নির্বাচনের মাত্র দুই মাস বাকি থাকতে শুক্রবার হেগে মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডাকেন প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুত্তে। সেখানে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হলে প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে নেদারল্যান্ডসের রাজা উইলেম-অ্যালেক্সান্ডারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন।
বিবিসির খবরে বলা হয়, ২০১২ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার পরিবারের বিরুদ্ধে শিশু কল্যাণ তহবিলের সহায়তা নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতারণা বা জালিয়াতির অভিযোগ আনেন নেদারল্যান্ডসের কর কর্মকর্তারা।
সেসব পরিবারকে সহায়তার অর্থ ফেরত দিতে বাধ্য করা হয়। ফলে বহু পরিবার নিদারুণ আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে পড়ে যায়। বহু পরিবারকে তাদের ঘর হারাতে হয়, এমনকি বিবাহ বিচ্ছেদের মত ঘটনাও ঘটে।
পরে দেখা যায়, ঠিক জায়গায় সই না থাকা বা ফরম পূরণের ক্ষেত্রে ছোটখাটো ভুলের জন্যও অনেক পরিবারের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়েছে। এসব পরিবারের একটি অংশ আবার অভিবাসী।
নেদারল্যান্ডসের কর কর্মকর্তারা গতবছর প্রথমবারের মত স্বীকার করে নেন যে, শুধুমাত্র দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকার কারণেই বহু পরিবারের ক্ষেত্রে বাড়তি তদন্ত চালিয়েছিলেন তারা।
এ বিষয়ে একটি সংসদীয় প্রতিবেদনে বলা হয়, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে হাজার হাজার ইউরো আদায় করার মাধ্যমে এসব পরিবারের সঙ্গে ‘নজিরবিহীন অবিচার’ করা হয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব পরিবারকে নিরাপত্তাহীনতার দিকে ঠেলে দিয়ে কর কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ আর বিচারক যে ভুল করেছেন তার ‘তুলনা চলে না’।
পদত্যাগের সিদ্ধান্ত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুত্তে সাংবাদিকদের বলেন, নিরপরাধ মানুষকে অপরাধী বানানো হয়েছে, তাদের জীবন ধ্বংস হয়ে গেছে। যা কিছু ঘটেছে তার দায় মন্ত্রিসভার ওপরও বর্তায়।
এমন এক সময় নেদারল্যান্ডসের সরকার পদত্যাগের এই সিদ্ধান্ত নিল যখন করোনাভাইরাসের মহামারীর মধ্যে এমনিতেই কঠিন সময় পার করতে হচ্ছে।
তবে মার্ক রুত্তে বলেছেন, আগামী ১৭ মার্চ পার্লামেন্ট নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সরকার না আসা পর্যন্ত তার মন্ত্রিসভা অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্ব চালিয়ে যাবে।
অবশ্য নেদারল্যান্ডেসের অর্থমন্ত্রী এরিক উইবেস এই কেলেঙ্কারিতে তার দপ্তরের দায় নিয়ে তার মন্ত্রিসভা থেকেও পদত্যাগ করেছেন।