সংকটে ইরানের পরমাণু চুক্তি, নতুন ‘ট্রাম্প চুক্তি’ আহ্বান জনসনের

২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি ইরান লঙ্ঘন করছে বলে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং জার্মানির অভিযোগে চুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Jan 2020, 03:27 PM
Updated : 14 Jan 2020, 04:11 PM

ইরান চুক্তির শর্ত না মানার ঘোষণা দেওয়ার পর ওই তিন দেশ এক বিবৃতিতে বিরোধ নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া শুরুর পদক্ষেপ নেওয়া এবং মঙ্গলবারই এ বিষয়টি ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) জানানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে।

এ প্রক্রিয়ায় চুক্তিতে সই করা ইউরোপীয় দেশগুলো প্রথমে ইরানের সঙ্গে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবে।কোনো সমাধান বেরিয়ে না এলে ইরান ফের আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়তে পারে,যেমনটি ছিল চুক্তি হওয়ার আগে।এমনকী চুক্তির ইতিও ঘটতে পারে।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এরই মধ্যে ২০১৫ সালের ইরান পরমাণু চুক্তিটিকে ‘নতুন ট্রাম্প চুক্তি’ দিয়ে বদলে ফেলার জোরাল আহ্বান জানিয়েছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প পুরোনো চুক্তিটিকে ত্রুটিপূর্ণ আখ্যা দিয়ে দু’বছরআগেই তা থেকে সরে গিয়ে নতুন চুক্তি করার কথা বলেছেন।আর এখন পরমাণু চুক্তিটি নিয়ে সংকটের মুখে সামনে আগানোর পথ হিসাবে ট্রাম্পের ওই নতুন চুক্তিতেই ইউরোপীয়দেরকে রাজি হয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন জনসন।যদিও জার্মানি-ফ্রান্স-যুক্তরাজ্যের যৌথ বিবৃতিতে এখনো বিদ্যমান চুক্তিটিকেই রক্ষার চেষ্টা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে গেলেও ২০১৫ সালে চুক্তি সই করা ইউরোপীয় দেশগুলো এ চুক্তিটিকে ভেঙে পড়া থেকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করে এসেছে গোঁড়া থেকেই। ওই চুক্তির আওতায় পারমাণবিক কর্মসূচি কমানোর বিনিময়ে ইরানের ওপর থেকে বেশকিছু নিষেধাজ্ঞা উঠে গিয়েছিল।

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র চুক্তিটি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর ইরানের ওপর পুরোনো সব নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করে। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের একের পর এক আরো নিষেধাজ্ঞা আরোপের জবাবে ইরান ধীরে ধীরে চুক্তিতে দেওয়া প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসতে শুরু করে। এ মাসে ইরান তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের সীমা আর না মানার ঘোষণা দিয়েছে।

কিন্তু ইউরোপীয়রা ইরানের এ পদক্ষেপ মেনে নেবে না এবং ইরানকে ওই সীমা মানতে বাধ্য করার চেষ্টা চালাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।ইরান যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে এমন পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হচ্ছে বলে যুক্তি দেখালেও ফ্রান্স,জার্মানি এবং যুক্তরাজ্য বলেছে,তারা এমন যুক্তি মানতে পারেনি। একারণেই এখন বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসছেন এ দেশগুলোর নেতারা।

বিরোধ নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া যেভাবে এগুবে:

এ প্রক্রিয়ায় রূপরেখা দেওয়া ছিল চুক্তিতেই। সে মোতাবেক ফ্রান্স, জার্মানি এবং যুক্তরাজ্য ইইউ’কে নোটিশ দিয়ে প্রক্রিয়াটি শুরু করবে।এরপর ইইউ পরমাণু চুক্তির আরো দুই পক্ষ রাশিয়া এবং চীনকে তা জানাবে।একইসঙ্গে জানানো হবে ইরানকেও।তারপর ইরানের সঙ্গে চুক্তি সই করা দেশগুলো মতবিরোধ নিষ্পত্তির জন্য ১৫ দিন সময় পাবে।তবে সর্বসম্মতিতে সে সময় বাড়ানোও যেতে পারে।কোনো সমঝোতা না হলে ইরান শেষপর্যন্ত নতুন করে জাতিসংঘ নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়তে পারে।