মিয়ানমারে গণহত্যা বন্ধ করুন: জাতিসংঘ আদালতকে গাম্বিয়া

আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে (আইসিজে) গাম্বিয়ার আইনমন্ত্রী আবুবকর তামবাদু মিয়ানমারে গণহত্যা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।

>>রয়টার্স
Published : 10 Dec 2019, 01:16 PM
Updated : 10 Dec 2019, 04:27 PM

মঙ্গলবার আদালতে বিচার শুরুর সময় উদ্বোধনী বক্তব্যে তামবাদু বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে চলতে থাকা গণহত্যা বন্ধে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আদালতের বিচারকদেরকে ব্যবস্থা নিতে হবে।

“গাম্বিয়া চায় আপনারা মিয়ানমারকে এই কাণ্ডজ্ঞানহীন হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করতে বলুন। এই বর্বর, নির্মম কর্মকাণ্ড থামান। এ বর্বরতায় মানুষ স্তম্ভিত হয়েছে, মর্মাহত হয়েছে আমাদের সমন্বিত বিবেক।”

পশ্চিম আফ্রিকার মুসলিম অধ্যুষিত দেশ গাম্বিয়া সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর অভিযোগে নভেম্বরে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।

১০ ডিসেম্বর থেকে নেদারল্যান্ডসে হেগের আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে (আইসিজে) মিয়ানমারের গণহত্যা নিয়ে ওই মামলার প্রথম শুনানি শুরু হয়েছে। চলবে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

শুনানির জন্য এরই মধ্যে আদালতে হাজির হয়েছেন মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি। বিচারে মিয়ানমারের প্রতিনিধিত্ব করছেন তিনি।

সু চি মঙ্গলবার গাড়িবহরে হেগের পিস প্যালেসে যান এবং তাকে করা সাংবাদিকদের প্রশ্নের কোনো জবাবও দেননি। আদালতে গাম্বিয়ার পক্ষ থেকে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিস্তারিত বর্ণনার সময় সু চিকে অনেকটাই ভাবলেশহীন দেখা গেছে।

আদালতের বাইরে এসময় ন্যায়বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে রোহিঙ্গারা। অন্যদিকে, মিয়ানমারের বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গনে জাতীয় পতাকা উড়িয়ে সু চির সমর্থনে সমাবেশ করেছে হাজার হাজার মানুষ। “দেশের মর্যাদা রক্ষায় মাদার সু য়ের পাশে দাঁড়াও” স্লোগান দিয়েছে তারা।

এ সপ্তাহে ১৭ জন বিচারকের প্যানেলের সামনে আদালতের বিচারপ্রক্রিয়ায় গণহত্যার মূল অভিযোগটি নিয়ে কোনো চূড়ান্ত রায় হবে না। তবে গাম্বিয়া আদালতে প্রাথমিকভাবে তিনদিনের শুনানিতে মিয়ানমারে আর কোনো হুমকি বা সহিংসতা থেকে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় আদালতকে সাময়িক কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছে।

গাম্বিয়া যুক্তি দেখিয়ে বলেছে, মিয়ানমার ২০১৭ সালের অগাস্ট থেকে শুদ্ধি অভিযানের নামে ধারাবাহিকভাবে এবং ব্যাপকভাবে নৃশংসতা চালিয়ে গেছে, যেটি গণহত্যার পর্যায়ে পড়ে। গাম্বিয়ার আইনজীবীরা মিয়ানমারে ব্যাপক ধর্ষণ, হত্যা এবং বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া এবং রোহিঙ্গা শিশু হত্যার বিবরণ আদালতে তুলে ধরেছে।

গাম্বিয়ার আইনমন্ত্রী তামবাদু বলেন,“আমরা কেবল রোহিঙ্গাদের অধিকারের সুরক্ষাই চাই না বরং গণহত্যা কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসাবে মিয়ানমারকে গণহত্যা না চালাতে বাধ্য করে নিজেদের অধিকারও অক্ষুন্ন রাখতে চাই।”

গণহত্যার কনভেনশনের অধীনে মিয়ানমার তার দায়বদ্ধতা লঙ্ঘন করেছে এবং করে যাচ্ছে; চলমান গণহত্যা বন্ধ করতে হবে এবং দায়বদ্ধতার প্রতি পূর্ণ সম্মান জানাতে হবে- আদালতকে এমন ঘোষণা দেওয়ার আবেদন জানিয়েছে গাম্বিয়া।