উহানে কোয়ারেন্টিন শেষে মাঠ পর্যায়ের তদন্তে ডব্লিউএইচওর দল

করোনাভাইরাসের উৎস নিয়ে চীনে তদন্ত করতে যাওয়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বিশেষজ্ঞ দলের সদস্যরা ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন শেষে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করতে যাচ্ছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Jan 2021, 08:16 AM
Updated : 28 Jan 2021, 08:16 AM

চীনের উহানে পৌঁছানোর দুই সপ্তাহ পর বৃহস্পতিবার তাদের কোয়ারেন্টিন হোটেল ছাড়ার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানেই ২০১৯ সালের অন্তিম লগ্নে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের আবির্ভাবের কথা প্রথম জানা যায়।

তদন্তকারী দলের সদস্যদের প্রবেশাধিকার নিয়ে উদ্বেগ এবং চীন-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কথার লড়াইয়ের কারণে ডব্লিউএইচওর নেতৃত্বাধীন এ দলের মিশন শুরু করতে এমনিতেই বেশ খানিকটা দেরি হয়ে গেছে।

ওয়াশিংটন অনেকদিন ধরেই বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে করোনাভাইরাসের প্রাথমিক প্রাদুর্ভাবের তীব্রতা লুকিয়ে রাখার অভিযোগ করে যাচ্ছে। চীনা বিশেষজ্ঞদের হাতেই প্রথম দফার গবেষণা হতে হবে, তদন্তকারী দলের সফরের ক্ষেত্রে চীনের এমন শর্ত নিয়েও আপত্তি আছে তাদের।

“আমার জিম ও অফিস, যেখানে আমি দুই সপ্তাহ ধরে আছি, তাকে বিদায় জানাতে খানিকটা কষ্টই হচ্ছে। ডব্লিউএইচও মিশনের দল এবং চীনা কর্মকর্তাদের নিয়ে পরবর্তী পর্যায়ের কাজ শুরু হচ্ছে,” নিজের হোটেল কক্ষের ডেস্ক ও ব্যায়ামের সরঞ্জামের ছবি দিয়ে টুইটারে এমনটাই লিখেছেন তদন্তকারী দলের সদস্য পিটার দাসজাক।

কোয়ারেন্টিনে থাকার সময় তদন্তকারী দলটির সদস্যরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কাজ করেছেন। দলটির নেতৃত্বে আছেন ‘এক প্রজাতি থেকে আরেক প্রজাতিতে যেতে সক্ষম’ এমন রোগ বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার শীর্ষ বিশেষজ্ঞ পিটার বেন এমবারেক।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এ বিশেষজ্ঞ দলটি আরও অন্তত দুই সপ্তাহ চীনে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এখনি তদন্ত নিয়ে ব্যাপক আশাবাদী না হওয়ার অনুরোধও জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

“জবাব মিলবেই এর কোনো নিশ্চয়তা নেই। উৎস সম্বন্ধে নিশ্চিত হওয়া খুবই কঠিন কাজ,” চলতি মাসের শুরুতে সাংবাদিকদের এমনটাই বলেছেন ডব্লিউএইচওর জরুরি বিভাগের প্রধান মাইক রায়ান।

কোভিড-১৯ এর উৎস নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুমুল রাজনীতিও চলছে।

তদন্তকারী এ দলটির চীনের উহানে পৌঁছানোর কথা ছিল জানুয়ারির প্রথম দিকে। দলটির সদস্যদের চীনে পৌঁছাতে দেরি হওয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান জনসম্মুখে বেইজিংয়ের সমালোচনা করেছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সদ্য বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প মহামারীর শুরুর দিকে বৈশ্বিক এ সংস্থাটিকে ‘চীনঘেঁষা’ বলে অভিহিত করেছিলেন।

উহানে আবির্ভূত হওয়ার আগে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটি অন্য দেশ থেকে চীনে এসেছে, বেইজিং এমন ভাষ্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আমদানি করা হিমায়িত খাবারের প্যাকেটে ভাইরাসটির উপস্থিতি পাওয়া গেছে বলে দাবি করছে। ভাইরাসটি ২০১৯ সালে ইউরোপজুড়ে ছড়িয়েছিল বলে বেশকিছু বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্রও বলছে।

২০১৯ সালের জুলাইয়ে মেরিল্যান্ডের ফোর্ট ডেট্রিকে হুট করে বন্ধ হওয়া মার্কিন সেনাবাহিনীর গবেষণাগারের সঙ্গে কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবের সম্পর্ক থাকতে পারে বলে বেশ কয়েকবার ইঙ্গিতে এমন সন্দেহের কথাও জানিয়েছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।