মানবাধিকার সংগঠনগুলোর ‘বয়কট মিয়ানমার ক্যাম্পেইন’ শুরু

হেগ এর আন্তর্জাতিক আদালতে গণহত্যার শুনানি শুরুর আগে দিয়ে বিশ্বব্যাপী ‘বয়কট মিয়ানমার ক্যাম্পেইন’ শুরু করেছে রোহিঙ্গা মুসলিমদের সমর্থক মানবাধিকার সংগঠনগুলো।

>>রয়টার্স
Published : 9 Dec 2019, 02:51 PM
Updated : 9 Dec 2019, 06:06 PM

বিশ্বে নেতৃস্থানীয় রোহিঙ্গা অধিকার সংগঠন ‘দ্য ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশন’ (এফআরসি) এক বিবৃতিতে বলেছে, ১০ টি দেশের ৩০ টি মানবাধিকার সংগঠন একযোগে এ আন্দোলন শুরু করছে। এতে সামিল হওয়ার জন্য বিভিন্ন করপোরেশন, বিদেশি বিনিয়োগকারী, পেশাজীবী এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকেও আহ্বান জানানো হয়েছে।

মিয়ানমারকে অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক চাপে ফেলাই এ ‘বয়কট মিয়ানমার ক্যাম্পেইন’ এর লক্ষ্য বলে সোমবার জানিয়েছে সংগঠনটি।

এ আন্দোলনে ‘ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশন’ ছাড়াও যোগ দেওয়া অন্যান্যদের মধ্যে আছে- দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মানবাধিকার সংগঠন ফরসি ডট কো, ‍যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক দাতব্য মানবাধিকার সংস্থা রেস্টলেস বিংস, ক্যাম্বোডিয়ার মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন ডেসটিনেশন জাস্টিস, রোহিঙ্গা হিউম্যান রাইটস নেটওয়ার্ক অব কানাডা, রোহিঙ্গা হিউম্যান রাইটস নেটওয়ার্ক ইনিশিয়েটিভ অব ইন্ডিয়া, কোরিয়ান সিভিল সোসাইটি ইন সলিডারিটি উইথ রোহিঙ্গাজ এবং এশিয়া সেন্টার।

১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর নেদারল্যান্ডসে হেগের আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে (আইসিজে) মিয়ানমারের গণহত্যা নিয়ে অভিযোগের প্রথম শুনানি হবে। নেত্রী অং সান সু চি এতে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন।

পশ্চিম আফ্রিকার মুসলিম অধ্যুষিত দেশ গাম্বিয়া সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর জন্য নভেম্বরে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। আন্তর্জাতিক অপরাধগুলোর মধ্যে গণহত্যাই সবচেয়ে গুরুতর অপরাধ।

২০১৭ সালের ২৫ অগাস্ট রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কিছু স্থাপনায় ‘বিদ্রোহীদের’ হামলার পর রোহিঙ্গাদের গ্রামে গ্রামে শুরু হয় সেনাবাহিনীর অভিযান। সেই সঙ্গে শুরু হয় বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে রোহিঙ্গাদের ঢল।

গত দুই বছরে সাত লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। তাদের কথায় উঠে আসে নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ, জ্বালাও-পোড়াওয়ের ভয়াবহ বিবরণ, যাকে জাতিগত নির্মূল অভিযান বলে অভিহিত করে জাতিসংঘ।

শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার পাওয়া সু চি গণহত্যা এবং মানবতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ নিয়ে চুপ থাকার জন্য সমালোচিত হয়েছেন। আর এখন তিনি তার দেশের সামরিক বাহিনীর ওই হত্যাযজ্ঞের সাফাই দিতে আন্তর্জাতিক আদালতে যাচ্ছেন।

এ পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গারা আন্তর্জাতিক ন্যাবিচার আদালতের কাছ থেকে ন্যায়বিচার পাওয়ারই দাবি জানাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের অধিকার সংঘঠনগুলোও তাই এ সময়ে মিয়ানমারের অং সান সু চির সরকার এবং সেনাবাহিনীর ওপর চাপ বাড়াতে লন্ডন থেকে একযোগে শুরু করেছে বয়কট আন্দোলন।

অনলাইনে একটি আবেদনের মধ্য দিয়ে ক্যাম্পেইন ‍শুরু করা হয়েছে। তাতে নরওয়ের নোবেল কমিটিকে ২৮ বছর আগে সু চির পাওয়া নোবেল পুরস্কার কেড়ে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, তিনি একেবারেই এ সম্মান পাওয়ার যোগ্য নন।