঞ্চার হয়।

ইউরোপের কোনো দেশ যদি চুক্তি নিয়ে ইরান ও ছয় বিশ্বশক্তির মধ্যে আলোচনার উদ্যোগ নেয় তাহলে ওয়াশিংটন তাতে সাড়া দেবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন বাইডেন প্রশাসনের এক কর্মকর্তা।

“এ ধরনের কোনো বৈঠক হলে আমরা সেখানে যেতে প্রস্তুত,” বলেছেন তিনি।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও ইরান পরমাণু চুক্তি নিয়ে এ ধরনের একটি বৈঠকের সম্ভাবনার কথা বলেছিলেন। তবে এ সংক্রান্ত আদৌ কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কিনা, কিংবা বৈঠক হলে তা কবে, কখন হবে সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।