যুক্তরাষ্ট্র মাস্ক ‘কেড়ে নিয়েছে’, অভিযোগ জার্মানির

জার্মানির পথে থাকা দুই লাখ মাস্ক যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের ব্যবহারের জন্য জব্দ করেছে বলে অভিযোগ করেছে বার্লিন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 April 2020, 10:11 AM
Updated : 4 April 2020, 10:11 AM

এ ঘটনাকে ‘আধুনিক দস্যুতা’ বলেও অভিহিত করেছে তারা।

বার্লিনের স্থানীয় প্রশাসন বলছে, তাদের পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের জন্য আসা ওই মাস্কগুলো যুক্তরাষ্ট্রের একটি কোম্পানি বানিয়েছিল। পথিমধ্যে সিঙ্গাপুর থেকে সেগুলো ‘জব্দ করা হয়’; যে কারণে মাস্কগুলো আর নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছায়নি।

বিবিসি জানায়, মার্কিন কোম্পানির বানানো ওই এফএফপি ২ মাস্কগুলো শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রেই ফিরিয়ে নেয়া হয়েছে বলে বার্লিনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আন্দ্রেই গিসেল অভিযোগ করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি কোরিয়ান যুদ্ধের সময়কার একটি আইন সচল করে মার্কিন কোম্পানিগুলোকে নিজ দেশের চাহিদা অনুযায় মাস্ক, গ্লাভসসহ বিভিন্ন চিকিৎসা উপকরণ সরবরাহে নির্দেশ দিয়েছেন। ওই আইনের আওতায় জার্মানির পথে থাকা এ মাস্কগুলো ‘জব্দ’ করা হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

শুক্রবার হোয়াইট হাউসে করোনাভাইরাস টাস্ক ফোর্সের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ট্রাম্প জানান, তিনি ‘প্রতিরক্ষা উৎপাদন আইন’ সচল করে মার্কিন কোম্পানিগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রের চাহিদা মোতাবেক সুরক্ষা ও চিকিৎসা সরঞ্জাম বানাতে সর্বশক্তি প্রয়োগের জন্য বলেছেন।

“অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের জন্যই এই সামগ্রীগুলো শিগগির দরকার আমাদের; নিজেদের ব্যবহারের জন্যই দরকার,” বলেছেন তিনি।

মার্কিন কর্তৃপক্ষগুলো এরই মধ্যে প্রায় দুই লাখ এন৯৫ রেসপিরেটরস, এক লাখ ৩০ হাজার সার্জিক্যাল মাস্ক ও ৬ লাখ গ্লাভস সংগ্রহ করেছে, জানিয়েছেন ট্রাম্প। যদিও কী উপায়ে এ সুরক্ষা উপকরণগুলো যুক্তরাষ্ট্রের হাতে এসেছে তা বলেননি তিনি।

বার্লিনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী গিসেল বলেছেন, মাস্কগুলো যেভাবে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে নেয়া হয়েছে তা সুস্পষ্টভাবেই ‘আধুনিক দস্যুতার’ নজির। ট্রাম্প প্রশাসনকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতিগুলো অনুসরণ করারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

“এভাবে আপনি ট্রান্স-আটলান্টিকের অংশীদারদের সঙ্গে লেনদেন করতে পারেন না। বৈশ্বিক এ সংকটের সময় কোনো ধরনের বন্য-পশ্চিমা প্রক্রিয়া থাকা উচিত নয়,” বলেছেন তিনি।

জার্মানির পাশাপাশি কানাডা এবং ইউরোপের অনেক দেশও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সুরক্ষা ও চিকিৎসা উপকরণ জোর করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ এনেছে। ওয়াশিংটন কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেশি দাম দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অংশীদারদের ক্রয়াদেশ বাতিল করে নিজেরা জরুরি সেসব পণ্য হাতিয়ে নিচ্ছে বলেও অভিযোগ তাদের।

ফ্রান্সের আঞ্চলিক নেতারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতাদের টপকে সুরক্ষা ও চিকিৎসা সরঞ্জাম কিনতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে তাদের।

মাস্কের জন্য এ প্রতিযোগিতাকে ‘গুপ্তধন খোঁজার’ সঙ্গে তুলনা করেছেন ইলে-দে-ফ্রান্স অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট ভ্যালেরি পেক্রেস।

“আমি এক জায়গায় মাস্ক পেয়েছিলাম, কিন্তু মার্কিনিরা (ট্রাম্প প্রশাসন নয়) আমাদের হটিয়ে দিল। তারা তিনগুণ দাম দিতে চাইল এবং প্রয়োজনে মূল্য আগে পরিশোধের প্রস্তাব দিয়ে বসলো,” বলেছেন তিনি।