মগজ-খেকো জীবাণু: টেক্সাসে সাপ্লাইয়ের পানি নিয়ে সতর্কতা

পানি সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় প্রাণঘাতী মগজ-খেকো জীবাণুর উপস্থিতি পাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস রাজ্যের লেক জ্যাকসন শহর কর্তৃপক্ষ সাপ্লাইয়ের পানি ব্যবহার নিয়ে বাসিন্দাদের সতর্ক করেছে। 

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Sept 2020, 10:25 AM
Updated : 27 Sept 2020, 10:25 AM

বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় শহরটির পানি সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় ‘নেগ্লেরিয়া ফাওলারি’ নামের এ এককোষী প্রাণীর উপস্থিতি পাওয়া যায় বলে জানিয়েছে বিবিসি।

এ অ্যামিবাটি মস্তিষ্কে সংক্রমণ ঘটাতে সক্ষম, বেশিরভাগ সময়ই যা প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে।

মগজ-খেকো জীবাণুর এ সংক্রমণ যুক্তরাষ্ট্রে বেশ বিরল। ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত দেশটিতে মোট ৩৪ জনের মস্তিষ্কে এ ধরনের সংক্রমণের কথা জানা গেছে।

লেক জ্যাকসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা তাদের পানি সরবরাহ ব্যবস্থাপনা জীবাণুমুক্ত করছেন, তবে পুরোটা করতে কতদিন সময় লাগবে তা বলতে পারছেন না তারা।

শুক্রবার রাতে প্রথমে টেক্সাসের ৮টি এলাকার বাসিন্দাদেরকে টয়লেটে ফ্লাশ করা ছাড়া অন্য সব কাজে কলের পানি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়।

শনিবার ২৭ হাজার বাসিন্দার শহর লেক জ্যাকসন ছাড়া বাকি সব এলাকা থেকে ওই সতর্কতা তুলে নেওয়া হয়।

শহরটির কর্তৃপক্ষ পরে বাসিন্দাদেরকে কলের পানি ব্যবহার শুরু করতে বললেও খাওয়ার ক্ষেত্রে পানি ফুটিয়ে নিতে বলা হয়। গোসল করার সময় যেন কলের পানি কোনোভাবেই নাকের ভেতর প্রবেশ না করে, সে বিষয়ে সাবধান থাকারও পরামর্শ দেওয়া হয়।

শিশু, বয়স্ক ব্যক্তি এবং যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল তারাই এ জীবাণুর সংক্রমণের ক্ষেত্রে ‘সুনির্দিষ্টভাবে বেশি ঝুঁকিতে আছে’ বলেও সতর্ক করেছে শহর কর্তৃপক্ষ।

কর্মকর্তারা বলছেন, তারা পানি সরবরাহ ব্যবস্থাপনা জীবাণুমুক্ত করছেন; এরপর ওই পানি ব্যবহারের উপযুক্ত কিনা তা নিশ্চিত হতে ফের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে।

মগজ-খেকো জীবাণুর সংস্পর্শে এসে ছয় বছর বয়সী এক শিশু চলতি মাসের শুরুতে মারা যাওয়ার পর লেক জ্যাকসনের পানি সরবরাহ ব্যবস্থাপনা নিয়ে তদন্ত শুরু হয় বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন শহরটির ব্যবস্থাপক মোডেস্টো মুন্ডো।

বিবিসি জানিয়েছে, এককোষী ‘নেগ্লেরিয়া ফাওলারি’ মিঠা পানিতে প্রাকৃতিকভাবেই হয়; বিশ্বের সর্বত্রই এ অ্যামিবার দেখা মেলে। এটি সাধারণত নাকে প্রবেশ করা পানির মাধ্যমে মানুষের দেহে ঢুকে, পরে মস্তিষ্কে চলে যায়।

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন জানিয়েছে, এ মগজ-খেকো অ্যামিবার পাল্লায় পড়া মানুষজন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ‘মিঠা পানির উষ্ণ অঞ্চলে’ সাঁতার কাটতে গিয়েছিলেন।

মগজ-খেকো এ অ্যামিবা যে পানিতে আছে, সেটি গিলে ফেললে কোনো সমস্যা হবে না এবংএটি একজনের কাছ থেকে আরেকজনের শরীরে যেতে পারে না বলেও আশ্বস্ত করেছে সিডিসি।  

‘নেগ্লেরিয়া ফাওলারি’ কারণে আক্রান্ত ব্যক্তির জ্বর, মাথা ঘোরা, মাথা ব্যথা, বমি ও ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আক্রান্ত ব্যক্তি এক সপ্তাহের মধ্যেই মারা যান।

চলতি বছরের শুরুর দিকে ফ্লোরিডাতেও এ মগজ খেকো জীবাণুর সংস্পর্শে আসা এক ব্যক্তির সন্ধান মিলেছিল। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা সেসময় বাসিন্দাদেরকে কল বা অন্যান্য উৎস থেকে আসা পানি নাকের কাছ থেকে দূরে রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন।