ব্রাজিলের ছায়ায় থেকেও কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে সফল উরুগুয়ে

নতুন করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যায় ব্রাজিল বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষস্থানে থাকলেও প্রতিবেশী ছোট্ট দেশ উরুগুয়ে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সফল হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 May 2020, 10:45 AM
Updated : 28 May 2020, 10:45 AM

লাতিন আমেরিকা করোনভাইরাস সংক্রমণের নতুন উপকেন্দ্র হয়ে দাঁড়ানোর পরও ৩৫ লাখ জনসংখ্যার এ দেশটিতে শনাক্ত হওয়া আক্রান্তের সংখ্যা ৭৮৯ জন এবং মৃত্যুর সংখ্যা ২২।

লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে আক্রান্ত ও মৃত্যুর এ সংখ্যা অন্যতম সর্বনিম্ন বলে জানাচ্ছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। 

প্রতিবেশী ব্রাজিলে যেখানে প্রতি লাখে প্রায় ২০০ জন আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে সেখানে উরুগুয়েতে সংখ্যাটি ২৩ জনের মতো।

মার্চে প্রথম সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার পরপরই দ্রুত পদক্ষেপ নেয় উরুগুয়ে। স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টিন, সংক্রমণের ব্যাপক তদারকি ও অনুসরণ, যদৃচ্ছ পরীক্ষা্ এবং দেশের কোন কোন অংশে সংক্রমণ ছড়াতে পারে মডেল ব্যবহার করে তা পূর্বানুমানের মতো বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয় দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। 

২৩ মে থেকে দেশটিতে কোভিড-১৯ এ নতুন করে কারও মৃত্যু হয়নি। চলতি সপ্তাহের প্রথমদিকে পরিস্থিতিকে ‘তুলনামূলকভাবে নিয়ন্ত্রণে’ আছে বলে বর্ণনা করেছিলেন সরকারের উপদেষ্টা রাফয়েল রাদি।

দেশটি এখন অর্থনীতি ফের চালু করার জন্য বিধিনিষেধ শিথিল করার পদক্ষেপ নিয়েছে, ধাপে ধাপে স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

একই আকারের জনসংখ্যা ও কোভিড-১৯ এ মৃত্যুর সংখ্যায় মিল থাকায় অনেকেই দেশটিকে লাতিন আমেরিকার ‘নিউ জিল্যান্ড’ বলে অভিহিত করছে বলে রয়টার্স জানিয়েছে। 

ব্রাজিলের মতো প্রতিবেশী চিলি, পেরু, আর্জেন্টিনা ও বলিভিয়াও সংক্রমণের হার উরুগুয়ের চেয়ে অনেক বেশি। তবে আরেক প্রতিবেশী প্যারাগুয়ে সংক্রমণের হার উরুগুয়ের মতোই নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলেও তুলনামূলকভাবে সে জন্য তাদের অনেক কঠোর পদক্ষেপ নিতে হয়েছে, লকডাউন কার্যকর করতে সামরিক বাহিনীও ব্যবহার করতে হয়েছে।

দ্রুত প্রতিক্রিয়া, বলিষ্ঠ পদক্ষেপ এবং স্বাস্থ্য ও এপিডেমিওলজিক্যাল বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ক্রাইসিস কমিটি গঠনের মতো পদক্ষেপগুলোর কারণেই উরুগুরে এ সাফল্য পেয়েছে বলে মনে করেন প্যান আমেরিকান হেলথ অর্গানাইজেশনে উরুগুয়ের প্রতিনিধি জিওভান্নি এসকালান্তে।

কোভিড-১৯ রোগীদের জন্য ব্যবস্থা করা দেশটির ৬৫০টি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের শয্যার মধ্যে এখন হাতে গোনা কয়েকটিতে রোগী আছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

কিন্তু এই সাফল্যে ওপর আশঙ্কার ছায়া ফেলছে প্রতিবেশী ব্রাজিলের পরিস্থিতি। প্রায় ৪ লাখ ১২ হাজার রোগী নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের পর দ্বিতীয় শীর্ষস্থানে আছে দেশটি, যেখানে মৃত্যু হয়েছে সাড়ে ২৫ হাজারেরও বেশি লোকের। উরুগুয়ের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্ত এই ব্রাজিলের সঙ্গে।

ব্রাজিল সংলগ্ন সীমান্ত শহর রিভেরা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে দেখেছে এবং এখনো এই সীমান্ত খোলা আছে। এটি ‘একিলেসের গোড়ালি’ বা ‘দুর্বল পয়েন্ট’ হয়ে রয়েছে বলে আশঙ্কা উরুগুয়ের কর্মকর্তাদের, জানিয়েছেন সরকারি উপদেষ্টা রাদি। 

দক্ষিণ গোলার্ধের আসন্ন শীত ঋতুকেও দেশটির জন্য আরেকটি উদ্বেগ কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।