লেবাননে সরকার পতনের আন্দোলনের ডাক

বন্দরে বিস্ফোরকের গুদামে বিধ্বংসী বিস্ফোরণ ঘিরে অশান্ত হয়ে ওঠা বৈরুতে সরকারের পতন ঘটাতে নিরবিচ্ছিন্ন আন্দোলনের ডাক উঠেছে।

>>রয়টার্স
Published : 9 August 2020, 12:49 PM
Updated : 9 August 2020, 12:49 PM

কয়েকজন লেবাননি রোববার নেতাদের পতন না ঘটা পর্যন্ত রাস্তায় রাস্তায় আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ডাক দিয়েছেন।

মঙ্গলবারের ভয়াবহ বিস্ফোরণের জন্য রাজনীতিবিদদের অবহেলাকে দায়ী করে বিক্ষোভকারীরা এরই মধ্যে সরকারের পদত্যাগের দাবি তুলেছে।

লেবাননের শীর্ষ খ্রীষ্টীয় এক যাজক বলেছেন, “শাসনের ধারা বদলাতে না পারলে মন্ত্রিসভার পদত্যাগ করা উচিত।”

বিস্ফোরণে ১৫৮ মানুষের মৃত্যু এবং ৬ হাজারের বেশি মানুষ আহত হওয়ার পর লেবানন সরকারের ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে রোববার পদত্যাগ করেছেন দেশটির তথ্যমন্ত্রী মানাল আব্দুল সামাদ।

এরপরই খ্রীষ্টীয় ওই যাজক তার বক্তব্যে বলেছেন, “একজন এমপি বা মন্ত্রীর পদত্যাগই যথেষ্ট নয়। সরকার দেশের পুনর্গঠনে সহায়তা করতে না পারলে সরকারের পদত্যাগ করা উচিত।”

সরকার পতনে নিরবিচ্ছিন্ন আন্দোলনের ডাক দিয়ে এক আইনজীবী বলেন, সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত মানুষের রাস্তাতেই থাকা উচিত; বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়া উচিত।

শনিবার লেবাননে সহিংস সরকারবিরোধী বিক্ষোভে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। গত অক্টোবরে সরকার ব্যবস্থায় দুর্নীতি, অপশাসন এবং অব্যাবস্থাপনার বিরুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নামার পর শনিবারের এ বিক্ষোভই দেশটিতে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ।

প্রায় ১০ হাজার মানুষ এদিন মার্টার্স স্কয়ারে সমবেত হয়ে বিক্ষোভ করেছে। সন্ধ্যার দিকে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় বিক্ষোভস্থল।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে হামলে পড়ে বিক্ষোভকারীরা। সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে একদল বিক্ষোভকারী মন্ত্রণালয়ের দখল নেয়। মন্ত্রণালয়কে ‘বিপ্লবের কেন্দ্র ’ ঘোষণা করে লেবাননের জনগণকে রাস্তায় নেমে এসে দুর্নীতিবাজের বিচারের দাবি তোলার আহ্বান জানানো হয়।

বৈরুতের বন্দরের গুদামে ২,৭৫০ টন বিস্ফোরক অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ছয়বছর ধরে অনিরাপদ অবস্থায় মজুদ করে রাখা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন লেবাননের প্রধানমন্ত্রী এবং প্রেসিডেন্ট।

বলা হচ্ছে, একারণেই ঘটেছে এতবড় বিস্ফোরণ। সরকার এর জন্য দায়ীদের জবাবদিহিতা এবং বিচারের আশ্বাসও দিয়েছে।

কিন্তু সরকারের ওপর আস্থা নেই লেবাননবাসীর। বিক্ষোভকারীদের কেউ কেউ বলেছেন, তারা চান জাতিসংঘ লেবাননের শাসনভার নিক।

বিস্ফোরণে ধসে পড়া একটি ফ্যাশন কোম্পানির ১০ তলা ভবনের ধ্বংসস্তুপের ওপর দাঁড়িয়ে ওই কোম্পানির ম্যানেজার বলেন, “দেখুন, এই ধ্বংসযজ্ঞ আমাদেরকে ৫০ বছর পেছনে নিয়ে গেছে। আমরা লেবাননে সংকটের পর সংকটে ভুগছি। এখন সরকারের পদত্যাগ করে যোগ্য মানুষদেরকে দেশ শাসন করতে দেওয়ার সময়।”