বিবিসি জানায়, গত শুক্রবার প্রকাশিত আন্তর্জাতিক শিশু বিষয়ক সংস্থা ‘সেভ দ্য চিলড্রেন’ এর এক প্রতিবেদনে ভয়াবহ এই তথ্য উঠে এসেছে।
এতে বলা হয়েছে, ২০০৫ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানে অন্তত ২৬ হাজার ২৫টি শিশু নিহত কিংবা বিকলাঙ্গ হয়ে পড়েছে।
‘সেভ দ্য চিলড্রেন’ বিশ্বের দাতা দেশগুলোর কাছে ওইসব শিশুদের ভবিষ্যত সুরক্ষিত করার আহ্বান জানিয়েছে।
যুদ্ধ বিধ্বস্ত আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা এবং ট্রাম্পের উদ্যোগে আফগান সরকার ও তালেবান প্রতিনিধিদের মধ্যে শান্তি আলোচনা শুরুর পর থেকেই দেশটিতে বিশেষ করে রাজধানী কাবুলে হামলা বেড়ে গেছে।
সেভ দ্য চিলড্রেন জানায়, শিশুদের জন্য বিশ্বে সবচেয়ে বিপজ্জনক ১১টি দেশের মধ্যে আফগানিস্তান অন্যতম। তার মধ্যে ২০১৯ সালে আফগানিস্তানেই সবচেয়ে বেশি শিশু নিহত বা বিকলাঙ্গ হয়েছে বলে জানায় জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক এই সংস্থা।
তাদের তথ্যমতে, গত বছর আফগানিস্তানে ৮৭৪টি শিশু নিহত এবং ২,২৭৫টি শিশু বিকলাঙ্গ হয়েছে। তাদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ ছেলে শিশু। এইশিশুরা মূলত সরকারি ও বিদ্রোহী বাহিনীর লড়াইয়ের মধ্যে পড়ে, বিস্ফোরণে, আত্মঘাতী হামলা বা আত্মঘাতী নয় এমন হামলায় নিহত হয়েছে।
আফগানিস্তানে স্কুলগুলোতে হামলা প্রায় নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। সেভ দ্য চিলড্রেন জানায়, ২০১৭ সাল থেকে ২০১৯ সালে দেশটিতে তিন শতাধিক স্কুলে হামলা হয়েছে।
আফগানিস্তানে সেভ দ্য চিলড্রেনের কান্ট্রি ডিরেক্টর ক্রিস নিয়ামান্ডি বলেন, ‘‘এবার কল্পনা করুন তো ওইসব বাবা-মায়ের কথা; যাদের প্রতিদিন এই আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয় যে, আজই হয়ত কোনও আত্মঘাতী হামলা বা বিমান হামলায় তার শিশু সন্তান মারা যেতে পারে। এটাই আফগানিস্তানের হাজারো পরিবারের ভয়ঙ্কর বাস্তবতা। যাদের সন্তানরা কোনও হামলায় নিহত বা বিকলাঙ্গ হয়ে পড়েছে।”
সোমবার জেনেভায় ‘আফগানিস্তান কনফারেন্স ২০২০’ শুরু হওয়ার কথা। যেখানে আন্তর্জাতিক দাতা দেশগুলোর প্রতিনিধিরা বৈঠক করবেন।
এ বৈঠকের আগে সেভ দ্য চিলড্রেন দাতাদের আফগানিস্তানের শিশুদের ভবিষ্যত সুরক্ষায় আরও উদ্যোগ গ্রহণ এবং মানবিক সহায়তার জন্য তহবিল বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে।