ক্যাপিটলে সহিংসতা: ছবি ভাইরাল হয়ে যাওয়া ২ ট্রাম্প সমর্থক গ্রেপ্তার

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল ভবনে নজিরবিহীন সহিংসতায় অংশ নেওয়া আরও ২ বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তারের কথা নিশ্চিত করেছেন দেশটির কেন্দ্রীয় বাহিনীর কর্মকর্তারা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Jan 2021, 12:46 PM
Updated : 10 Jan 2021, 12:46 PM

গ্রেপ্তার এ দুই বিক্ষোভকারীর ছবি সহিংসতার দিন থেকেই অনলাইনে ঘুরছিল। এদের মধ্যে একজন কংগ্রেস ভবনে ঢুকে প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকারের লেকটার্ন তুলে নিয়েছিলেন; অন্যজন মাথায় পরেছিলেন শিং ও পশমযুক্ত চামড়ার বস্ত্র।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বুধবারের তাণ্ডব সংক্রান্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কনটেন্ট সংরক্ষণে মোবাইল ক্যারিয়ারগুলোর প্রতি ডেমোক্র্যাট এক শীর্ষ আইনপ্রণেতার আহ্বানের দিনই ছবি ভাইরাল হয়ে পড়া এই ২ বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তারের খবর মিলল। 

ক্যাপিটলে ওই নজিরবিহীন হামলা, ভাংচুরের ঘটনায় এরই মধ্যে কয়েক ডজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়েছে। অনলাইনে দাঙ্গার অসংখ্য ছবি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা-এফবিআই সহিংসতায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের শনাক্তে জনসাধারণের সহায়তাও চেয়েছে।

বুধবার কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের জয়ের স্বীকৃতির প্রক্রিয়া চলাকালে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের উগ্র সমর্থকরা ক্যাপিটলে হামলা চালায়। তাদের হামলায় অধিবেশন বিঘ্নিত হয়; কংগ্রেস সদস্যদের সরিয়ে নেওয়া হয় নিরাপদ স্থানে।

পুলিশ ট্রাম্প সমর্থকদের সরাতে গেলে বাধে সংঘর্ষ, যা এক পুলিশ সদস্যসহ ৫ জনের প্রাণ কেড়ে নেয়।

সহিংসতার দিনই জ্যাকব অ্যান্থনি চ্যান্সলের ছবি ভাইরাল হয়ে যায়; যেখানে তাকে মাথায় শিং ও পশমযুক্ত চামড়ার বস্ত্র পরিহিত অবস্থায় দেখা গেছে। মুখে ছিল রঙ, হাতে যুক্তরাষ্ট্রের পতাকাশোভিত বর্শা। 

চ্যান্সলে নিজেই পুলিশের হাতে ধরা দিয়েছেন বলে জানিয়েছে মার্কিন বিচার বিভাগ।

তারা জানায়, জ্যাক অ্যানজেলি নামে পরিচিত চ্যান্সলে বৃহস্পতিবারই এফবিআইয়ের ওয়াশিংটন কার্যালয়ে ফোন করেন।

জ্যাকব বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ৬ জানুয়ারি ওয়াশিংটন ডিসিতে সব ‘দেশপ্রেমিককে’ যাওয়ার যে আহ্বান জানিয়েছিলেন তার পরই অ্যারিজোনার অন্য ‘দেশপ্রেমিকদের’ সঙ্গে দলবেঁধে রাজধানীতে আসেন তারা। কেন্দ্রীয় বাহিনীর কর্মকর্তারা অ্যাডাম ক্রিস্চিয়ান জনসন নামের আরেক বিক্ষোভকারীকেও গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। অনলাইনে ভাইরাল হওয়া বেশ কয়েকটি ছবিতে জনসনকে ন্যান্সি পোলোসির লেকটার্ন নিয়ে যাওয়ার সময় ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে হাসতে ও হাত নাড়তে দেখা গেছে।

ফ্লোরিডার বাসিন্দা জনসন বুধবার ক্যাপিটলের হলে তার ঘুরে বেড়ানো ফেইসবুকে লাইভও করেছিল বলে জানিয়েছে টাম্পা বে টাইমস। অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে ওই ভিডিওটি পরে সরিয়ে নেওয়া হয়। জনসনের সব পেইজও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

কয়েকদিনের মধ্যে সেনেটের গোয়েন্দা বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিতে যাওয়া ডেমোক্র্যাট মার্ক ওয়ার্নার শনিবার ১১টি মোবাইল ক্যারিয়ার ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোম্পানির প্রধান নির্বাহীকে লেখা এক চিঠিতে বুধবারের দাঙ্গা সংক্রান্ত ছবি-ভিডিওসহ সব ধরনের কনটেন্ট সংরক্ষণে আহ্বান জানিয়েছেন।

সহিংসতার সময় দাঙ্গাকারীরা যেভাবে তাদের কর্মকাণ্ড ও বার্তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছিল তার উপরও জোর দিয়েছেন এ ডেমোক্র্যাট সেনেটর।

গ্রেপ্তারের আগে চ্যান্সলে এনবিসি নিউজকে কিভাবে তারা ক্যাপিটলে হানা দিয়েছিলেন, আইনপ্রণেতাদের পালাতে বাধ্য করেছিলেন তা আগ্রহ সহকারে বর্ণনা করেছিলেন।

“সত্যিটা হচ্ছে, কার্যালয়ে একদল বিশ্বাসঘাতক আছে, যারা লাঞ্ছিত হয়ে, মুখে গ্যাস মাস্ক পরে নিজেদের ভূগর্ভস্থ বাঙ্কারে লুকাতে বাধ্য হয়েছিলেন। একে আমি বিজয় বলেই মনে করছি,” এনবিসিকে এমনটাই বলেছিলেন চ্যান্সলে।

বুধবারের আগেও তাকে ট্রাম্পের সমর্খনে অসংখ্য মিছিলে দেখা গেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো। তাকে ক্যাপিটলে জোর করে ঢোকা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগের মুখোমুখি হতে হবে।