‘ওয়েঞ্চ্যাং স্পেসক্র্যাফট লঞ্চ সাইট’- এ ঝৌ সর্বকনিষ্ঠ স্পেস কমান্ডার। তারপরও কাজে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য সবাই তাকে শ্রদ্ধাভরে ‘বিগ সিস্টার বা ‘বড় বোন' বলেই সম্বোধন করে।
চাঁদ থেকে নমুনা সংগ্রহ করতে গত ১ ডিসেম্বরে চাঁদের অদেখা পৃষ্ঠে নামে চীনের চ্যাং’ই-৫ মহাকাশযান। ৭ বছরের মধ্যে চাঁদে এটিই চীনের তৃতীয় সফল অভিযান।
এই অভিযানে রকেট কানেক্টর সিস্টেমের গুরুদায়িত্ব পালন করেছিলেন ঝৌ চেংয়িউ। চীনের স্যোশাল মিডিয়ায় এখন তিনি ভাইরাল।
বিবিসি জানায়, গত ২৩ নভেম্বর চ্যাং’ই-৫ এর সফল উৎক্ষেপণের পর এর পেছনে জড়িত অন্যতম নারী হিসাবে ঝৌ এর পরিচয় তুলে ধরেছিল চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।
এরপর থেকে চীনের ওয়েইবো সাইটে তাকে নিয়েই চর্চা চলছে। অল্প বয়সে ঝৌয়ের এমন সাফল্যের প্রশংসা করছেন চীনের সাধারণ নাগরিকরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার ‘অসাধারণ মেধা’র ভূয়সী প্রশংসা হচ্ছে। তাকে বলা হচ্ছে, চীনের ‘গর্ব’।
তবে চীনের গুইঝৌ প্রদেশের বাসিন্দা ঝৌ অবশ্য গণমাধ্যম কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের খ্যাতি নিয়ে তেমন উৎসাহিত নন। বরং গণমাধ্যম থেকে তার সাক্ষাৎকার নেওয়ার একাধিক অনুরোধ তিনি ফিরিয়ে দিয়েছেন। বলেছেন, খ্যাতিমান হতে গিয়ে কাজের ব্যাঘাত ঘটুক তা চান না তিনি।
চীনের এবারের চন্দ্রযানটি পাঠানো হয়েছে চাঁদের মাটি ও পাথর সংগ্রহ করে আনতে, যাতে চাঁদের গঠন সম্পর্কে আরও তথ্য জানতে পারেন বিজ্ঞানীরা।
এ অভিযান সফল হলে গত ৪০ বছরের বেশি সময়ের মধ্যে এটিই হবে চাঁদে এ ধরনের সফল কোনও অভিযান। আর যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত রাশিয়ার পর চাঁদের এই অভিযানে বিশ্বের তৃতীয় দেশ হিসাবে নাম লেখাবে চীন।
চীনে প্রতি বছরই চান্দ্র উৎসবে এই গল্প শোনানো হয়। তাই চীনারা চ্যাং’ই শব্দটার সঙ্গে সেই চাঁদের দেবীর রোমান্টিক প্রতিচ্ছবি খুঁজে ফেরে। আর সেদিক থেকেই চীনের এবারের চন্দ্রযান চ্যাং’ই মিশনে দৃঢ় এক নারী চরিত্রকে সামনে টেনে আনা হয়েছে; ঝৌ কে নিয়ে হইচই পড়ে গেছে চীনের রাষ্ট্রীয় গণোমাধ্যমগুলোতে।
তাছাড়া,চীন তাদের মূল ধারার পেশাগুলোতে পুরুষের প্রাধান্যের ধারা পরিবর্তন করে নারী নেতৃত্বের উদাহরণ তৈরিরও চেষ্টা করছে। গত নভেম্বরে নারী চিকিৎসা বিজ্ঞানী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের নারী মুখপাত্র নিয়ে প্রচার চালিয়েছে জাতীয় ‘গ্লোবাল টাইমস’ পত্রিকা।