মুখপাত্র কিরা ইয়ারমিশ নাভালনির রাশিয়ার ফেরার পরিকল্পনার বিষয়টি নিশ্চিত করে টুইটারে এক পোস্টে লিখেছেন, “অন্য কোনও বিকল্পের কথা কখনও ভাবা হয়নি।”
বেশ কিছুদিন কোমায় থাকা নাভালনির ভেন্টিলেটর সোমবার খুলে নেওয়া হয়েছে এবং তিনি কিছুক্ষণের জন্য নিজের বিছানা ছেড়ে দাঁড়াতে পেরেছিলেন বলে তার চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে ফক্স নিউজ।
মঙ্গলবার নাভালনি বার্লিনে হাসপাতালের বিছানায় বসা অবস্থায় নিজের একটি ছবি তার ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে পোস্ট করে রুশ ভাষায় লেখেন, ‘‘হাই, আমি নাভালনি। আপনাদের কথা খুব মনে পড়েছে। আমি এখনও খুব বেশি কিছু করতে পারছি না। তবে গতকাল সারাদিন আমি নিজে নিজেই শ্বাস নিতে পেরেছি।”
ওই ছবিতে তার স্ত্রী ইউলিয়া তাকে জড়িয়ে ধরে আছেন। সঙ্গে তার দুই সন্তান। ইন্সটাগ্রামে নাভালনির এই পোস্টের পরই তার রাশিয়ার ফেরার পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করা হয়।
মঙ্গলবার ‘দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস’ পত্রিকা এক জার্মান কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, নাভালনি এক জার্মান কৌঁসুলিকে বলেছেন, তিনি সুস্থ হয়ে ওঠা মাত্রই রাশিয়া ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। পরে নাভালনির মুখপাত্র টুইটারে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কড়া সমালোচক নাভালনি গত ২০ অগাস্ট রাশিয়ার একটি অভ্যন্তরীন ফ্লাইটে সাইবেরিয়ার তমস্ক থেকে রাজধানী মস্কো যাওয়ার পথে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার সমর্থকদের ধারণা, তমস্ক বিমানবন্দরে নাভালনি যে চা পান করেছিলেন তাতে আগেই বিষ মিশিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
অসুস্থ নাভালনিকে নিয়ে তার ফ্লাইট সাইবেরিয়ার ওমস্কে জরুরি অবতরণ করে। ওই শহরেই একটি হাসপাতালে তাকে প্রথম চিকিৎসা দেওয়া হয়।পরে কোমায় চলে যাওয়া নাভালনিকে চিকিৎসার জন্য জার্মানির বার্লিনে নেওয়া হয়।
জার্মানিতে বার্লিনের হাসপাতাল থেকেই প্রথম নাভালনিকে সভিয়েত আমলের বিষাক্ত রাসায়নিক নোভিচক দেওয়ার কথা জানানো হয়। বলা হয়, তারা পরীক্ষায় নাভালনির দেহে নোভিচক এর উপস্থিতি পেয়েছেন।
সুইডেন এবং ফ্রান্সের পরীক্ষাগারেও নাভালনিকে নোভিচক বিষ প্রয়োগের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানায় জার্মানি।
নাভালনিকে বিষপ্রয়োগে হত্যাচেষ্টার তীব্র সমালোচনা করে জার্মান সরকার রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইই্উ’র কঠোর ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছে।
রাশিয়া শুরু থেকেই বিষপ্রয়োগের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। তারা বলছে, নাভালনির দেহে বিষপ্রয়োগের কোনও প্রমাণ তারা দেখতে পায়নি।