করোনাভাইরাস: ৬ দিনে হাজার শয্যার হাসপাতাল বানাবে চীন

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি ও সন্দেহভাজনদের চিকিৎসার জন্য উহানে ছয়দিনের মধ্যে একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল বানানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে চীন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Jan 2020, 10:04 AM
Updated : 26 Jan 2020, 10:14 AM

নতুন, নিউমোনিয়া সদৃশ ভাইরাসটিতে দেশটিতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এক হাজার ৯৭৫ জনের আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে, মারা গেছে ৫৬ জন।

এক কোটি ১০ লাখ বাসিন্দার শহর উহান থেকেই ভাইরাসটি ছড়িয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শহরটির হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে উৎকণ্ঠিত বাসিন্দাদের অস্বাভাবিক ভিড়; ফার্মেসিগুলোতে দেখা দিয়েছে ওষুধের সংকট।

এরকম পরিস্থিতিতেই চীন উহানে বিশেষায়িত ওই হাসপাতালটি বানানো সিদ্ধান্ত নিয়েছে; নতুন এ হাসপাতালটি প্রায় এক হাজার শয্যাবিশিষ্ট হবে বলে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে। 

হাসপাতালটি ২৫ হাজার বর্গমিটার জায়গাজুড়ে হবে; খনন কর্মীরা এরই মধ্যে স্থানটিতে পৌঁছে গেছে বলে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে সম্প্রচারিত ভিডিওতে দেখানো হয়েছে।

সার্স ভাইরাস মোকাবেলায় ২০০৩ সালে চীন বেইজিংয়ে সাত দিনে একটি হাসপাতাল বানিয়েছিল; উহানের নতুন হাসপাতালটি ওই আদলেই হবে।

“এটি আসলে একটি বিশেষায়িত আলাদা হাসপাতাল, যেখানে আক্রান্তদের পাঠানো হবে। নিরাপত্তা এবং সুরক্ষার সব ব্যবস্থা সেখানে থাকবে,” বলেছেন হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের গ্লোবাল হেলথ অ্যান্ড সোশাল মেডিসিনের প্রভাষক জোয়ান কফম্যান।

“এ ধরনের বিরাট বিরাট প্রকল্প দ্রুতগতিতে সম্পন্ন করার রেকর্ড চীনের আছে,” বলেছেন নিউ ইয়র্কভিত্তিক থিঙ্কট্যাঙ্ক কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনসের বিশ্ব স্বাস্থ্য বিষয়ক জ্যেষ্ঠ ফেলো ইয়ানঝং হুয়াং।

সার্স মহামারির সময় বেইজিংয়ে সাত দিনে হাসপাতাল নির্মাণের দিকে ইঙ্গিত করে এ বিশেষজ্ঞ জানান, উহানে হাসপাতালে নির্মাণে কর্মরতরা সম্ভবতা এবার দেড় যুগ আগের রেকর্ডটাই ভাঙতে চেষ্টা করবেন।

“টপ ডাউন মবিলাইজেশন পদ্ধতির উপর কর্তৃত্ববাদী এ দেশটি নির্ভর করে। আমলাতন্ত্র, আর্থিক সীমাবদ্ধতা এগুলোকে পাশ কাটিয়ে তারা তাদের সব সম্পদকে একদিকে নিয়োজিত করতে পারে,” বলেছেন হুয়াং।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করতে চীন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রকৌশলীদের এক জায়গায় জড়ো করবে বলেও ধারণা কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনসের এ ফেলোর।

“চীন প্রকৌশল কর্মকাণ্ডে বেশ ভালো। সুউচ্চ ভবন দ্রুতগতিতে বানানোর রেকর্ড আছে তাদের। পশ্চিমে যা কল্পনা করাও অসম্ভব। এটাও (হাসপাতাল) হয়ে যাবে,” ভাষ্য তার।

চিকিৎসা সরঞ্জামের ক্ষেত্রে উহানের এ হাসপাতালটি অন্য হাসপাতালের কাজ থেকে সাহায্য নিতে কিংবা সরাসরি কারখানা থেকেও ক্রয়াদেশ দিতে পারবে।

চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির দেড়শ মেডিকেল কর্মী এরই মধ্যে উহান পৌঁছেছেন বলে শুক্রবারই গ্লোবাল টাইমসের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। হাসপাতালের নির্মাণ কাজ শেষ হলে তারা সেখানেই কাজ করবেন কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

বিবিসি জানায়, ২০০৩ সালে সার্স ভাইরাস মোকাবেলায় চীন সাত দিনের মধ্যে বেইজিংয়ে জিয়াওটাংশান হাসপাতালটি নির্মাণ করেছিল। দ্রুতগতিতে কোনো হাসপাতাল নির্মাণের ক্ষেত্রে এটিই রেকর্ড বলে ধারণা করা হয়।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে সেবার চার হাজার শ্রমিক দিন-রাত খেটেছিল বলে জানিয়েছে চায়না ডটকম ডট সিএন।

সার্স মহামারি শেষে হাসপাতালটির ব্যবহারও থেমে যায় বলে হুয়াং জানিয়েছেন।