ফ্লয়েডের মৃত্যু: যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিক্ষোভ, ২৫ শহরে কারফিউ

মিনিয়াপোলিসে পুলিশের এক কর্মকর্তার হাতে জর্জ ফ্লয়েড নামের নিরস্ত্র এক কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির মৃত্যুর প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ৩০টি বড় শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে, অস্থিরতার মুখে ২৫টি শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 May 2020, 05:01 AM
Updated : 31 May 2020, 06:54 AM

ফ্লয়েডের মৃত্যুতে ফুঁসে ওঠা বিক্ষোভকারীরা শুক্রবারের পর শনিবারও রাস্তায় নেমে এসে বিক্ষোভ দেখায় বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে। 

যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূলের লস অ্যাঞ্জেলস থেকে পূর্ব উপকূলের মিয়ামি, উত্তরের শিকাগোসহ বিভিন্ন শহরের রাস্তায় নেমে আসা বিক্ষোভকারীরা ফ্লয়েডের শেষ বলা কথা ‘আমি শ্বাস নিতে পারছি না’-র প্রতিধ্বনি তুলে শ্লোগান দেয়। 

প্রথমে শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হলেও বিক্ষোভকারীরা এক পর্যায়ে সড়ক অবরোধ ও অগ্নিসংযোগ করে, তারপর দাঙ্গা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। কয়েকটি শহরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস ও রাবার বুলেট ব্যবহার করে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্রের ১৬টি রাজ্যের ২৫টি শহরে কারফিউ জারি করা হয়। শহরগুলোর মধ্যে বেভারলি হিলস, লস অ্যাঞ্জেলস, ডেনভার, মিয়ামি, আটলান্টা, শিকাগো, মিনিয়াপোলিস, ফিলাডেলফিয়া, কলম্বাস, সল্ট লেক সিটি, সিয়াটল উল্লেখযোগ্য। 

লস অ্যাঞ্জেলসে স্থানীয় সময় শনিবার রাত ৮টা থেকে রোববার ভোর সাড়ে ৫টা পর্যন্ত কারফিউ জারি হয়। এ সময় শহরটিতে থাকা সবাইকে ঘরে অবস্থান করতে বলা হয়।

গত সপ্তাহের সোমবার ফ্লয়েডের গাড়িতে জাল নোট থাকার খবর পেয়ে তাকে আটক করতে যায় পুলিশ। গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, সেখানে পুলিশের এক কর্মকর্তা ফ্লয়েডের ঘাড়ের উপর হাঁটু দিয়ে তাকে মাটিতে চেপে ধরেছেন।

সেসময় ফ্লয়েডকে ‘আমি শ্বাস নিতে পারছিনা’ বলতে শোনা যায়। অ্যাম্বুলেন্সে করে পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

৪৬ বছর বয়সী এ কৃষ্ণাঙ্গের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পরপরই মিনেসোটার রাজ্যের প্রধান শহর মিনিয়াপোলিসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। উত্তাল হয়ে ওঠা বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। বিক্ষোভকারীরা বেশ কয়েকটি ভবন ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে।

ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনায় মিনিয়াপোলিস পুলিশ বিভাগ তাদের চার কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্ত করে। এদের মধ্যে ফ্লয়েডের ঘাড়ে হাঁটু তুলে দেয়া ৪৪ বছর বয়সী ডেরেক শভিনও আছে।

শুক্রবার গ্রেপ্তার শভিনের বিরুদ্ধে ফ্লয়েডকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। সোমবার তাকে আদালতে হাজির করার কথা।

কিন্তু প্রতিবাদকারীরা এতে সন্তুষ্ট নয়। ফ্লয়েডের মৃত্যুর সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত চার পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধেই অভিযোগ আনার দাবি তুলেছে তারা। 

করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে কয়েক সপ্তাহ ধরে লকডাউনে থাকার পর শহরগুলোর রাস্তায় নেমে আসা শত শত বিক্ষোভকারীর দৃশ্য যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে সঙ্কট চলার ধারণা দিচ্ছে বলে মন্তব্য রয়টার্সের। করোনাভাইরাস সংক্রমণে দেশটির সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলো ব্যাপকভাবে আক্রান্ত হয়েছে ও মৃত্যুবরণ করেছে। লকডাউনের কারণে লাখ লাখ লোক চাকরি হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েছে।