ধসে পড়েছে আরেসিবো মানমন্দিরের বিখ্যাত রেডিও টেলিস্কোপ

কয়েক দশক ধরে জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত নানা আবিষ্কার ও অনুসন্ধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা পুয়ের্তো রিকোর সুপরিচিত বিশাল রেডিও টেলিস্কোপটি ধসে পড়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Dec 2020, 08:15 AM
Updated : 2 Dec 2020, 08:25 AM

মঙ্গলবার টেলিস্কোপটির যন্ত্রপাতিসম্বলিত ৯০০ টন ওজনের প্ল্যাটফর্মটি ৪৫০ ফুট নিচে প্রতিফলক ডিশের উপর আছড়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশন (এনএসএফ) । 

আরেসিবো মানমন্দিরের বিশাল এই টেলিস্কোপকে যে তারগুলো শূন্যে ঝুলন্ত অবস্থায় ধরে রেখেছিল, সেগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর নিরাপত্তাজনিত শঙ্কা থেকে কর্মকর্তারা টেলিস্কোপটি ভেঙে ফেলা উচিত বলে মন্তব্য করেছিলেন। তার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এটি ধসে পড়ল।

আরেসিবোর এই টেলিস্কোপটি বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম টেলিস্কোপ ছিল বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।

গত ৫৭ বছর ধরে এ টেলিস্কোপটি বিজ্ঞানের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছিল। জেমস বন্ডের ‘গোল্ডেন আই’সহ বেশকিছু হলিউডি চলচ্চিত্রেও এই আইকনিক টেলিস্কোপটি দেখানো হয়েছে।

টেলিস্কোপটি ধসে পড়ার ঘটনায় কারও হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে এনএসএফ।

মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৫৫ মিনিটের দিকের এ ধসের ঘটনায় প্রতিফলন ডিশ ও আশপাশের স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

টেলিস্কোপটির প্রতিফলক রেডিও ডিশটি ১০০০ ফুট চওড়া আর যন্ত্রপাতিসম্বলিত প্ল্যাটফর্মটি ডিশটি থেকে ৪৫০ ফুট উপরে ঝুলে ছিল। তিনটি টাওয়ারের সঙ্গে সংযুক্ত তার বা কেবল প্ল্যাটফর্মটিকে শূন্যে টেনে ধরে রেখেছিল।

প্ল্যাটফর্ম ধসে পড়ার ঘটনার বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে এনএসএফ।

বিবৃতিতে তারা বলেছে, “প্রাথমিক অনুসন্ধানে ইঙ্গিত মিলেছে, টেলিস্কোপটির তিনটি সাপোর্ট টাওয়ারেরই উপরের অংশ ভেঙ্গে গিয়েছিল। ৯০০ টন ওজনের ইনস্ট্রুমেন্ট প্ল্যাটফর্মটি ধসে পড়ার সময় টেলিস্কোপের সাপোর্ট কেবলগুলেও পড়ে যায়। কেবলগুলোর আঘাতে মানমন্দিরটির শিক্ষণ কেন্দ্রের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিক মূল্যায়নে মনে হচ্ছে।”

বিবিসি জানিয়েছে, চলতি বছরের অগাস্ট থেকেই যন্ত্রপাতিসম্বলিত প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে সংযুক্ত দুটি তার ছেঁড়া ছিল। তার ছিঁড়ে যাওয়ার কারণে কর্মকর্তারা ওই মানমন্দিরটির বন্ধ ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছিলেন। 

গত মাসে এক পর্যালোচনাতেও টেলিস্কোপটি যে কোনো সময় ধসে পড়তে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছিল। নির্মাণ শ্রমিকদের মারাত্মক ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেওয়া ছাড়া বিশাল এ স্থাপনাটি ঠিক করা সম্ভব হবে না বলেও ওই পর্যালোচনায় উঠে আসে।

কর্মকর্তারা পরে স্থাপনাটি ভেঙ্গে ফেলা উচিত বলে মত দেন। ওই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হওয়ার আগেই টেলিস্কোপটি ধসে পড়ল।