কোভিড-১৯: বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ইতালিজুড়ে

কোভিড-১৯ সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের লাগাম টেনে ধরতে দেওয়া নতুন বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে ইতালিজুড়ে সহিংস বিক্ষোভ দেখা গেছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Oct 2020, 09:57 AM
Updated : 27 Oct 2020, 09:58 AM

সোমবার দেশটির বেশ কয়েকটি বড় শহরে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

তুরিনে বিক্ষোভকারীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে পেট্রল বোমা ছুড়েছে; মিলানে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ব্যবহৃত হয়েছে কাঁদুনে গ্যাস। সহিংসতার খবর মিলেছে নেপলস থেকেও।

স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা থেকে রেস্তোরাঁ, জিম, বার ও সিনেমা হল বন্ধ রাখতে দেশটির সরকারের দেওয়া বিধিনিষেধগুলো কার্যকর হতেই ইতালির বিভিন্ন অংশে বিক্ষোভ শুরু হয়।

সংক্রমণ রুখতে লম্বার্দি ও পিয়েদমন্তের মতো অনেক অঞ্চলে রাত্রিকালীন কারফিউও জারি করা হয়েছে। মিলানের অবস্থান লম্বার্দিতে, আর পিয়েদমন্তে তুরিন।

রোম, জেনোয়া, পালেরমো ও ত্রিস্তের মতো ডজনখানেক শহরেও নতুন বিধিনিষিধের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবেলায় চলতি বছরের শুরুতেও জাতীয় পর্যায়ে লকডাউন দিয়েছিল ইতালি, সেবার দেশটির বাসিন্দারা ওই বিধিনিষেধ শান্তিপূর্ণভাবেই মেনে চলেছিল। কিন্তু এবার ফের বিধিনিষেধের ঘোষণা আসার পর থেকে অনেকেই এর বিরোধিতা করেছেন।

ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা এখনও প্রথম লকডাউনের ধাক্কাই সামলে উঠতে পারেননি, তার মধ্যে এ নতুন বিধিনিষেধ তাদেরকে দেউলিয়াও করে দিতে পারে।

সোমবার তুরিনের কেন্দ্রস্থলে বিভিন্ন বিলাসবহুল দোকানে লুটপাটের ঘটনাও ঘটেছে। দাঙ্গা পুলিশের কাঁদুনে গ্যাসের পাল্টায় বিক্ষোভকারীদের আতশবাজি ও আগুন জ্বালাতে দেখা গেছে।

মিলানের কেন্দ্রস্থলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় বিক্ষোভকারীরা ‘স্বাধীনতা, স্বাধীনতা, স্বাধীনতা’ স্লোগান দিয়েছেন। মিলান লম্বার্দি অঞ্চলের রাজধানী। সংক্রমণের প্রথম ঢেউয়ের সময় এ লম্বার্দি অঞ্চলই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

ইতালির সরকারের দেওয়া নতুন বিধিনিষেধে সন্ধ্যা ৬টা থেকে রেস্তোরাঁ, বার ও ক্যাফের ভেতর খাওয়ার ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে; তবে দোকানগুলো খোলা রাখা যাবে, ক্রেতারা মধ্যরাত পর্যন্ত খাবার নিয়ে যেতে পারবেন।

দোকানপাট ও বেশিরভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা যাবে। তবে খেলোয়াড়দের একজনের সঙ্গে আরেকজনের স্পর্শ লাগতে পারে এমন খেলাধুলায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

নতুন বিধিনিষেধগুলোর কারণে ইতালির হাই স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ৭৫ শতাংশ ক্লাসই শ্রেণিকক্ষের বদলে অনলাইনে হবে।  ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত এসব নিষেধাজ্ঞা বজায় থাকবে।

আঞ্চলিক সরকারগুলো সব ক্লাস দূরশিক্ষণ পদ্ধতিতে নিতে চাইলেও ইতালির শিক্ষামন্ত্রী লুসিয়া আজোলিনা এর বিরোধিতা করেন বলে জানিয়েছে ইতালির গণমাধ্যমগুলো।

দেশটির সরকার জনগণকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া নিজেদের এলাকা বা শহরের বাইরে না যেতে এবং সম্ভব হলে গণপরিবহন এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে।

“আমাদের ধারণা আমরা চলতি মাসে খানিকটা ভুগবো। তবে এই বিধিনিষেধগুলোর মাধ্যমে দাঁত কামড়ে পড়ে থাকতে পারলে আমরা ডিসেম্বরে ফের শ্বাস নিতে পারবো,” রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই বলেছিলেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জুসেপ্পে কন্তে।

আরও পড়ুন: