মার্কিন সিনেটে হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থিদের পক্ষে বিল পাসে ক্ষুব্ধ চীন

হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকারীদের মানবাধিকার সুরক্ষার একটি বিলে মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের সদস্যরা সর্বসম্মত সমর্থন দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছে চীন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Nov 2019, 10:12 AM
Updated : 20 Nov 2019, 10:24 AM

মঙ্গলবার সিনেটে ‘হংকং হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্রেসি অ্যাক্ট’ বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয় বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

এতে কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে বেইজিং। এ বিল পাসের ঘটনায় পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছে তারা।

মার্কিন সিনেটে পাস হওয়ায় পর নিয়ম অনুযায়ী বিলটি এখন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে যাবে।

প্রতিনিধি পরিষদ অবশ্য গতমাসেই বিলটির একটি নিজস্ব সংস্করণ পাস করেছে।

প্রেসিডেন্টের অনুমোদনের জন্য পাঠানোর আগে দুইকক্ষ তাদের পাস করা সংস্করণগুলোর পার্থক্য নিয়ে কাজ করবে।

“হংকংয়ের জনগণ দেখছে তাদের দিকে কী আসছে, তারা দেখছে ধারাবাহিকভাবে তাদের স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধীনতা মুছে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে,” সিনেটে বিলটি নিয়ে বিতর্কের আগে দেয়া সূচনা বক্তব্যে এমনটাই বলেছেন রিপাবলিকান সিনেটর মার্কো রুবিও।

রুবিও এশিয়ার অর্থনৈতিক শক্তিকেন্দ্র খ্যাত হংকংয়ে ‘সহিংসতা ও দমন নিপীড়নের’ জন্য বেইজিংকে দায়ী করেছেন।

মঙ্গলবার মার্কিন সিনেট সর্বসম্মতিক্রমে হংকংয়ের পুলিশের কাছে ভিড় নিয়ন্ত্রণের সরঞ্জাম বিশেষ করে কাঁদুনে গ্যাস, পেপার স্প্রে, রাবার বুলেট ও স্টান গান বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব দেওয়া একটি বিলও পাস করেছে।

বছরে অন্তত একবার হলেও ওয়াশিংটনের সঙ্গে বিশেষ বাণিজ্য সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে হংকংয়ের পর্যাপ্ত স্বায়ত্তশাসন আছে না নেই, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওকে সে বিষয়ক প্রত্যয়ন দিতে প্রথম বিলে প্রস্তাব করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

মানবাধিকার লংঘনের জন্য দায়ী হংকংয়ের কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ারও প্রস্তাব করা হয়েছে এ বিলে।

সিনেটে পাস হওয়া বিলগুলো নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে হোয়াইট হাউসের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

হংকংয়ের বিক্ষোভকারীদের মানবাধিকার সুরক্ষার বিলে ট্রাম্প অনুমোদন দেবেন কিনা, সে সম্পর্কে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে সম্প্রতি মার্কিন প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

হংকংকে নিয়ে এমন বিল চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চলমান বাণিজ্য আলোচনায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা হোয়াইট হাউসের উপদেষ্টাদের, বলেছেন তিনি।

অবশ্য ট্রাম্প ভিটো ক্ষমতা প্রয়োগ করতে চাইলেও সিনেটের সর্বসম্মত ভোট তাতে বড় বাধা হবে বলেও মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।

মার্কিন সিনেটে ‘হংকং হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্রেসি অ্যাক্ট’ বিল পাসের কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে চীন।

সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা সুরক্ষায় বেইজিং পাল্টা পদক্ষেপ নেবে বলে হুঁশিয়ারিও দিয়েছে তারা।

“এ পদক্ষেপ ঘটনা ও সত্যকে অবজ্ঞা করেছে, হংকং ও চীনের অন্যান্য অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নির্লজ্জ হস্তক্ষেপ এবং দ্বিমুখী চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ দেখিয়েছে। এটি আন্তর্জাতিক আইন ও যে প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পরিচালিত হয় তার গুরুতর লংঘন। চীন এর নিন্দা জানাচ্ছে ও দৃঢ়ভাবে বিরোধিতা করছে,” বুধবার বেইজিংয়ে এমনটাই বলেছেন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গ্যাং শুয়াং।

হংকং এবং চীনের অন্যান্য অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে হস্তক্ষেপ করা বন্ধ করতেও বলেছেন তিনি।