দিল্লির বিচারপতি মুরলিধরের বদলি নিয়ে বিতর্ক

ভারতের রাজধানীতে সহিংসতার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্য সরকার ও দিল্লি পুলিশকে কড়া ভাষায় তিরস্কার করা দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি এস মুরালিধরকে রাতারাতি বদলি করা নিয়ে তুমুল রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Feb 2020, 01:59 PM
Updated : 27 Feb 2020, 02:51 PM

দিল্লির সহিংসতা বিক্ষুব্ধ পরিস্থিতিতে মুরলিধর পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় এবং সহিংসতায় উস্কানি দেওয়ার জন্য দায়ী নেতাদের বিরুদ্ধে সরকারকে এফআইআর করতে বলাতেই রাতারাতি তাকে এ বদলির নির্দেশ কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিরোধী নেতারা।

এনডিটিভি জানায়, বিষয়টি নিয়ে বিতর্কের মধ্যে সরকার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এ বদলির সিদ্ধান্ত সুষ্ঠু প্রক্রিয়ার মধ্যেই নেওয়া হয়েছে এবং এর জন্য বিচারপতির অনুমতিও নেওয়া হয়েছিল। আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ টুইট করে কংগ্রেসের সমালোচনা করেছেন একটি নিয়মমাফিক বদলির ঘটনাকে ‌নিয়ে রাজনীতি করার জন্য। তিনি জানান,গত ১২ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়াম তার বদলির প্রস্তাব দিয়েছিল।

বিচারপতি মুরলিধরের বদলির বিজ্ঞপ্তি বুধবার রাতে ইস্যু করে কেন্দ্রীয় সরকার। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আলোচনা করে রাষ্ট্রপতি বিচারপতি মুরলিধরকে পঞ্জাব ও হরিয়ানা কোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত করা হল। তবে বিজ্ঞপ্তিতে বদলির জন্য কোনও নির্দিষ্ট সময় দেওয়া হয়নি মুরলিধরকে। যদিও সাধারণত এর জন্য ১৪ দিন সময় দেওয়া হয়।

এরপরই বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। দিল্লির সাম্প্রতিক পরিস্থিতি আর এ বদলির নির্দেশকে কাকতালীয় মনে করছেন না রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর মতো কংগ্রেস নেতারা।

প্রিয়াঙ্কা টুইট করে বিচারপতির বদলির সমালোচনা করেছেন। তিনি লেখেন, এ বদলির নির্দেশ এ মুহূর্তে ততটা ‘শকিং' নয়। কিন্তু এটি দুঃখজনক ও লজ্জাজনক। তার মতে, এ ঘটনা সরকারের পক্ষ থেকে বিচারব্যবস্থার মুখে লাগাম পরানোর সামিল। এতে বিচারব্যবস্থার ওপর জনগণের আস্থা নষ্ট হবে।

ওদিকে, রাহুল গান্ধী তার টুইটে সুপ্রিম কোর্টের একসময়কার বিচারপতি ব্রিজগোপাল হরকিষেন লোয়ার প্রসঙ্গ তোলেন। ২০১৪ সালে মারা গিয়েছিলেন লোয়া। তিনি সে সময় গুজরাটের সোহরাবুদ্দিন শেখের হত্যা সংক্রান্ত তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন। ওই মামলায় অমিত শাহ ছিলেন অন্যতম অভিযুক্ত। ফলে লোয়ার মৃত্যু নিয়ে তখন বিপুল বিতর্ক হয়েছিল। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট লোয়ার মৃত্যুকে ‘স্বাভাবিক’ বলে রায় দিলেও জনমনে তার মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গিয়েছিল।

আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ রাহুলের টুইটের সমালোচনা করে লিখেছেন, “ওই মামলার বিচার সুপ্রিম কোর্টে হয়েছিল। যারা প্রশ্ন তুলছেন তারা বিচার ব্যবস্থাকে সম্মান করেন না।” রাহুল গান্ধী নিজেকে সুপ্রিম কোর্টের ঊর্ধ্বে মনে করেন কিনা সে প্রশ্ন তোলেন তিনি।